udvidjato-khadyo-casher-bivinno-poddhoti
WB-Class-8

উদ্ভিদজাত খাদ্য চাষের বিভিন্ন পদ্ধতি

শ্রেণিঃ অষ্টম | বিষয়: বিজ্ঞান । অধ্যায় – মানুষের খাদ্য ও খাদ্য উৎপাদন (দ্বিতীয় পর্ব)


আগের পর্বে আমরা জেনেছি ফসল, ফসলের বৈচিত্র্য ও ফসলের উৎপাদন সম্পর্কে। এই পর্বে আমরা উদ্ভিদজাত খাদ্য চাষের বিভিন্ন পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করবো।

ধান, গম, চা, আম প্রভৃতি উদ্ভিদজাত খাদ্য।

এদের প্রতিটিকে চাষ করার নির্দিষ্ট নিয়ম ও পদ্ধতি আছে।

ধান

ধান ভারতের অন্যতম প্রধান খাদ্যশস্য। ধান বিভিন্ন প্রকার হয় এবং ভারতের প্রায় সব রাজ্যেই কিছু না কিছু ধান চাষ হয়। পশ্চিমবঙ্গ, পাঞ্জাব , তামিলনাড়ু, ওড়িশা, উত্তরপ্রদেশ প্রভৃতি রাজ্যে ধানের চাষ বেশী হয়।

চাষের সময় ও পদ্ধতি অনুসারে ধানকে মূলত তিন ভাগে ভাগ করা যায়- আউশ বা শরৎকালীন ধান, শীতকালীন বা আমন ধান এবং গ্রীষ্মকালীন বা বেরো ধান।

আউশ ধান

সাধারণত রবি ফসল তোলার পরে জমিতে সরাসরি আউশ ধান বোনা হয়। পলিমাটি ছাড়াও দোআঁশ এবং এঁটেল মাটিতে এই ধান চাষ করা যায়।

আমন ধান

বর্ষাকালে আমন ধান চাষ করা হয়। এই ধান আউশের মত সব ধরনের মাটিতে চাষ করা যায়, তবে এঁটেল মাটি বা কাদা মাটিতে আমন চাষ সবচেয়ে ভালো হয়। প্রথম পুষ্ট আমন ধান বীজতলাতে দিয়ে চারা তৈরী করা হয়। এরপর চারাগুলি বীজতলা থেকে তুলে জমিতে রোপণ করা হয়।

বোরো ধান

বোরো হল গ্রীষ্মকালীন ধান। আমল ধান কাটার পরে এই ধান চাষ করা হয় এবং মার্চ- এপিল নাগাদ এই ধান কাটা হয়। গ্রীষ্মকালীন ধান হওয়ার কারণে জলসেচের সুবিধাযুক্ত স্থানেই এই ধান চাষ করা হয়। আমনের মতন বোরো ধান চাষেও বীজতলা তৈরি করতে হয়।

ধান বোনা থেকে পাকতে যে সময় লাগে তার উপর ভিত্তি করে ধানকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়!

(ক) স্বল্পমেয়াদি বা জলদি জাত ধান- এই ধান খুব দ্রুত পেকে যায়, 95 থেকে 115 দিন লাগবে।
(খ) মধ্যমেয়াদি বা মাঝারি জাত ধান- এই ধান পাকতে মাঝারি সময় লাগে, 116 থেকে 135 দিন।
(গ) দীর্ঘমেয়াদি জাত বা নাবি জাত ধান- এই প্রকার ধান পাকতে সবচেয়ে বেশীদিন সময় লাগে। এই ধানে প্রায় 140 থেকে 150 পাকতে সময় লাগে।

ধান থেকে প্রাপ্ত চালে প্রচুর কার্বোহাইড্রেট কিছু প্রোটিন থাকে। এছাড়া চালে B কমপ্লেক্স ও কয়েক প্রকার ভিটামিন থাকে।

ধান তোলা হচ্ছে

ধান চাষের পদ্ধতি

ধান চাষের পদ্ধতিতে অনেক গুলি ধাপ আছে। সেগুলি হল-

(i) বীজ বাছাই- ঘন নুন জলে বীজগুলি দিলে সুস্থ ও পুষ্ট বীজ ডুবে যায়। এগুলি সংগ্রহ করে ধুয়ে শুকিয়ে নেওয়া হয়।
(ii) বীজ শোধন- বীজে বর্তমান রোগজীবাণু ধবংস করতে বীজ শোধন করা হয়। শুষ্ক বীজতলা বা জমিতে সরাসরি বীজ বোনার জন্য বীজের সাথে রাসায়নিক পদার্থের চূর্ণ মেশানো হয়, একে শুষ্ক পদ্ধতিতে বীজ শোধন বলে। অন্য দিকে অঙ্কুরিত বীজ সিক্ত বা ভিজে বীজতলায় রোপণ করতে হলে প্রথমে বীজগুলি রাসায়নিক দ্রবণ বা উষ্ণ জলে ভিজিয়ে শোধন করা হয়। বীজ শোধনের এই পদ্ধতিতে সিক্ত শোধন পদ্ধতি বলে।
(iii) বীজতলার প্রস্তুতি ও চারাগাছ তৈরি- যে সব অঞ্চলে খারিফ ঋতুতে ভালো বৃষ্টি হয় সেখানে শুষ্ক বীজতলা তৈরী করা হয়। জমির আগাছা নির্মূল করে প্রয়োজন মত সার দিয়ে বীজ বপন করা হয়। চারাগুলি 12-15 cm লম্বা হলে সেগুলি জমিতে রোপণ করা হয়।
অপেক্ষাকৃত কম বৃষ্টিযুক্ত অঞ্চলে সিক্ত বা কাদান বীজতলা তৈরী করা হয়। এর জন্য বীজতলায় জমিতে জল ধরে রেখে তাতে সার দেওয়া হয় এবং জমি চষতে হয়। মাটি কাদা হয়ে গেলে সেখানে অঙ্কুরিত বীজ বপন করা হয়। এই পদ্ধতিতে চারাগাছের মূলের বৃদ্ধি ভাল হয়।


(iv) জমি তৈরী- বীজতলায় মত জমি তৈরী করারও শুষ্ক ও সিক্ত দুটি পদ্ধতি আছে। আউশ ধান ও কোন কোন স্থানে নীচু জমিতে আমন চাষ করলে বীজ সরাসরি জমিতে বপন করা হয়। এই ক্ষেত্রে শুষ্ক পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। এই পদ্ধতিতে রবিশস্য তোলার পরে জমি দু-একবার চষে ফেলে রেখে শুষ্ক করা হয়। তারপর প্রয়োজনে মত সার দিয়ে চাষ করা হয়। অন্য দিকে সিক্ত বীজতলা থেকে চারা রোপণের জন্য সিক্ত বা কাদান জমি তৈরি করতে হয়। এক্ষেত্রে প্রথমে শুষ্ক পদ্ধতির মত জমি শুষ্ক করা হয়। তারপর জমিতে জল কয়েকদিন ধরে রেখে জমি চষা হয়। এর ফলে মাটি কাদা হয়ে যায়। তখন এই মাটিতে প্রয়োজনমত সার মিশিয়ে চারা রোপণ করা হয়।
(v) বীজ বোনা/ চারাগাছ রোপণ- আউশ ধানের বীজ সরাসরি বীজের নরম মাটিতে বপন করা হয়। আমন বা বোরো ধানের চারা বীজতলা থেকে তুলে নিয়ে 2-3cm জল জমে থাকা জমিতে সারি দিয়ে রোপণ করা হয়।
(vi) সার প্রয়োগ- জমি ও ধানের প্রকৃতি অনুসারে প্রয়োজন মত জৈব ও অজৈব সার সঠিক পরিমাণে প্রয়োগ করা হয়।
(vii) অন্তবর্তী কর্ষণ ও পরিচর্যা- জমিতে জন্মানো আগাছাগুলি নিড়ান দিয়ে বা উপযুক্ত রাসায়নিক প্রয়োগে দমন করা হয়। প্রয়োজন হলে কীটনাশক ব্যবহার করা হয়।
(viii) জলসেচ- ধান চাষে জলের গুরুত্ব অসীম। গাছের গোড়ায় 30-50 mm জল জমে থাকা সবসময় প্রয়োজন। তাই জমিতে প্রয়োজন মতন জলসেচ করতে হয়।
(ix) ফসল তোলা- ফসল পেকে গেলে আঁটি বেঁধে খামারে রাখা হয়। এরপর মাড়াইও ঝাড়াই করে খাদ্য দানাশস্যগুলি পৃথক করা হয়।

আম

অত্যন্ত সুস্বাদু ফল আমের জন্মস্থান ভারত। পরে আম আরও বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। পশ্চিমবঙ্গের মালদা, মুর্শিদাবাদ, নদীয়া প্রভৃতি স্থানে সবচেয়ে বেশী আম চাষ হয়।
আমে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট ছাড়াও Ca, P প্রভৃতি খনিজ পদার্থ বর্তমান। এছাড়াও আমে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন A, C এবং B কমপ্লেক্স থাকে।
উর্বর দোআঁশ মাটি আর নদী অববাহিকা অঞ্চলের পলিমাটি আম চাষের জন্য আদর্শ।

সাধারণত সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে 1500 মিটার উচ্চতা পর্যন্ত আম গাছ ভালো হয়। বৃষ্টি ও কুয়াশা আমের মুকুলের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর, তাই গাছে মুকুল আসার সময় বৃষ্টি ও কুয়াশা মুক্ত পরিষ্কার আকাশ থাকা অত্যন্ত প্রয়োজন।
আমের বীজ মাটিতে পুঁতে তা থেকে নতুন গাছ সৃষ্টি করা যায়। কিন্তু এই পদ্ধতিতে তৈরী চারাগাছে আগের আমের সমস্ত গুণ থাকে না এই সমস্যা এড়াবার জন্য কলম পদ্ধতিতে গাছ তৈরী করা হয়।

আম গাছ

উদ্ভিদের কোন অঙ্গ থেকে নতুন উদ্ভিদ তৈরী করার পদ্ধতিকে কলম পদ্ধতি বলা হয়। প্রকৃতপক্ষে কলম হল কৃত্রিম পদ্ধতিতে করা উদ্ভিদের অঙ্গঁজ বিস্তার।

কিছু কিছু গাছের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে গাছের ডাল কেটে মাটিতে পুঁতে দিলে তা থেকে নতুন গাছ জন্মায়। একে শাখাকলম বলে। জবা, করবী প্রভৃতি গাছ শাখাকলম করা হয়।

আমগাছের জন্য বিভিন্ন প্রকার কলম পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়। তবে জোড় কলম পদ্ধতি সবচেয়ে বেশী ব্যবহার হয়। এই পদ্ধতিতে একটি উন্নত জাতের আমের শাখা ও একটি চারাগাছ নিয়ে উভয়ের কিছু অংশ কেটে একত্রে সুতলি দিয়ে বেঁধে দেওয়া হয়। কয়েক দিনের মধ্যে এরা জুড়ে যায়। তখন তার অপ্রয়োজনীয় অংশ কেটে বাদ দিয়ে কিছু দিন পরে মাটিতে রোপণ করা হয়। এই কলম মূলত আষাঢ় মাসে করা হয়।

আঁটি থেকে তৈরী করা চারাগাছ বা স্টক এর সাথে সিয়ন বা উন্নত জাতের আম গাছের শাখা একত্রে জোড় বেঁধে কলম তৈরীর পদ্ধতিকে জোড়কলম পদ্ধতি বলা হয়।

আমের চাষ

আম চাষের পদ্ধতি

আম চাষের জন্য নিম্নলিখিত ধাপ গুলি অনুসরণ করতে হয়-
ক। জমি তৈরী- ভালো জল নিষ্কাশনের ব্যবস্থা যুক্ত উঁচু জমি যেখানে পর্যাপ্ত সূর্যালোক পাওয়া যায়, তা আম চাষে ব্যবহার করা হয়। সবুজ সার তৈরীর প্রয়োজন প্রথমে জমি চষে সমান করে তাতে শনের বীজ বোনা হয়। গাছগুলি 5-6 সপ্তাহের হলে তাদের মাটিতে ভালো করে মিশিয়ে ও পচিয়ে সবুজ সার তৈরী করা হয়।
খ। চারাগাছ লাগানো- কলম করার কয়েক মাস পরে, সাধারণত বর্ষাকালে চারাগুলি সমদূরত্বে মাটিতে গর্ত করে প্রয়োজন মত সার দিয়ে রোপণ করা হয়।
গ। সার প্রয়োগ- যথেষ্ট ফলন পাবার জন্য গাছে প্রতি বছর পরিমাণ মত সার দিতে হয়। আম গাছের প্রাথমিক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে নাইট্রোজনের চাহিদা পূরণের জন্য ইউরিয়া, অ্যামোনিয়াম, সালফেট প্রভৃতি সার দেওয়া হয়।
ঘ। জলসেচ- গাছে সময় মত সেচের মাধ্যমে জল দেওয়া হয়।
ঙ। অন্য পরিচর্যা- বাগানের জমি নিয়ম করে পরিষ্কার করতে হয়, যাতে ঝরে পড়া পাতা ও অন্যান্য আগাছা মাটিতে মিশে জৈব সারে পরিণত হতে পারে।
চ। ফল সংগ্রহ- পশ্চিমবঙ্গের আমগাছ গুলিতে সাধারণত পৌষ- মাঘ মাসে মুকুল আসে। তার 4-5 পরে গাছ থেকে ফল পাওয়া যায়।


অষ্টম শ্রেণির অন্য বিভাগ – বাংলা | ইংরেজি | গণিত | বিজ্ঞান | ভূগোল

ছ। ফলন- কলমের আমগাছ গুলিতে পরের বছর মুকুল এসে যায়। কিন্তু এগুলি ভেঙে দিতে হয়, কারণ গাছ ৫ বছরের হবার আগে তা থেকে ফল নেওয়া উচিত না। গাছের বয়স বাড়লে ফলের সংখ্যাও বৃদ্ধি পায়।
জ। ফল সংরক্ষণ- পরিণত আমকে সবুজ ও শক্ত অবস্থায় গাছ থেকে তুলে উপযুক্ত ভাবে প্যাকিং করে হিমঘরের যথাযথ আদ্রতা ও উষ্ণতায় সংরক্ষণ করলে সেগুলি বেশ কয়েক সপ্তাহ ভালো থাকে।

চা

চা চাষের উৎসস্থল হল দক্ষিণ – পূর্ব এশিয়ার ইরাবতী নদী অববাহিকা। বর্তমানে চীন, ভারত, কেনিয়া প্রভৃতি দেশে প্রচুর চা উৎপন্ন হয়। ভারতের প্রধান চা উৎপাদনকারী রাজ্য হল পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, কেরালা, তামিলনাড়ু। এর মধ্যে দার্জিলিং-এর চা স্বাদ ও গন্ধের জন্য পৃথিবী বিখ্যাত।
সাধারণভাবে 1000 মিটার 2500 থেকে মিটার উচ্চতায় পাহাড়ী অঞ্চলের জল নিষ্কাশনের সুবিধাযুক্ত পাহাড়ের ঢালে আম্লিক মাটিতে চা চাষ হয়।

চা পাতার প্রকার অনুসারে বাণিজ্যিক চা কে মূলত তিন ভাগে ভাগ করা যায়। সেগুলি হল- Black tea কালো চা,‌ Green tea সবুজ চা, উলং (oolong) চা।

তবে বিশ্ব জুড়ে উৎপাদিত চা এর 75% হল Black tea বা কালো চা।

পানীয় হিসাবে চা – এর বিভিন্ন গুণ

ক। চা-তে উপস্থিত ক্যাফিন শরীরে উদ্দীপনা নিয়ে আসে।
খ। চা-তে প্রচুর ফ্লুওরাইড থাকে, যা দাঁতের ক্ষয় রোধ করে।
গ। চা-এর মধ্যে ট্যানিন, ভিটামিন B- কমপ্লেক্স প্রভৃতি শরীরের উপকারী পদার্থ থাকে।
ঘ। Black tea তে প্রচুর পরিমাণ ফলিক অ্যাসিড ও ভিটামিন B- কমপ্লেক্স থাকে, যা ক্যান্সার প্রতিরোধী ভূমিকা পালন করে।
ঙ। Green tea বা সবুজ চা –তে ভিটামিন k থাকে, যা হার্ট অ্যাটাক, শরীরের মধ্যে রক্তক্ষরণ প্রভৃতি প্রতিহত করতে সাহায্য করে।
চ। রক্তের কোলস্টেরল কমাতে চায়ে উপস্থিত পলিফেনল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। এছাড়া উচ্চ রক্তচাপ কমাতেও এটি সাহায্য করে।
চা গাছের বীজ থেকে বা অঙ্গজ বিস্তার পদ্ধতি উভয় ভাবেই চা গাছের বংশবিস্তার করা সম্ভব।

চা চাষ

চা চাষের পদ্ধতি

চা চাষ এর ধাপগুলি নিম্নরুপ-
ক। জমি তৈরী- প্রথমে জমির সব উদ্ভিদ মূল সহ তুলে দিতে হয়, কারণ মাটির নীচে থাকা মূল থেকে চা গাছে রোগ সংক্রমণ হতে পারে। এরপর মাটি চষে তাতে NPK জাতীয় সার দেওয়া হয় এবং কিছু বিশেষ উদ্ভিদ যেমন সিট্রোনেলা বা গুয়াটেমালা ঘাস চাষ করা হয়। এই চাষ মাটিতে জৈব পদার্থ বৃদ্ধি করে, মাটিতে বর্তমান রোগ জীবাণু ধবংস করে এবং মাটির গঠন উন্নত করে। এরপর এই উদ্ভিদ গুলি সরিয়ে চা গাছ রোপণ করা হয়।
খ। চারাগাছ রোপণ- জমিতে গভীর গর্ত করে তা জমির উপর স্তরের মাটি দিয়ে পূর্ণ করা হয়। এই গর্তে 12-18 মাসের চারা পুঁতে তার গোড়ার চারদিকে ভিজে খড় বা পাতা রাখা হয়।
গ। ছায়ার ব্যবস্থা- ওক, সিলভার প্রভৃতি জাতীয় গাছ চা বাগানে রোপণ করা হয়, যারা চা গাছকে ছায়া দেয় এবং চারপাশের তাপমাত্রা তার ফলে কম থাকে। এর ফলে চা গাছের সালোকসংশ্লেষের হার বজায় থাকে। চা গাছে ছায়া প্রদান করার জন্য এই জাতীয় উদ্ভিদকে Shade tree বা ছায়া তরু বলা হয়।

চা চাশে ছায়ার ব্যবস্থা

ঘ। আগাছা দমন- প্রয়োজন অনুসারে আগাছানাশক রাসায়নিক স্প্রে করা হয়।
ঙ। সার প্রয়োগ- উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য উপযুক্ত পরিমাণ নাইট্রোজেন যুক্ত সার যেমন ইউরিয়া, অ্যামোনিয়াম সালফেট প্রভৃতি প্রয়োগ করা হয়।
চ। জলসেচ- সাধারণত ফোয়ারা পদ্ধতিতে অর্থাৎ Sprinkler দ্বারা জলসেচ করা হয়।
ছ। ফসল তোলা- চা গাছ থেকে একটি কুঁড়ি এবং দুই বা তিনটি পাতা প্রতি শাখার থেকে তোলা হয়। এর উপরই চায়ের গুণাগুণ নির্ভর করে।
জ। চা পাতা তৈরী- এই তোলা পাতা ও কুঁড়ি থেকে বিভিন্ন পদ্ধতির মাধ্যমে চা তৈরীর উপযুক্ত পাতা তৈরী করা হয়।
ঝ। চায়ের গুণাগুণ পরীক্ষা- প্রস্তুত চায়ের স্বাদ, গন্ধ এবং বর্ণ পরীক্ষা করে দেখা হয়। এটি চা উৎপাদনের অতি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

পর্ব সমাপ্ত। পরবর্তী পর্ব → প্রাণিজ খাদ্য চাষের বিভিন্ন পদ্ধতি


এই লেখাটির সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। বিনা অনুমতিতে এই লেখা, অডিও, ভিডিও বা অন্য ভাবে কোন মাধ্যমে প্রকাশ করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


লেখিকা পরিচিতিঃ

বিজ্ঞান স্নাতক এবং কম্পিউটার বিজ্ঞানে উচ্চ শিক্ষিতা নন্দিতা বসুর পেশা শিক্ষকতা।তিনি বই পড়তে বড় ভালোবাসেন। কাজের ফাঁকে, অবসরে, বাসে ট্রামে তো বটেই, শোনা যায় তিনি নাকি ঘুমিয়ে ঘুমিয়েও বই পড়তে পারেন।

এই লেখাটি থেকে উপকৃত হলে সবার সাথে শেয়ার করতে ভুলো না।



JumpMagazine.in এর নিয়মিত আপডেট পাবার জন্য –

VIII_science_14b