শ্রেণিঃ অষ্টম | বিষয়: বিজ্ঞান । অধ্যায় – পদার্থের গঠন (প্রথম পর্ব)
এই সুন্দর পৃথিবী কতকিছু দিয়ে তৈরি কিন্তু জানো কি এই সকল বস্তুর মধ্যেই “পরমাণু” নামক একজন বর্তমান।
বিজ্ঞান পড়ার আগে চলো এর ইতিহাসটা জেনে নিই।
পরমাণুর ইতিহাস
পরমাণু সম্পর্কিত ধারণা প্রথম আসে প্রাচীন দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে। 400 খ্রীষ্টপূর্বাব্দে (400 BC) নাগাদ, অর্থাৎ আজ থেকে প্রায় 2500 বছর আগে গ্রীসে পরমাণু সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়। গ্রীক দার্শনিক লেউকিপ্পোস (Leucippus) ও তাঁর ছাত্র দেমোক্রিতোস (Democritus) প্রথম পরমাণুর ধারণা দেন। তাঁরা বলেন যে কোন বস্তুকে ক্রমাগত ভাঙতে থাকলে এক সময় এমন এক অতিক্ষুদ্র কণা পাওয়া যাবে যাকে আর ভাঙা যাবে না।
দেমোক্রিতোস এই অতিক্ষুদ্র কণার নাম দেন atomos, যা থেকে atom কথাটির উৎপত্তি হয়েছে।
ভারত সংযোগ
শুধু গ্রীস নয়, প্রাচীন ভারতেও পরমাণুর অস্ত্বিত্বের কথা বলা হয়েছে। দার্শনিক উল্কার পুত্র কণাদ এই পরমাণুর ধারণা দেন। খ্রিষ্টপূর্ব 600 থেকে খ্রিষ্টপূর্ব 800 সালের মধ্যে বর্তমান গুজরাট অঞ্চলে কণাদের জন্ম হয়। তিনি কাশ্যপ নামেও পরিচিত ছিলেন।
কণাদ বলেন যে, কোন বস্তুকে ক্রমাগত ভাঙতে থাকলে সেই ভাঙন অনন্তকাল পর্যন্ত চলতে পারে না। ভাঙতে ভাঙতে এক সময় একটি ক্ষুদ্রতম কণা পাওয়া যাবে যাকে আর ভাঙা যাবে না।
প্রাচীন ভারতই সর্বপ্রথম বিশ্বকে পরমাণুর অস্ত্বিত্বের কথা জানায়।
আধুনিক বিজ্ঞানে পরমাণু তত্ত্বের সূচনা করেন ব্রিটিশ বিজ্ঞানী জন ডালটন।
1808 সালে বিজ্ঞানী জন ডালটন বিভিন্ন মৌলিক পদার্থের পরমাণুর গঠন, ধর্ম এবং প্রকৃতি সম্পর্কে বৈজ্ঞানিক মত প্রকাশ করেন যা ডালটনের পরমাণুবাদ (atomic theory) নামে পরিচিত। এই পরমাণুবাদের উপর নির্ভর করে আধুনিক পরমাণু–বিজ্ঞান গড়ে উঠেছে।
ডালটনের পরমাণুবাদ তত্ত্বের মূল বক্তব্য
a) প্রত্যেক মৌলিক পদার্থ অসংখ্য অতিক্ষুদ্র ও অবিভাজ্য কণা দিয়ে তৈরী। এই অতিক্ষুদ্র কণাকে পরমাণু বলা হয়।
b) পরমাণু অবিভাজ্য ও অবিনশ্বর। একে সৃষ্টি বা ধবংস করা যায় না। কোন প্রক্রিয়া দ্বারা পরমাণুর আকার, ওজন বা ধর্মের পরিবর্তন করা যায় না।
c) একই মৌলিক পদার্থের পরমাণুর ওজন ও ধর্ম একই হয়। অর্থাৎ অক্সিজেনের প্রত্যেক পরমাণুর ওজন ও ধর্ম অভিন্ন হবে।
d) ভিন্ন ভিন্ন মৌলিক পদার্থের পরমাণুর ওজন ও ধর্ম আলাদা হবে। অর্থাৎ অক্সিজেনের পরমাণুগুলির ওজন ও ধর্ম যা হবে হাইড্রোজেন পরমাণুর ওজন ও ধর্ম তা হবে না।
e) বিভিন্ন মৌলিক পদার্থের পরমাণুগুলি পূর্ণসংখ্যার অনুপাতে পরস্পরের সাথে যুক্ত হয়ে যৌগিক পদার্থ গঠন করে। যেমন- কার্বন ডাই অক্সাইড একটি যৌগিক পদার্থ, যা কার্বন ও অক্সিজেনের সমন্বয়ে গঠিত। এখানে কার্বন ও অক্সিজেন 1 : 2 এই পূর্ণসংখ্যার সরল অনুপাতে যুক্ত হয়েছে।
আধুনিক বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে ডালটনের পরমাণুবাদের গুরুত্ব অসীম।
বিভিন্ন মৌলিক ও যৌগিক পদার্থের গঠন, তাদের ধর্মের পার্থক্য, রাসায়নিক বিক্রিয়া কীভাবে ঘটে এগুলি ডালটনের পরমাণু তত্ত্বের সাহায্যে ব্যাখ্যা করা যায়।
ডালটনের পরমাণুতত্ত্বের কিছু সীমাবদ্ধতা বা ত্রুটি
• পদার্থের অণু সম্পর্কে কোন ধারণা এই তত্ত্বে ছিল না।
1811 সালে বিজ্ঞানী অ্যাভোগ্যাড্রো ডালটনের পরমাণুবাদ তত্ত্বের ত্রুটি সংশোধন করেন। মৌলের পরমাণুগুলি জুড়ে অণু বা molecule সৃষ্টির কথা বলেন অ্যাভোগ্যাড্রো।
• ডালটন বলেছিলেন, কোন পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণা হল পরমাণু এবং এই পরমাণু অবিভাজ্য। কিন্তু পরবর্তীকালে এই ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। জানা গেছে যে কোন পরমাণু নিস্তড়িত নিউট্রন, নেগেটিভ তড়িৎগ্রস্ত কণা ইলেকট্রন ও পজেটিভ তড়িৎগ্রস্ত কণা প্রোটনের সমন্বয়ে গঠিত।
তবে সাধারণ অবস্থায় বা রাসায়নিক বিক্রিয়ার সময় মৌলের পরমাণুগুলি অবিভাজ্য কণার ন্যায় ব্যবহার করে।
ইলেকট্রন, প্রোটন, নিউট্রন আবিষ্কার
1897 সালে বিজ্ঞানী জে জে থমসন (J. J. Thomson) ইলেকট্রন আবিষ্কার করেন। এই নেগেটিভ তড়িৎযুক্ত কণা যা নির্দিষ্ট কক্ষপথে পরমাণুর নিউক্লিয়াসকে আবর্তন করে।
এরপর 1909 সালে বিজ্ঞানী রাদারফোর্ড (Rutherford) পজেটিভ তড়িৎগ্রস্ত কণা প্রোটন আবিষ্কার করেন।
1932 সালে বিজ্ঞানী রাদারফোর্ডের ছাত্র জেমস চ্যাডউইক (James Chadwick) নিউট্রন আবিষ্কার করেন।
1911 সালে বিজ্ঞানী রাদারফোর্ড আলফা কণার বিচ্ছুরণ পরীক্ষার উপর ভিত্তি করে পরমাণুর গঠন সম্পর্কে যে মতবাদ প্রদান করেন, তা রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেল নামে পরিচিত।
রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেল
তাঁর মডেল অনুসারে—
a) পরমাণুর বেশীর ভাগ স্থানই ফাঁকা।
b) ধনাত্মক চার্জযুক্ত প্রোটন ও নিস্তড়িৎ নিউট্রন পরমাণুর কেন্দ্রে অতি ক্ষুদ্র স্থানে ঘন সন্নিবিষ্টভাবে অবস্থান করে, যাকে নিউক্লিয়াস বলা হয়। নিউক্লিয়াসের আকার পরমাণুর আকারের তুলনায় খুবই কম।
c) পরমাণুর বেশীর ভাগ ভর তার নিউক্লিয়াসে কেন্দ্রীভূত থাকে।
d) ইলেকট্রনগুলি বিভিন্ন কক্ষপথে নিউক্লিয়াসের চারপাশে প্রদক্ষিণ করে।
e) নিউক্লিয়াসকে কেন্দ্র করে প্রদক্ষিণ রত ইলেকট্রনের সংখ্যা নিউক্লিয়াসে বর্তমান প্রোটন সংখ্যার সমান।
বিজ্ঞানী রাদারফোর্ড সর্বপ্রথম ইলেকট্রনের কক্ষপথ ও নিউক্লিয়াস সম্পর্কে ধারণা দেন।
তিনিই সর্বপ্রথম একটি গ্রহণযোগ্য পরমাণু মডেল তৈরি করেন। তবে তাঁর মডেলের কিছু সীমাবদ্ধতা ছিল।
1913 সালে বিজ্ঞানী নীলস বোর (Niels Bohr)রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেলের ত্রুটি সংশোধন করে পরমাণুর গঠন সম্পর্কে মতামত দেন।
কোয়ান্টাম তত্ত্ব (Quantum theory) এর উপর ভিত্তি করে বিজ্ঞানী বোর তাঁর পরমাণু মডেল উপস্থাপন করেন।
আমরা জানি যে পরমাণুর কেন্দ্রস্থলে পজেটিভ তড়িৎগ্রস্ত কণা প্রোটন ও নিস্তড়িৎ নিউট্রন একত্রে অবস্থান করে। একটি প্রোটনে যে পরিমাণ পজেটিভ তড়িৎ বর্তমান, বাইরের কক্ষপথে থাকা ইলেকট্রন ঠিক সেই পরিমাণ নেগেটিভ তড়িৎ বর্তমান এবং কোন পরমাণুর কেন্দ্রে বর্তমান প্রোটনের সংখ্যা কক্ষপথে ঘূর্ণায়মান ইলেকট্রন সংখ্যার সমান হয়। এর ফলে পরমাণু নিস্তড়িৎ অবস্থায় থাকে।
আমরা জানি সমজাতীয় চার্জ বা আধান পরস্পরকে বিকর্ষণ করে। কিন্তু দেখা যায় যে ধনাত্মক চার্জযুক্ত একাধিক প্রোটন এক সঙ্গে নিউক্লিয়াসে অবস্থান করে। এর কারণ হল নিউক্লিয় বল (Nuclear Force)।
নিউক্লিয় বলের সংজ্ঞা
যে বলের প্রভাবে পরমাণুর কেন্দ্রস্থলে প্রোটন ও নিউট্রনগুলি একত্রে অবস্থান করে তাকে নিউক্লিয় বল বলা হয়। এই নিউক্লিয় বল প্রোটনগুলির মধ্যবর্তী বিকর্ষণ বলের তুলনায় অনেক বেশী শক্তিশালী।
পরমাণু ক্রমাঙ্ক কাকে বলে?
কোন পরমাণুর নিউক্লিয়াসে উপস্থিত প্রোটন সংখ্যাকে পরমাণুটির পরমাণু ক্রমাঙ্ক বা পারমাণবিক সংখ্যা (Atomic number) বলা হয়। একে ‘Z’ অক্ষর দ্বারা উপস্থাপিত করা হয়। একটি নির্দিষ্ট উপাদানের সমস্ত পরমাণুতে একই সংখ্যক প্রোটন থাকে।
সুতরাং কোন নির্দিষ্ট উপাদানের প্রত্যেক পরমাণুর পারমাণবিক সংখ্যা একই হয়।
উদাহরণ হিসাবে বলা যায়, কার্বন (C) পরমাণুর ক্ষেত্রে পরমাণু ক্রমাঙ্ক হল 6, কারণ কার্বন পরমাণুর কেন্দ্রে মোট 6 টি প্রোটন থাকে।
পরমাণুর ভরসংখ্যার সংজ্ঞা
কোন পরমাণুর নিউক্লিয়াসে উপস্থিত প্রোটন ও নিউট্রন সংখ্যার যোগফলকে ঐ পরমাণুর ভরসংখ্যা বা Mess Number বলা হয়।
একে ‘A’ অক্ষর দ্বারা উপস্থাপিত করা হয়। উদাহরণ হিসাবে বলা যায়, কোন কার্বন পরমাণুর নিউক্লিয়াসে মোট 6 টি প্রোটন ও 6 টি নিউট্রন থাকে। সুতরাং কার্বন পরমাণুর ভরসংখ্যা হল 12।
পরমাণুর নিউক্লিয়াসে উপস্থিত প্রোটন ও নিউট্রনকে একত্রে নিউক্লিয়ন বলা হয়।
পরমাণুতে উপস্থিত ইলেকট্রনের ওজন প্রায় নগণ্য। এই কারণে কোন পরমাণুর ভরসংখ্যা এবং পারমাণবিক ভর প্রায় একই হয়।
কোন পরমাণুর ভরসংখ্যা ও পরমাণু ক্রমাঙ্ক লিখতে হলে মৌলটির চিহ্ন বা লিখে তার বাঁদিকে একটু উপরে ভরসংখ্যা ও বাঁদিকে একটু নীচে পরমাণু ক্রমাঙ্ক লেখা হয়।
উদাহরণ হিসাবে আমরা কার্বন পরমাণু ধরতে পারি। একটু আগেই আমরা জেনেছি কার্বনের ভরসংখ্যা 12 ও পরমাণু ক্রমাঙ্ক 6। সুতরাং আমরা লিখব 126C
বিজ্ঞানী বোরের মডেল অনুসারে কার্বন (C) পরমাণুর গঠন (Atomic structure of Carbon)।
একইভাবে সোডিয়াম (Na) পরমাণুতে 11 টি প্রোটন, 11 টি ইলেকট্রন ও 12 টি নিউট্রন পাই। সুতরাং সোডিয়ামের পরমাণু ক্রমাঙ্ক (Z) = 11 এবং সোডিয়ামের ভরসংখ্যা (A) = 23 একে লেখা হয় 2311Na।
হাইড্রোজেন এমন একটি পদার্থ যার পরমাণুতে শুধুমাত্র একটি প্রোটন ও একটি ইলেকট্রন আছে। কিন্তু কোন নিউট্রন নেই। এখানে পরমাণুর কেন্দ্রে একটি প্রোটন থাকে, আর তাকে কেন্দ্র করে ইলেকট্রনটি বৃত্তাকার কক্ষপথে আবর্তন করে। অর্থাৎ হাইড্রোজেনের পরমাণু ক্রমাঙ্ক (Z) = 1 এবং ভরসংখ্যা (A) = 1। একে 11H লেখা হয়।
বিজ্ঞানী ডালটন তাঁর পরমাণুবাদ তত্ত্বে বলেছিলেন যে একই মৌলের পরমাণুগুলির ভর ও ধর্ম একই হয়। কিন্তু পরবর্তীকালে বিভিন্ন পরীক্ষা দ্বারা জানা যায় যে একই মৌলের ভিন্ন ভর বিশিষ্ট পরমাণু থাকা সম্ভব।
সমস্থানিকতার ধারণা
একই পরমাণু ক্রমাঙ্ক কিন্তু ভিন্ন ভর বিশিষ্ট কিছু পরমাণু দেখা যায়। মৌলের এই ধরনের পরমাণুগুলির নিউক্লিয়াসে প্রোটন সংখ্যা একই থাকে, কিন্তু নিউট্রন সংখ্যা পৃথক হওয়ার জন্য ওদের ভরসংখ্যা ভিন্ন হয়। এই ঘটনাকে সমস্থানিকতা বলে আর এইরকম পরমাণুগুলিকে আইসোটোপ (Isotope) বা সমস্থানিক বলা হয়।
অষ্টম শ্রেণির অন্য বিভাগ – বাংলা | ইংরেজি | গণিত | বিজ্ঞান
আইসোটোপ কাকে বলে?
একই মৌলের বিভিন্ন পরমাণু যাদের পারমাণবিক সংখ্যা অর্থাৎ প্রোটন সংখ্যা একই, কিন্তু নিউক্লিয়াসে বিভিন্ন সংখ্যক নিউট্রন থাকার জন্য ভরসংখ্যা বিভিন্ন হয় তাকে আইসোটোপ বা সমস্থানিক বলা হয়।
উদাহরণ হিসাবে বলা যায় হাইড্রোজেন পরমাণুর মোট সাতটি আইসোটোপ হয়, যার মধ্যে প্রথম তিনটি প্রাকৃতিক।
এই তিনটি হল—
1) সাধারণ হাইড্রোজেন বা প্রোটিয়াম (Protium), একে 11H বা 1H লেখা হয়।
2) ভারী হাইড্রোজেন বা ডয়টেরিয়াম (Deuterium), একে 21H বা 2H লেখা হয়।
3) ট্রাইটিয়াম (Tritium), একে 31H বা, 3H লেখা হয়।
4H থেকে 9H গুলি তেজস্ক্রিয় বা Radio active আইসোটোপ।
একই ভাবে কার্বন পরমাণুর 86C থেকে 126C পর্যন্ত মৌল 15 টি আইসোটোপ হয়। এদের মধ্যে 12C ও 13C সুস্থিত (Stable) আইসোটোপ। প্রাকৃতিক ভাবে প্রাপ্ত কার্বনের 99% হল 12C ধরনের।
আইসোবার কাকে বলে?
যেসব মৌলের পরমাণুর পারমাণবিক সংখ্যা অর্থাৎ প্রোটন সংখ্যা ভিন্ন কিন্তু ভরসংখ্যা একই তাদেরকে পরস্পরের আইসোবার (Isobar) বলা হয়।
যেমন- Cu এর পারমাণবিক সংখ্যা 29 ও Zn এর পারমাণবিক সংখ্যা 30, কিন্তু উভয়ের ভরসংখ্যা 65। সুতরাং 6929Cu ও 6530Zn পরস্পরের আইসোবার। একইভাবে 146C ও 147N, 31H ও 32He, 167N ও 168O হল আইসোবারের উদাহরণ।
আবার যেসব মৌলের পরমাণুতে নিউট্রন সংখ্যা সমান কিন্তু প্রোটন সংখ্যা ভিন্ন তাদের আইসোটোন (Isotone) বলে। যেমন- হিলিয়াম এবং ডয়টেরিয়াম উভয় পরমাণুতে একটি করে নিউট্রন আছে। কিন্তু হিলিয়াম পরমাণুতে 2 টি প্রোটন ও ডয়টেরিয়ামে একটি প্রোটন আছে। সুতরাং হিলিয়াম ও ডয়টেরিয়াম পরস্পরের আইসোটোন।
পরমাণু ক্রমাঙ্ক এবং ভরসংখ্যা বোঝাবার জন্য আমরা একটি উদাহরণ ব্যবহার করতে পারি—
কোন পরমাণুর পারমাণবিক সংখ্যা বা পরমাণু ক্রমাঙ্ক 9 এবং ভরসংখ্যা 19। পরমাণুটিতে কতগুলি ইলেকট্রন, প্রোটন ও নিউট্রন আছে নির্ণয় কর।
সমাধান- আমরা জানি যে, পরমাণু ক্রমাঙ্ক = প্রোটন সংখ্যা।
∴ পরমাণুটিতে 9 টি প্রোটন আছে। (উত্তর)
যেকোন পরমাণুতে প্রোটন সংখ্যা = ইলেকট্রন সংখ্যা হয়।
∴ পরমাণুতে 9 টি ইলেকট্রন আছে। (উত্তর)
আবার আমরা জানি ভরসংখ্যা = প্রোটন সংখ্যা + নিউট্রন সংখ্যা
নিউট্রন সংখ্যা = ভরসংখ্যা – প্রোটন সংখ্যা
= 19 – 9
= 20
∴ পরমাণুতে 20 টি নিউট্রন আছে। (উত্তর)
পর্ব সমাপ্ত।পরবর্তী পর্ব → পদার্থের কঠিন ও তরল অবস্থা
এই লেখাটির সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। বিনা অনুমতিতে এই লেখা, অডিও, ভিডিও বা অন্য ভাবে কোন মাধ্যমে প্রকাশ করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
লেখিকা পরিচিতিঃ
বিজ্ঞান স্নাতক এবং কম্পিউটার বিজ্ঞানে উচ্চ শিক্ষিতা নন্দিতা বসুর পেশা শিক্ষকতা।তিনি বই পড়তে বড় ভালোবাসেন। কাজের ফাঁকে, অবসরে, বাসে ট্রামে তো বটেই, শোনা যায় তিনি নাকি ঘুমিয়ে ঘুমিয়েও বই পড়তে পারেন।
এই লেখাটি থেকে উপকৃত হলে সবার সাথে শেয়ার করতে ভুলো না।
JumpMagazine.in এর নিয়মিত আপডেট পাবার জন্য –
- সাবস্ক্রাইব করো – YouTube চ্যানেল
- লাইক করো – facebook পেজ
- সাবস্ক্রাইব করো – টেলিগ্রাম চ্যানেল
- Facebook Group – লেখা – পড়া – শোনা