ভৌতবিজ্ঞান – নবম শ্রেনি – অধ্যায়: দ্রবণ (চতুর্থ পর্ব)
আগের পর্বগুলিতে আমরা কলয়েডের ধারণা, দ্রাব্যতা, দ্রাব ও দ্রাবক ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়নিয়ে আলোচনা করেছি। এই পর্বে আমরা দেখবো দ্রবণের শক্তি কিভাবে নির্ণয় করতে হয়।
দ্রবণের শক্তি কেন মাপা প্রয়োজন?
সমুদ্রের জলে নুন থাকে, আবার স্যালাইনেও নুন আছে। কিন্তু স্যালাইন রক্তে মেশানো যায়, সমুদ্রের জল খেলেই বমি হতে শুরু করে। আবার, জর্ডনের মৃত সাগরে আবার এতো বেশি নুন যে সেখানে কোনো জীব জলের তলায় বাঁচে না, অথচ দিব্যি তার মধ্যে ভেসে ভেসে কাগজ পড়া যায়, চা খাওয়া যায়। সবই যদি নুন জলের দ্রবণ হয় তবে এরকম পার্থক্য কেন? এর কারণ হল শক্তি মাত্রার ভিন্নতা, অর্থাৎ নির্দিষ্ট পরিমাণ দ্রবণে কতটা পরিমাণ দ্রাব আছে তার দ্বারাই দ্রবণের তীব্রতা পরিমাপ করা হয়।
[আরো পড়ো – দ্রবণের ধারণা]
কি কি ভাবে দ্রবণের শক্তিমাত্রা নির্ধারিত হয়?
মূলতঃ পাঁচ ভাবে শক্তিমাত্রা নির্ধারিত হয়।
- % (w/w, w/v, v/v)
- গ্রাম প্রতি লিটারে
- মোল শক্তিমাত্রা
- মোল ভগ্নাংশ
- পিপিএম (ppm)
এই আলোচনায় আমরা %w/v, mol/lit আর g/lit নিয়ে আলোচনা করবো।
%w/v : প্রতি 100 ml আয়তনের দ্রবণে যত গ্রাম দ্রাব থাকে সেই সংখ্যাকে ভরভিত্তিক আয়তনের শতাংশে প্রকাশ করা যায়। মূলতঃ তরলে কঠিন দ্রাব দ্রবীভূত থাকলে এই মাত্রায় প্রকাশ করা হয়ে থাকে।
আমাদের আগের পর্বে KNO3 র দ্রাব্যতা নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে আমরা বিভিন্ন পরিমাণের উল্লেখ করেছিলাম। যেমন 51 গ্রাম দ্রাব 100 গ্রাম দ্রাবকে, 40 গ্রাম দ্রাব 100 গ্রাম দ্রাবকে, 44 গ্রাম দ্রাব 100 গ্রাম দ্রাবকে। এবার যেহেতু জলকে দ্রাবক হিসেবে নিয়েছিলাম, তাই 100 গ্রাম জলের আয়তন 100 ml। সুতরাং ওই তিনটি মাত্রার %w/v যথাক্রমে হবে 51%, 40% ও 44%।
[আরো পড়ুন – নবম শ্রেণি – বাংলা | নবম শ্রেণি – ইতিহাস | নবম শ্রেণি – ভূগোল]
g/lit: এই একই মাত্রাকে 1000 ml আয়তনে গ্রামে প্রকাশ করলে সেটি নির্ধারিত হয় g/lit এককে। উল্লেখিত শক্তিমাত্রা যথাক্রমে 510 g/lit, 400 g/lit আর 440 g/lit।
mol/lit: KNO3 র আণবিক ওজন (39+14+163=) 101। সুতরাং উল্লেখিত গ্রামগুলিকে মোলে পরিবর্তিত করলে পাওয়া যায় 5.09 mol, 3.99 mol আর 8.39 mol। সুতরাং mol/lit এককে শক্তিমাত্রা 5.09 mol/lit, 3.99 mol/lit আর 4.39 mol/lit।
[আরো পড়ুন – নবম শ্রেণি – ভৌত বিজ্ঞান | নবম শ্রেণি – জীবন বিজ্ঞান | নবম শ্রেণি – গণিত ]
মনে রাখতে হবে
যেহেতু তিনটে শক্তিমাত্রাই আয়তনের ভিত্তিতে করা, তাই উষ্ণতা পরিবর্তনের সাথে সাথে দ্রাবকের আয়তনও পরিবর্তিত হবে। অর্থাৎ ভগ্নাংশের হরের মান পরিবর্তিত হবে। কিন্তু ভর উষ্ণতার সাথে পরিবর্তিত না হওয়ায় ভগ্নাংশের লবের মান পরিবর্তিত হবে না। ফলে তাপমাত্রা পরিবর্তিত হলে শক্তিমাত্রাও পরিবর্তিত হবে। উষ্ণতা বাড়লে আয়তন বেড়ে যায়, ফলে দ্রবণটি লঘু হয়ে পড়বে, আর উষ্ণতা কমালে দ্রবণটির গাঢ়ত্বও বৃদ্ধি পাবে।
পরবর্তী পর্ব – ব্যাপন
এই লেখাটির সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। বিনা অনুমতিতে এই লেখা, অডিও, ভিডিও বা অন্য ভাবে কোন মাধ্যমে প্রকাশ করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
JumpMagazine.in এর নিয়মিত আপডেট পাওয়ার জন্য –
-
- ফলো করো – WhatsApp চ্যানেল
- সাবস্ক্রাইব করো – YouTube চ্যানেল
- লাইক করো – facebook পেজ
- সাবস্ক্রাইব করো – টেলিগ্রাম চ্যানেল
- Facebook Group – লেখা – পড়া – শোনা
IX-PS-4.3-d