ভূগোল – একাদশ শ্রেণি – ভূমিরূপ গঠনকারী প্রক্রিয়া ও ঊদ্ভুত ভূমিরূপ (প্রথম পর্ব)
ভাঁজ কাকে বলে?
গিরিজনি আলোড়নের প্রভাবে ভূত্বকের নরম পাললিক শিলায় ঢেউয়ের মতো বাঁক সৃষ্টি হয় তাকে ভাঁজ বলে।
ভাঁজের গঠন নির্ধারক
ভাঁজের গঠন নির্ধারকগুলি হল- ভাঁজ অক্ষ, অক্ষতল, আয়াম, ভাঁজের বাহু, ভাঁজের নতি, ভাঁজের শীর্ষদেশ , ভাঁজের নিম্নদেশ, ভাঁজের গ্রন্থিবিন্দু।
ভাঁজ গঠন প্রক্রিয়ায় সংক্ষিপ্ত ধারণা
প্রথমত
পৃথিবীর আদিলগ্ন থেকে দিন উত্তপ্ত তরল অবস্থায়,এরপর ধীরে ধীরে তাপ বিকিরনের ফলে শিলাস্তর সংকুচিত হতে থাকে তখনই ভাঁজ সৃষ্টি হয়।
দ্বিতীয়ত
ক্রমাগত পলি সঞ্চয়ের ফলে পার্শচাপ বেশি হয় যার ফলে পলিস্তর ভাঁজপ্রাপ্ত হয়।
তৃতীয়ত
পাতের চলনের সময় পাতের সংঘর্ষ সৃষ্টি হয় যার ফলে পাললিক শিলা সংকুচিত হয় এবং ভাঁজ প্রাপ্ত হয়।
চতুর্থত
ম্যাগমার ঊর্ধমুখী চাপে শিলায় ভাঁজ সৃষ্টি হ্য়।
পঞ্চমত
পরিচলন স্রোতের ফলে উত্তপ্ত ম্যাগমা ভূত্বকের নিম্মগামী হয় এবং পার্শ্বচাপের সৃষ্টি হয় এবং শিলাস্তরে ভাঁজ সৃষ্টি হয়।
একাদশ শ্রেনি থেকে → অর্থনীতি | ভূগোল
ভাঁজের শ্রেনীবিভাগ
1. অবতলতা ও উত্তলতা অনুসারে ভাঁজের শ্রেনীবিভাগ
i) অধোভঙ্গ
যে শিলাস্তর নীচের দিকে বাঁক নিয়ে অবতল ভাবে অবস্থান করে, তাকে অধোভঙ্গ বলে।
ii) ঊর্ধ্বভঙ্গ
ঊর্ধ্বভঙ্গ যে শিলাস্তর উপরের দিকে বাঁক নিয়ে উত্তল ভাবে অবস্থান করে, তাকে ঊর্ধ্বভঙ্গ বলে।
একাদশ শ্রেনি থেকে → বাংলা | ইংরাজি
2. অক্ষতলের অবস্থান অনুসারে ভাঁজের শ্রেনীবিভাগ
i) প্রতিসম ভাঁজ
যে ভাঁজের দুটি বাহু পরস্পর সমান কোণে অবস্থান করে, তাকে প্রতিসম ভাঁজ বলে।
ii) অপ্রতিসম ভাঁজ
যে ভাঁজের দুটি বাহু পরস্পর অসমান কোণে অবস্থান করে , তাকে অপ্রতিসম ভাঁজ বলে।
iii) উল্লম্ব ভাঁজ
কোন ভাঁজের একটি বাহু যখন উল্লম্বভাবে অবস্থান করে, তখন তাকে উল্লম্ব ভাঁজ বলা হয়।
iv) সমনত ভাঁজ
যে ভাঁজের দুটি বাহু একই কোণে হেলে থাকে তাকে বলা হয় সমনত ভাঁজ।
একাদশ শ্রেনি থেকে → Physics | Chemistry | Biology | Computer
v) শায়িত ভাঁজ
যে ভাঁজের একদিকের চাপ বেশী হওয়ায় ভাঁজের অক্ষতল ভূমির সাথে শায়িত অবস্থায় থাকে তাকে শায়িত ভাঁজ বলে।
শায়িত ভাঁজে অত্যাধিক চাপের ফলে ন্যাপ সৃষ্টি হয়।
3. গঠন অনুসারে ভাঁজের শ্রেনীবিভাগ
i) বাক্স ভাঁজ
যে ভাঁজের মাথা বাক্সের মতো , তাকে বাক্স ভাঁজ বলে।
ii) ছত্রাকার ভাঁজ
যখন ঊর্ধ্বভাঁজে বাহুর উপরের অংশ স্ফীত হয় এবং নীচের অংশ পরস্পরের কাছে চলে আসে তখন তাকে পাখা ভাঁজ বা ছত্রাকার ভাঁজ বলে।
iii) সেভরণ ভাঁজ
যে ভাঁজের শীর্ষদেশ তীক্ষ্ তাকে সেভরণ ভাঁজ বলে।
বাহুর কোণের মান অনুসারে ভাঁজের শ্রেনীবিভাগ
i) মৃদু ভাঁজ
যে ভাঁজে দুটি বাহুর কোণের মান ১২০ ডিগ্রীর বেশী, তাকে মৃদু ভাঁজ বলে।
ii) মুক্ত ভাঁজ
যে ভাঁজে দুটি বাহুর কোণের মান ৬০ ডিগ্রীর বেশী ১২০ ডিগ্রীর কম, তাকে মুক্ত ভাঁজ বলে।
iii) বদ্ধ ভাঁজ
যে ভাঁজে দুটি বাহুর কোণের মান ৩০ ডিগ্রীর বেশী ৬০ ডিগ্রীর কম, তাকে বদ্ধ ভাঁজ বলে।
iv) সংকীর্ণ ভাঁজ
যে ভাঁজে দুটি বাহুর কোণের মান ৩০ ডিগ্রীর কম, তাকে মুক্ত ভাঁজ বলে।
প্রতিসম ভাঁজ ও অপ্রতিসম ভাঁজের পার্থক্য
পর্ব সমাপ্ত। পরবর্তী পর্ব → চ্যুতি বা সংস্র
এই লেখাটির সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। বিনা অনুমতিতে এই লেখা, অডিও, ভিডিও বা অন্য ভাবে কোন মাধ্যমে প্রকাশ করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
লেখিকা পরিচিতি
বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের প্রাক্তন ছাত্রী মোনালিসা মাইতি। পড়াশোনার পাশাপাশি বই পড়তে এবং গান গাইতে ভালোবাসেন মোনালিসা ।
এই লেখাটি থেকে উপকৃত হলে সবার সাথে শেয়ার করার অনুরোধ রইল।
JumpMagazine.in এর নিয়মিত আপডেট পাবার জন্য –
- সাবস্ক্রাইব করো – YouTube চ্যানেল
- লাইক করো – facebook পেজ
- সাবস্ক্রাইব করো – টেলিগ্রাম চ্যানেল
- Facebook Group – লেখা – পড়া – শোনা