Biology – একাদশ শ্রেনি – ট্যাক্সোনমি ও সিস্টেমেটিক্স
ট্যক্সোনমি কাকে বলে?
“ট্যাক্সোনমি” শব্দটি দুটি শব্দ থেকে উদ্ভূত, “ট্যাক্সো” অর্থ ব্যবস্থা এবং “নোমোস” অর্থ আইন। ট্যাক্সোনমি শব্দটি সুইস উদ্ভিদবিদ এ পি ডি ক্যান্ডোল (A P Candolle) তাঁর “থিওরি অ্যালিমেন্টারিয়া ডি লা বোটানিক” বইয়ে উল্লেখ করেছিলেন।
ট্যক্সোনমির সংজ্ঞা
জীববিজ্ঞানের যে শাখায় জীবের সনাক্তকরণ, নামকরণ এবং শ্রেণিবিন্যাস নিয়ে কাজ করা হয়, তাকে বিন্যাসবিধি বা ট্যাক্সোনমি বলে।
ট্যক্সোনমির বিভিন্ন পর্যায়
বিন্যাসবিধি বা ট্যাক্সোনমি পর্যায়গুলি হ’ল:
শনাক্তকরণ বা Identification
• ট্যাক্সোনমিক শনাক্তকরণ হ’ল কোনও জীবের পরিচয় বা প্রয়োজনীয় চরিত্রের চিহ্নিতকরণ করা।
• অজানা জীবের বৈশিষ্ট্যগুলির ভিত্তিতে এবং ইতিমধ্যে বিদ্যমান প্রজাতির সাথে তুলনা করে অজানা প্রজাতিগুলি শনাক্ত করা হয়। ট্যাক্সনোমিস্টরা প্রায়শই অনুরূপ প্রজাতির বৈশিষ্ট্যগুলির সংগঠিত লিখিত বিবরণ উপস্থাপন করেন যাতে অন্যান্য জীববিজ্ঞানীরা অজানা জীবগুলি শনাক্ত করতে পারে।
• এই সংগঠিত বিবরণগুলি ট্যাক্সোনমিকের প্রাথমিক পর্যায় হিসাবে উল্লেখ করা হয়।
• শনাক্তকরণ হ’ল বিন্যাসবিধির ব্যবহারিক দিক, একটি নির্দিষ্ট (জীব) কোন স্বীকৃত ট্যাক্সনের অন্তর্ভুক্ত তা নির্ধারণের পদ্ধতি।
নামকরণ বা Nomenclature
• নামকরণ বলতে বোঝায় জীবের কনভেনশন অনুযায়ী বৈজ্ঞানিক নাম দেওয়া।
• উদ্ভিদ বা প্রানীদের বৈজ্ঞানিক নাম এবং সাধারণ নাম প্রচলিত আছে।
• জীবের বিজ্ঞানসম্মত নামে সাধারণত দুটি পদ থাকে, প্রথমটি গণের নাম এবং পরেরটি প্রজাতির নাম। এই দুটি পদযুক্ত নামকে দ্বিপদ নামকরণ বা binomial nomenclature বলা হয়ে থাকে। এটি প্রথম কারোলাস লিনিয়াস কার্যকরভাবে তাঁর কাজ ‘স্পিসিস প্ল্যান্টারাম’-এ প্রকাশ করেন 1753 সালে। পরবর্তি কালে 1750 সালে ‘সিস্টেমা নাচুরা’-তে বিস্তারিতভাবে নিয়ামবলী প্রকাশ করেন।
একাদশ শ্রেণি থেকে → Physics | Chemistry | Biology | Computer
দ্বিপদ নামকরণের নিয়ম
i. জীবের নামগুলি শুধু মাত্র ল্যাটিন ভাষায় লিখতে হবে এবং ছাপানো হরফে এটি ইটালিক্সে অর্থাৎ বাঁকিয়ে লেখা হয়। নামটি হাতে লেখা হলে উভয় শব্দের তলায় আলাদাভাবে দাগ দেওয়া হয়।
ii. নামের প্রথম শব্দটি গণকে (Genus) নির্দেশ করে যেটা বড় হরফে লেখা হয়, দ্বিতীয় শব্দটি তার নির্দিষ্ট প্রজাতি (Species) বোঝায় যেটা ছোট হরফে লেখা হয়।
যেমন- বাঘের বিজ্ঞানসম্মত নাম Panthera Tigris। (প্যান্থেরা টাইগ্রিস) এখানে Panthera ( প্যন্থেরা) গণ আর tigris (টাইগ্রিস) প্রজাতি।
iii. বৈজ্ঞানিক নামের শেষে প্রয়োজন হলে যে বিজ্ঞানী নামকরণ করেছেন সেই বিজ্ঞানীর নাম লেখা হয়। যেমন- Pisum sativum Linn। এখানে মটরের বৈজ্ঞানিক নাম পিসাম সাটিভাম এর সঙ্গে বিজ্ঞানী লিনিয়াসের (Linn) নাম যোগ করা হয়েছে।
ত্রিপদ নামকরণ
কখনও কখনও একটি প্রজাতির মধ্যে উপ-প্রজাতিগুলি শনাক্ত করা আবশ্যক হয়ে ওঠে এবং সেক্ষেত্রে গণ এবং প্রজাতির মধ্যে উপ-প্রজাতির নামকেও অন্তর্ভূক্ত করা হয়। । একটি নামের জন্য তিনটি শব্দ ব্যবহার করার জন্য এই নামকরণটিকে ট্রাইনোমিয়াল সিস্টেম বলা হয়। এটি প্রথম ল্যামার্ক প্রবর্তন করেন, এটি তিনটি শব্দ নিয়ে গঠিত – গণ, প্রজাতি, উপ-প্রজাতি বা ভ্যারাইটি।
উদাহরণস্বরূপ- Corvus splendens Vieillot (ভারতীয় কাক), Brassica oleracea capitata L (কাল্টিভেটেড বাধাকপি)।
অগ্রাধিকার আইন
যদি কোন জীবের ইতিমধ্যে দুটি বা ততোধিক নাম ব্যবহার করা হয় তবে যে সঠিক নামটি আগে প্রকাশিত হয়েছিল, সেটা গ্রহণ করা হয়। একেই অগ্রাধিকার আইন বলে।
যেমন বিজ্ঞানী Yerrel (1936) একটি নিম্ন কর্ডাটা প্রাণীর নাম প্রস্তাব করেন Amphioxous lanceolatus এবং প্রচলিতও হয় পরবর্তী কালে জানা যায় বিজ্ঞানী Costa 1934 সালে এই একই প্রাণীর নামকরণ করেছিলেন Branchiostoura lanceolatum। তাই অগ্রাধিকার আইন অনুসারে ঐ প্রাণীটির বৈজ্ঞানিক নাম হবে Branchiostoura lanceolatum
কোন প্রজাতির নাম সংশোধন করা হলে, প্রথম বিজ্ঞানীর নাম ব্রাকেটে এবং দ্বিতীয় বিজ্ঞানীর নাম ব্রাকেটের পরে থাকবে। যেমন- Albizzia lebbeck (L) Benth।
শ্রেণিবিন্যাস বা Characterisation
• মিল এবং ভিন্নতা অনুসারে পরিচিত প্রজাতিগুলিকে বিভিন্ন গ্রুপ বা ট্যাক্সায় স্থাপন করা এবং সাজানো হয়, একে শ্রেনীবিন্যাস বলে।
• জীবগুলিকে তাদের মধ্যে সাদৃশ্য, ঘনিষ্ঠতা বা সম্পর্কের ভিত্তিতে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়।
• জীবগুলির মিল এবং নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য অনুসারে বিভিন্ন ট্যাক্সোনমিক বিভাগে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়।
শ্রেণিবদ্ধ ক্রমে বিভিন্ন ট্যাক্সোনমিক বিভাগগুলি হ’ল:
কিংডম বা রাজ্য
ফাইলাম বা বিভাগ
ক্লাস বা শ্রেণী
অর্ডার বা বর্গ
গোত্র বা ফ্যামিলি
জেনাস বা গণ
স্পিসিস বা প্রজাতি
একে লিনিয়ার হায়ারর্কি বলে।
একাদশ শ্রেণি থেকে → বাংলা | ইংরাজি
প্রামান্য দলিল সংরক্ষণ
কোন উদ্ভিদ বা প্রানী নমুনা সংগ্রহের পর শ্রেনী বিন্যাসের পরর্বতী সময়ের শ্রেনী বিন্যাস নামকরণ বা গবেষণার সুবিধার জন্য সংগ্রহশালায় বৈজ্ঞানিকভাবে সংরক্ষিত করার পদ্ধতিকে প্রামান্য দলিল সংরক্ষণ বলে।
পর্ব সমাপ্ত
এই লেখাটির সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। বিনা অনুমতিতে এই লেখা, অডিও, ভিডিও বা অন্যভাবে কোনো মাধ্যমে প্রকাশ করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
JumpMagazine.in এর নিয়মিত আপডেট পাওয়ার জন্য –
- ফলো করো – WhatsApp চ্যানেল
- সাবস্ক্রাইব করো – YouTube চ্যানেল
- লাইক করো – facebook পেজ
- সাবস্ক্রাইব করো – টেলিগ্রাম চ্যানেল
- Facebook Group – লেখা – পড়া – শোনা