Article (প্রবন্ধ)

পৃথিবীর সবথকে শক্তিশালী শক্তি – কল্পনাশক্তি

চলো অতীতের পৃথিবীতে একটু ফিরে যাই …

Jump-magazine-article-homo-erectus copy
হোমো ইরেক্টাস (Homo erectus)

বহু বছর আগে, যখন মানুষ নিজেকে মানুষ বলে ভাবতে শেখেন, এটা সেই সময়কার কথা।

হোমো ইরেক্টাস (Homo erectus) অর্থাৎ আদিম মানুষ একেবারে প্রথমদিকে। আমরা তখন শিকার করে খাই, একেবারে যাকে বলে ছাল ছাড়িয়ে (অথবা না ছাড়িয়ে) কাঁচা মাংস খাই। খিদে পেলে খাই, খাবার জন্য মারামারি করি, আসলে বেঁচে থাকিই খাবার জন্য, ঠিক যেমন জঙ্গলের আরো অন্যান্য প্রাণীরা বেঁচে থাকে।

jump-magazine-article-forest

সারা পৃথিবী জুড়ে তখন বনজঙ্গল, চারিদিক বড় বড় গাছ।

এর মধ্যে আবার নানান অজ্ঞাত কারণে মাঝে মাঝে জঙ্গলে আগুন লেগে যায়। সবাই প্রাণ ভয়ে পালায়, কারণ নাহলে সবাই পুড়ে যাবে যে! আগুনকে সবাই ভয় পায়। আগুন দেখলেই সবাই পালায়। সেই আদিম মানুষদের বিপদের তো আর অভাব নেই, চারিদিকে ঘাপটি মেরে বসে আছে নানান শ্বাপদ, কখন কে এসে গপ করে খেয়ে ফেলে তার ঠিক নেই। আর নিজেদের মধ্যে মারামারি করে মারা পড়ার তো কোনো শেষ নেই। এরপর আছে রোগ-ব্যাধি আর ভয়ংকর ঠাণ্ডা। এর পরে  যদি আগুন দেখে দৌড়াতে হয়, কারই বা আর বেঁচে থাকতে ভালো লাগে, আদিম মানুষ বলে কি মানুষ নয়!

jump-magazine-article-fire
আগুনকে সবাই ভয় পায়। আগুন দেখলেই সবাই পালায়।

এইভাবে দিন কেটে যায়।

এদের মধ্যে কেউ একজন চিন্তা করে ‘আরে, রাতে আগুন লাগলে তো মোটে ঠাণ্ডা লাগে না, বরং বেশ আরামই লাগে!’। সে আরো ভাবে এই আগুনকে কিভাবে নিজের কাছে আনা যায়। এইভাবে ভাবতে ভাবতে একসময় তারা আগুনটাকে নিজেদের গুহার কাছে নিয়ে আসতে শেখে। আরো বোঝে যে, তারা আর ভয় না পেলেও, অন্যান্য জন্তুরা এখনও আগুনকে ভয় পায়। তাই গুহার সামনে রাতে আগুন জ্বললে শ্বাপদরা আর আসে না। হঠাৎ আদিম মানুষেরা এটাও ভেবে ফেলে এই আগুনে পোড়ালে কাঁচা মাংসেরও চমৎকার স্বাদ হয়।

এর পর কেটে যায় বছরের পর বছর, আদিম মানুষ তাদের অসামান্য চিন্তাশক্তিকে কাজে লাগিয়ে সময়ের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করে বিবর্তিত হয় আজকের মানুষে।

আজকের মানুষ শুধু সেদিনকার অজানা আগুন নয়, প্রায় মুষ্টিবদ্ধ করেছে গোটা পৃথিবীকে।

jump-magazine-article-fire
আগুন করায়ত্ব করলো হলো মানুষের (সৌজন্যে- উইকিপিডিয়া)

এই গল্প তো আমাদের সবার জানা, সেই ছোটবেলার ইতিহাস বইতেই এইসব পড়েছি আমরা। এইসব জেনে আজ আর কি হবে!

evolution-human
মানুষের বিবর্তন

মজার কথা হল, আজও বন্য প্রাণীরা আগুনকে ভয় পায় আগের মতো, সেই আদিম মানুষদের সময় থেকে। আমরা শিখে এত উন্নতি করে গেলাম (মানে মানুষ হয়ে গেলাম) আর ওরা কিছু হতে পারলো না। তার একটাই কারণ, কল্পনা শক্তি। কল্পনা করার ক্ষমতা আছে শুধুমাত্র আমাদের, মানুষদের। সেই আদিম মানুষটা আগুন নিয়ে কেমন ভাবে ব্যবহার করা যায় তা কল্পনা করেছিল বলেই হয়ত আজ আমরা মানুষ হতে পেরেছি। শুধু তাই নয়, আজকের পৃথিবীতে আমরা আজ যা যা ব্যবহার করি, তার সবকিছুই মানুষের কল্পনাশক্তির কিছু উৎকৃষ্ট ফসল।

এই কল্পনা শক্তির অধিকারী কিন্তু তুমিও।

কে বলতে পারে এই তুমিই কাল কোনো নতুন কিছু আবিষ্কার করে পৃথিবীকে চমকে দেবে না। তাই আজ থেকেই ব্যবহার শুরু করো পৃথিবীর সবথেকে শক্তিশালী হাতিয়ারের – যার নাম হল কল্পনাশক্তি। আর ছাত্র জীবনের প্রথম ধাপ – ‘পড়া বুঝে পড়া, না বুঝে পড়া মুখস্থ না করা’


এই লেখাটির সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। বিনা অনুমতিতে এই লেখা, অডিও, ভিডিও বা অন্যভাবে কোনো মাধ্যমে প্রকাশ করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


এই লেখাটি ভালো লাগলে সকলের সাথে শেয়ার করার অনুরোধ রইল।



Join JUMP Magazine Telegram


JumpMagazine.in এর নিয়মিত আপডেট পাওয়ার জন্য –

Article-23-19