কেরিয়ার বিভাগ – নার্সিং (Nursing)
Nurse: Just another word to describe a person strong enough to tolerate anything and soft enough to understand anyone.
নার্সিং কি?
রোগীদের পাশে থেকে চিকিৎসার কাজে সাহায্য করে তাদের শারীরিক এবং মানসিক ভাবে সুস্থ করে তোলাই হল সেবক বা সেবিকাদের প্রধান কাজ। এই কাজ যারা করেন তাদের নার্স বলা হয়।
এটি এমন একটি পেশা যেখানে মানুষের মানবিকতা, আন্তরিকতা ও সহনশীলতা ভীষণভাবে দরকার হয়। এবার এই সেবাদানের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র মানবিক দিক বজায় থাকলেই চলবে না কারণ প্রয়োজনে শুধুমাত্র মুমূর্ষু রোগীর সেবা নয়, চিকিৎসকদের সহায়তার এবং চিকিৎসা পরিচালনার ক্ষেত্রেও সেবক বা সেবিকাদের অগ্রণী ভূমিকা থাকে। তাই আধুনিক সময়ে বিভিন্ন রকম নার্সিং কোর্সের মাধ্যম চিকিৎসাশাস্ত্র মেনে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করা হয়।
নার্সিং-এর বিভিন্ন পদগুলি সম্পর্কে ধারণা
একজন নার্স শুধুমাত্র রোগীর সেবায় নিযুক্ত থাকেন, এই ধারণা সঠিক নয়। রোগীর পরিষেবার পাশাপাশি বহুক্ষেত্রে তাদের চিকিৎসাকেন্দ্রের পরিচালনার দায়িত্বও পালন করতে হয়। আমরা নার্সিং পেশার সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন পদের সম্পর্কে কিছু কথা জেনে নেব।
নার্সিং প্রজেক্ট অফিসার, সহকারী পরিচালক/পরিচালিকা- এনারা মূলত Health Facility Team এর সাথে যুক্ত থাকেন।
অ্যাসিস্ট্যান্ট নার্স বা Nursing Assistant অথবা Nursing Aide – এদের মূল কাজ রোগীদের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত যাবতীয় খেয়াল রাখা; তাদের খাওয়াদাওয়া, ওষুধপত্র এবং রোগীর শারীরিক লক্ষণের তত্ত্বাবধান করা।
স্টাফ নার্স বা Staff Nurse – এনারা মূলত হসপিটালে থাকেন এবং এনাদের দায়িত্বের অনেকটাই Long Term Care। এনারা Administer হিসেবেও কিছু কাজ করেন। রোগীদের দেখাশোনা, ওষুধপত্র এবং প্রয়োজনমত রোগীকে discharge করার প্ল্যান ও এনারা করতে পারেন।
ওটি সিস্টার বা নার্সিং সুপারভাইজার- OT Sister রা মূলত Operation Room এ অন্যান্য room staffদের সম্পূর্ণ সহায়তা করে থাকেন।
হসপিটাল ম্যানেজমেন্ট এবং ক্লিনিক্যাল কেয়ারের মধ্যে একটি যোগসূত্র স্থাপন করেন Nursing Supervisor রা। Patient Care Operations বা staff nurse-দেরকে মনিটর করা, সঠিক উন্নতি পর্যবেক্ষণ ও কার্যক্ষেত্রে তার প্রয়োগ করা এনাদের কাজ হয়।
নার্সিং কলেজ ইন্সট্রাক্টর বা ডেমোনস্ট্রেটর ইনচার্জ- এঁরা বিভিন্ন কলেজে বা ইউনিভারসিটিতে নার্সিং নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের ট্রেনিং দেন, ডেমোনস্ট্রেটর ও এই ট্রেনিং কে বিভিন্ন practical equipments ব্যবহার করে বাস্তবোচিত করে তোলেন।
এবার চল, নার্সিং বিষয়টি নিয়ে আরো একটু বিস্তারিত আলোচনায় আসি।
কারা পড়বে নার্সিং?
একমাত্র যারা রোগীর সেবক বা সেবিকা হিসেবে মন থেকে কাজ করতে আগ্রহী এবং মনের জোর যথেষ্ট সেইধরণের মানুষদেরই এই জীবিকায় আসা উচিত। বহু ক্ষেত্রেই এই পেশায় সাময়িকভাবে প্রবল মানসিক এবং শারীরিক ধকল নিতে হয়, যেমন এই করোনা মহামারীর সময়ে ডাক্তার – নার্সরা আমাদের ঠিক রাখার জন্য অতিরিক্ত ধকল নিচ্ছেন । তাই মনের দিক থেকে সম্পূর্ণ সম্মতি থাকলে তবেই আসা উচিৎ এই পেশায়।
উচ্চমাধ্যমিকের পর প্রথাগত শিক্ষায় না গিয়ে নার্সিং নিয়ে পড়া যায়। সার্টিফিকেট কোর্স, ডিপ্লোমা বা ডিগ্রি, নার্সিং নিয়ে এ সমস্ত কিছুই করা যায়।
কিভাবে পড়বে নার্সিং?
উচ্চমাধ্যমিকের পর এক বছরের সার্টিফিকেট কোর্স করা যায়। দুই বা তিন বছরের ডিপ্লোমা কোর্স এবং চার বছরের স্নাতক কোর্সে পড়া যায়। স্নাতকোত্তর কোর্সের ক্ষেত্রে সময়সীমা দুই বছর।
সাধারণত উচ্চমাধ্যমিকে বিজ্ঞান (Pure Science অথবা Bio Science) বিভাগে পড়াশোনা করেই নার্সিং পড়া যায়। তবে কলা বা কমার্স বিভাগ নিয়ে পড়েও নার্সিং এর Auxiliary Nursing Midwife (ANM) এবং General Nursing Midwife (GNM) এই ডিপ্লোমা কোর্সগুলি করতে পারবে তোমরা।
এককথায় বললে নার্সিং এ ডিপ্লোমা কোর্সের জন্য (10+2) , আন্ডার গ্র্যাজুয়েট কোর্সের জন্য (10+2), সেই সাথে ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, বায়োলজি থাকতে হবে। মাস্টার্স কোর্সের জন্য নার্সিং-এ গ্রাজুয়েশন থাকার দরকার, এক্ষেত্রে কোর্সের সময়সীমা 2 বছর।
যে কোন সরকারী বা বেসরকারী নার্সিং কলেজ বা ইনস্টিটিউট থেকে ডিপ্লোমা বা বি এস সি কোর্স সম্পূর্ণ করে যে কেউ নার্সিং পেশায় প্রবেশের জন্য বিভিন্ন সরকারী এবং বেসরকারি চিকিৎসাকেন্দ্রে আবেদন করতে পারেন।
[আরো পড়ুন – প্রবন্ধ বিভাগ | প্রযুক্তি বিভাগ | বিজ্ঞানের ইতিহাস বিভাগ]
কিছু নার্সিং কোর্স ও তার সময়সীমা
ডিপ্লোমা কোর্সের মধ্যে ডিপ্লোমা ইন সায়েন্স এন্ড মিডওয়াইফারি ও ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারি জনপ্রিয় এবং ব্যাচেলর ডিগ্রির মধ্যে ব্যাচেলর অফ সায়েন্স ইন নার্সিং যেটি চার বছরের কোর্সে পড়ানো হয়।
এছাড়া নির্দিষ্ট কিছু বিভাগে এক বছরের কোর্স রয়েছে।
সেই বিভাগগুলি হল, অর্থোপেডিক, সাইকিয়াট্রিক, পেডিয়াট্রিক, সিসিইউ, আইসিইউ ও কার্ডিয়াক নার্সিংসহ অন্যান্য বিষয়।
এছাড়া কিছুক্ষেত্রে এই পেশায় আসার আগে কিছু বিশেষ ট্রেনিং বা প্রশিক্ষণ নিতে হয়। যেমন ধর বিষয়গুলি হল কিছুটা এইরকম,
- রোগীদের স্বাস্থ্য ও পরিষেবার সম্পর্কে খুঁটিনাটি জানা।
- স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ব্যবহৃত সাধারণ সমস্ত যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতে শেখা।
- ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন বুঝে সেই অনুযায়ী ওষুধ দিতে পারা।
- নিয়মিত রোগীর স্বাস্থ্য সম্পর্কিত আপডেট রেডি রাখা।
- অপারেশন থিয়েটারে যাবতীয় যন্ত্রপাতির বিষয়ে খোঁজ রাখা।
কোথায় পড়বে নার্সিং?
আমাদের দেশে প্রায় পঞ্চাশটির বেশি সরকারী কলেজ, এবং অজস্র নার্সিং কলেজ আছে। এছাড়া বহু বেসরকারি ইনস্টিটিউটে নার্সিং ডিপ্লোমা এবং ব্যাচেলর কোর্স করানো হয়।
কিছু জনপ্রিয় প্রতিষ্ঠান
পশ্চিমবঙ্গের কিছু জনপ্রিয় প্রতিষ্ঠান
- College of Nursing S.S.K.M. Hospital
- Kolkata Medical College
- Institute of Post Graduate Medical Education and Research (PGMER), Kolkata
- Kolkata Institute of Nursing and Paramedical Science
- Ma Sarada College of Nursing
- Techno India University, Kolkata
ভারতের কিছু জনপ্রিয় প্রতিষ্ঠান
- All India Institute of Medical Sciences, New Delhi
- Acharya Institute of Health Sciences
- Jawaharlal Institute of Postgraduate Medical Education
- Christian Medical College (Research Institution in Vellore, India)
- Madras Medical College
- Chandigarh University
- King George’s Medical University
ভবিষ্যতে সুযোগ
চিকিৎসাবিজ্ঞানে উন্নতির সাথে সাথে মানুষের গড় জীবনসীমা (life expectancy) বেড়েছে। আজকের দিনে ক্যানসারের মতো দুরারগ্য রোগেরও চিকিৎসা সম্ভব হচ্ছে। তাই সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে চিকিৎসা ব্যবস্থার চাহিদা।
কিন্তু আমাদের দেশে চিকিৎসা পরিষেবা অপ্রতুল। সাম্প্রতিক একটি রিপোর্ট বলছে, আমাদের দেশে 1000 নাগরিক পিছু নার্সের সংখ্যা মাত্র 1.7 জন। এই তথ্য থেকেই খুব স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে যে আগামীদিনে প্রচুর দক্ষ সেবক – সেবিকার প্রয়োজন হবে আমাদের দেশের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোকে উন্নত করার লক্ষে।
তাই নার্সিং করে ঘরে বেকার বসে রয়েছে এই চিত্র খুবই বিরল। শুধু ভারতবর্ষ কেন, বিদেশেও এই পেশায় কাজের সুযোগের কোন অভাব নেই।
কেরিয়ার আলোচনা – জার্নালিজম | ফুড টেক্নোলজি | হোটেল ম্যানেজমেন্ট
শেষকথা
Definition Of A Nurse:
“To go above and beyond the call of duty.
The first to work and the last to leave.
The heart and soul of caring.
A unique soul who will pass through your life
for a minute and impact it for an eternity.
An empowered individual whom you may meet
Only for a 12 hour period, but who
will put you and yours above theirs.”
সামাজিক সম্মান ও অর্থ উপার্জনের যথেষ্ট সুযোগ আছে এই পেশায়। দরকার শুধু যথেষ্ট সাহস,পরিশ্রমী মনোভাব ও মনের জোর, সেবার ইচ্ছা এবং ধৈর্য।