একটি নির্দিষ্ট উষ্ণতায় কোনো দ্রবণকে সম্পৃক্ত করে ধীরে ধীরে ঠান্ডা করলে, দ্রাব্যতা হ্রাসের জন্য প্রথমে দ্রবণটি অতিপৃক্ত দ্রবণে ও পরে অতিরিক্ত দ্রাব অধঃক্ষিপ্ত হতে শুরু করে। এই অধঃক্ষেপণের সময় দ্রাব যে আকার ধারণ করে সেটিকে কেলাস বলে। আর এই পদ্ধতিতে দ্রাবকে দ্রাবকের থেকে পৃথক করার পদ্ধতিকে কেলাসন বলে।
[আরো পড়ুন – দ্রবণের প্রাক্কথন]
কেলাস
কোনো তড়িৎযোজী বা দৃঢ় সমযোজী যৌগ গঠন হওয়ার সময় নির্দিষ্ট জ্যামিতিক আকার মেনে পর্যায়বৃত্তীয়ক্রমে পুনঃপুনঃ পুনরাবৃত্ত হয় তবে সেই জ্যামিতিক আকার বিশিষ্ট পদার্থটিকে কেলাস বলে।
কেলাস বিশুদ্ধ হতে পারে। যেমন : NaCl (সোডিয়াম ক্লোরাইড), চিনি, হীরক গ্রাফাইট, রম্বিক সালফার, লাল ফসফরাস ইত্যাদি।
আবার কেলাসে কেলাসন জল বা কেলাসন দ্রাবও থাকতে পারে। যেমন: CuSO4 .5H2O (কপার সালফেট পেন্টাহাইড্রেট) ; K2SO4.Al2(SO4)3.24H2O (পটাশ অ্যালাম); ZnSO4.4NH3 ইত্যাদি।
সমুদ্রজলকে খোলা বাতাসে রেখে দিলে, জল ধীরে ধীরে বাষ্পীভূত হলে, জলে দ্রবীভূত লবণসমূহ অধঃক্ষিপ্ত হয়। এটি কেলাসনের একটি বাস্তব উদাহরণ।
এই লবণের মিশ্রণকে সৈন্ধব লবণ বলে। এর সবথেকে পরিচিত উপাদান হল সোডিয়াম ক্লোরাইড। সোডিয়াম ক্লোরাইডকে ঘনকাকার কেলাস রূপে পাওয়া যায়।
এছাড়া আরো একটি ভাবে কেলাস তৈরী সম্ভব। একে অধিবৃদ্ধি বলে।
খুব সাবধানে প্রস্তুত করা অতিপৃক্ত দ্রবণে একটি দ্রাবের কেলাস সুতো বেঁধে ঝুলিয়ে ডুবিয়ে রাখলে পুরোনো কেলাসের গায়ে নতুন কেলাসের আস্তরণ সৃষ্টি হয়। এর ফলে পুরোনো কেলাসের বৃদ্ধি ঘটে, এই পুরোনো কেলাসকে seed crystal বা বীজ কেলাস বলে।