তখন মাঝরাত।
শুধুমাত্র শখের বশে বেরিয়ে পড়েছে অর্ণব মাছ ধরার জেলে নৌকায়। বারানসীর দশাশ্বমেধ ঘাট থেকে নৌকা ছেড়ে দিল। তরতর করে এগিয়ে চলেছে নৌকা। হু হু করে বাতাস বইছে। বেশ খানিকটা যাওয়ার পর প্রবল ঝড় উঠল।
গঙ্গার ধারে এখনকার পাটনা শহর।
প্রাচীন নাম পাটলিপুত্র। নদীতীরে যে বটগাছটা রয়েছে সেও পাটলিপুত্র শহরের মতই প্রাচীন। কত রাজবংশের উত্থান – পতনের সাক্ষ্য সে – শুক আর সারী সে কথাই বলছিল। হঠাৎ শুকপাখি সারীকে বলে – ‘ আজ তোর জন্য একটা উপহার এনেছি। বোধগয়ার কাছে খোঁড়াখুঁড়ির সময় অনেক মোহর পাওয়া গেছে। তার থেকে একটা নিয়ে এসেছি। সারী তো আনন্দে ডগমগ, সে সেটা শুকের ঠোঁট থেকে কেড়ে নিতে গিয়ে পড়ল নিচে। সারী কাঁদতে লাগল – যাঃ’ – পড়ল গিয়ে এক্কেবারে লোকটার মাথায়।
অর্ণব আস্তে আস্তে চোখ খুলল।
চারদিক দেখছে। ঝড়, নৌকাডুবি ……… আর কিছুই মনে পড়ছে না। কী করে এখানে এল তাও জানে না। হঠাৎ দেখল হাতের কাছে একটা মোহর। উঠে বসেছে সে। ‘মোহর এল কিভাবে?’ – এসব ভাবছে আর ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখছে মোহরটাকে। সে ইতিহাসের ছাত্র। বুঝতে পারল এটা গুপ্তসম্রাটের মুদ্রা। কিন্তু শরীর এত ক্লান্ত যে সে এটা নিয়ে আর ভাবতে পারল না। সে ভাবছে কোথায় যাবে?
একটা ছোট ছেলে নদীর ধারে দৌড়াদৌড়ি করছিল। সে কাছে এসে জিগেস করল – ‘কে গো তুমি? আমার বন্ধু হবে? যুদ্ধ যুদ্ধ খেলতে পারো তুমি?’
অর্ণব নিছক মজার ছলে বলে, – ‘তো কোন্ রাজায় রাজায় যুদ্ধ?’
‘তুমি সমুদ্রগুপ্ত, আমি …… আমি কোশলের মহেন্দ্র …, না’, না, আমি বরং, কাঞ্চির বিষ্ণুগোপ …, জানো, আমাকে এ খেলা কে শিখিয়েছে?’ – উত্তরের পরোয়া না করে সে আরো বলে চলল ‘– আমার দাদু; দাদুকে শিখিয়েছে তার দাদু, তার দা…’ এটুকু শুনে অর্ণব তাকে থামিয়ে দিয়ে বললে, – ‘আচ্ছা, আচ্ছা; সমুদ্রগুপ্ত কে ছিল তুমি জানো?’
‘কী যে বলো? জানবো না? আমার দাদুর দাদু, তার দাদু, তার দাদু……… এভাবে গিয়ে ৩৩৫ খ্রিস্টাব্দ, কি ৩৫০ খ্রিস্টাব্দ, ঠিক মনে পড়ছে না, ঐ সময়ে মানে চতুর্থ শতকের মধ্যভাগেই ধরো, সেই সময় যে দাদুকে পাওয়া যাবে সেই দাদুই ছিল সমুদ্রগুপ্তের রাজপুরোহিত।’
তিনি ছক কষে বলেছিলেন, কত বছর যেন, বহুবছর পর সমুদ্রগুপ্ত আবার রাজধানীতে ফিরে আসবেন।’
অর্ণবের মাথাটাথা গুলিয়ে গেল।
সে ইতিহাসের ছাত্র। প্রাচীন ভারতের ইতিহাস নিয়েই সে ডক্টরেট করেছে। এখন তার পোস্টডক্টরেটের বিষয়বস্তু সমুদ্রগুপ্ত। এমন কথা সে জন্মে শোনেনি। যাক্ গে বাচ্চারা তো কত কী–ই বকে। পরক্ষনেই সে ভাবছে – কথাগুলো ঠিক আবোল তাবোল ভেবে উড়িয়ে দেওয়া যাবে কি?
এমন সময় এক বৃদ্ধ ‘হরিষেণ, হরি…’ বলে চিৎকার করতে করতে আসছে।
ছোট ছেলেটা দৌড়ে গিয়ে দাদুর হাত ধরে হিড়হিড় করে টানতে টানতে অর্ণবের কাছে নিয়ে এল – ‘এ দ্যাখো, আমার নতুন বন্ধু।’
বৃদ্ধের দিকে তাকিয়ে অর্ণব বলে – ‘সমুদ্রগুপ্তের সভাকবির নামও ছিল হরিষেণ; বিখ্যাত সংস্কৃত পণ্ডিত ছিলেন তিনি।’
কী একটা বলতে গিয়ে বৃদ্ধ চুপ করে গেল। অর্ণবের সৌম্যকান্তি, দীর্ঘকায়, পেশীবহুল চেহারা দূর থেকেই নজরে পড়ে বৃদ্ধের। বৃদ্ধ বলেন – ‘আমি এখানকার সবার মধুদা, মহাশয়ের নাম?’
‘অর্ণব বলেই ডাকবেন আমায়।’
‘বেশ, এখানে নতুন?’
ঝড়, নৌকাডুবি … এসব পুরো বৃত্তান্ত শুনে বৃদ্ধ বললেন, – ‘এসেই যখন পড়েছেন কদিন এ শহরটা ঘুরে দেখে নিন।’
অর্ণব জানায় – আমারো তেমন ইচ্ছে, বিশেষ করে পোস্টডক্টরেটের বিষয় আমার সমুদ্রগুপ্ত।
‘তবে তো আপনাকে বসুবন্ধুর বাড়ী যেতেই হবে’ – বৃদ্ধ মধুদা জানায়।
‘বসুবন্ধু? সে তো বৌদ্ধ পণ্ডিত। গুপ্ত সম্রাট সমুদ্রগুপ্তের খুব কাছের লোক’ – অর্ণবের বিস্ময়োক্তি।
‘ইনি, এ যুগের বসুবন্ধু। যত্ন করে সমুদ্রগুপ্তের প্রাপ্ত মুদ্রা, শিলালিপি নিজের সংগ্রহশালায় রেখেছেন।’
‘ভাবতে অবাক লাগে সমুদ্রগুপ্ত আপনাদের কাছে কত প্রাসঙ্গিক এখনো’ – অর্ণব খুব উত্তেজিত হয়ে পড়ল; বলল, ‘চলুন ওখানেই যাই।’
হাঁটতে হাঁটতে চলেছে তারা।
সংগ্রহশালার কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। এ জায়গাটা যেন প্রাচীন ভারতবর্ষ। আধুনিকতার ছোঁয়া লাগে নি। বসুবন্ধুর বাড়ী পৌঁছে আলাপের আদান – প্রদান হল, বসুবন্ধুর অনুরোধে অর্ণব তার আতিথেয়তা গ্রহণ করল। হরিষেণ আর তার দাদু মধুদা অর্ণবের কাছে বিদায় নিয়ে চলে গেল।
বসুবন্ধুর বাড়ীর দোতলায় সংগ্রহশালার পর লম্বা বারান্দা, তার শেষে একটা ঘর। সেই ঘরেই ব্যবস্থা হয়েছে অর্ণবের থাকার। কথা হয়েছে, কাল সকালে সংগ্রহশালা ঘুরিয়ে দেখাবে বসুবন্ধু।
রাত একটা।
গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন অর্ণব।
কে যেন ডাকছে তাকে। সে ঠিক বুঝতে পারছে না। সে তখন আধো ঘুমে, আধো জাগরণে। অর্ণব মোহাবিষ্টের মত পিছু পিছু চলেছে তার। কেন, কি, কোথায় – এসব কোন প্রশ্নই তার মাথায় খেলল না।
সংগ্রহশালার তালা খোলা ছিল। অবগুণ্ঠিতার পিছু পিছু সে ঢুকে গেল। এলাহাবাদ প্রশস্তি দেখে বিড়বিড় করে উঠল অর্ণব – ‘এ তো হরিষেণ রচনা করে। আরে সেই মুদ্রাটায় যে বীণা বাজানোর ছবি রয়েছে, সেই বীণাটাতো আমার। এইতো, এগুলো আমার লেখা কাব্যগ্রন্থ…।’
তখন অবগুণ্ঠিতা ফিসফিস করে বললে – ‘তাইতো, বিদ্বজ্জন সমাজ আপনাকে ‘কবিরাজ’ উপাধি দেন।’
পরের দিন সকালে প্রাতরাশের পর্ব মিটলে বসুবন্ধুর সঙ্গে সংগ্রহশালায় ঢুকল অর্ণব।
আজ সে ভীষণ গম্ভীর। তার সব কেমন গণ্ডগোল লাগছে। কে যেন তাকে কাল রাতে এখানে নিয়ে এসেছিল। কখন সে আবার ঘরে ফিরল, কে-ই বা সে ছিল, অর্ণবের কিছুই মনে পড়ছে না।
বসুবন্ধু একটা একটা করে মুদ্রা দেখাতে লাগল – ‘এই দেখুন এলাহাবাদ প্রশস্তি।’
অর্ণব বলে – ‘হুম্, হরিষেণ লেখে।’
বসুবন্ধু দেখাতে লাগল – ‘এই প্রশস্তিতে সমুদ্রগুপ্তকে দিগ্বিজয়ী বীর বলা হয়েছে। আর্যাবর্তের রুদ্রদেব, নাগদত্ত, মতিল, অচ্যুত, গণপতি, নাগসেনদের পরাজিত করে ……।’
এখানেই অর্ণব তাকে থামিয়ে দেয়।
নিজে বলতে আরম্ভ করে – ‘চন্দ্রবর্মণ, বলবর্মণের নাম বাদ দিলেন কেন? সমগ্র আর্যাবর্তেই তো নিজের রাজ্যভুক্ত করলেন। এরপর মধ্যভারতের আটবিক রাজ্য জয় করলেন। তারপর শুরু হল দাক্ষিণাত্য বিজয়।’
বসুবন্ধু ভাবছে – তবে কি মধুদার সন্দেহ ঠিক?
এরপর অর্ণবের দিকে তাকিয়ে বলে – ‘আপনার তো সবই মনে আছে।’
অর্ণব বলে – ‘এটাই স্বাভাবিক, আমার পোস্টডক্টরেটের বিষয় এটাই।’
আরো বলতে থাকে অর্ণব – ‘দাক্ষিণাত্যের রাজ্যের সম্পর্কে কিন্তু গুপ্তসম্রাট ভিন্ন নীতি নিলেন। দূরদর্শী সম্রাট বুঝেছিলেন মগধ থেকে দূরবর্তী দাক্ষিণাত্য শাসন করার অসুবিধা। তাই মহেন্দ্র, ব্যাঘ্ররাজ, বিষ্ণুগোপ, উগ্রসেন, ধনঞ্জয়দের পরাজিত করলেন প্রথমে। তারপর আনুগত্যের বিনিময়ে তাঁদের নিজের নিজের রাজ্য ফিরিয়ে দিলেন।’
বসুবন্ধু উত্তরের জানলার দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকতে থাকতে অর্ণবের কাছে জানতে চায় – ‘পশ্চিম ভারতের কথা কিছু মনে পড়ে?’
অর্ণব আশ্চর্যভাবে বসুবন্ধুর দিকে তাকিয়ে বলে – ‘আচ্ছা, আপনি কি শিক্ষক? আমাকে ছাত্র মনে হচ্ছে নাকি? মনে থাকবে না কেন? পশ্চিম ভারতের মালব, সৌরাষ্ট্র, তাছাড়া দক্ষিণ ভারতের প্রতিবেশী রাজ্য সিংহলও সমুদ্রগুপ্তের প্রাধান্য মেনে নেয়।’
বসুবন্ধু কোনো উত্তর দিতে পারে না।
মনের মধ্যে যেন প্রলয়কাণ্ড চলছে, অথছ বাইরে তা প্রকাশ করা যাবে না। অর্ণব বলে চলেছে – ‘সিংহলরাজ মেঘবর্ণ তো সমুদ্রগুপ্তের অনুমতি পেয়েই বোধগইয়ায় একটি মঠ তৈরি করেন।’
বসুবন্ধু বলে চলে – ‘সে সময় উত্তরে হিমালয় থেকে দক্ষিণে নর্দমা, পশ্চিমে যমুনা থেকে পূর্বে ব্রম্ভপুত্র পর্যন্ত গুপ্তসম্রাটের রাজত্ব বিস্তৃত ছিল। তাঁকে এখনকার ঐতিহাসিকরা ভারতের নেপোলিয়ন বলেন।’
‘দিগ্বিজয় শেষ করে তিনি অশ্বমেধ যজ্ঞ করেন, তাই তো বসুবন্ধুবাবু? সুবর্ণযুগ ছিল বলুন?’
বসুবন্ধুর চোখে যেন সামান্য আশার ঝিলিক। সে নতুন উদ্যমে শুরু করল – ‘পূর্বভারতের কথা আর এতদিন পড়ে মনে নেই না?’
অর্ণব একটু রেগে গেলেও মুখে কিছু না বলে শুরু করল – ‘ভালই মনে আছে। সমতট, কামরূপ, দাভক প্রভৃতি রাজ্যের রাজারা সম্রাটের প্রাধান্য স্বীকার করল। মদ্রক, আভির, প্রার্জুন, যৌধেয় … এসব উপজাতীয় দলও বশ্যতা স্বীকার করে।’
মুগ্ধ দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে বসুবন্ধু। বসুবন্ধু এবার ‘এলাহাবাদ প্রশস্তি’ –র হরফের ব্যাপারে জানতে চাইলে অর্ণব বলে, – ‘ওটা গুপ্তব্রাহ্মী লিপি।’
এরপর একটা মুদ্রা বার করে আনে বসুবন্ধু – ‘এটা দেখুন তো –’
মুদ্রাটা হাতে নিয়ে অর্ণব কেমন বেসামাল হয়ে যায় – ‘এটা তো কোন ইতিহাস বইতে পাইনি? তবে …, এটা আমার ভীষণ চেনা লাগছে।’
এরপরই অর্ণব ঘরে ফিরে আসে। তারপর নদীর ধারে পাওয়া মোহরটা পরখ করে। দুটোর ওপরই এক নারী মূর্তি। এই নারীই তো কাল রাতে এসেছিল। স্বপ্নে না বাস্তবে, সেসব আর কিছুই মনে করতে পারল না। কেমন যেন গোলমেলে ঠেকছে সব।
‘নাঃ আর নয়, সংগ্রহশালা দেখা হয়ে গেছে – বসুবন্ধুকে সন্ধ্যে নাগাদ ডেকে বললে – ‘কাল সকালেই আমি চলে যাবো।’
কোন অনুরোধেই কাজ হোল না দেখে বসুবন্ধু তাকে একটা শেষ অনুরধ করল – ‘কাল সকালে যাবার আগে আর একবার সংগ্রহশালায় নিয়ে যাব।’
দায়সারাভাবে ‘ঠিক আছে’ বলে ডিনার শেষ করে শুয়ে পড়ল।
আরো পড়ুন – ‘কল্প-গল্প’ স্বপ্ন না সত্যি।
রাত একটা। আবার কে যেন তাকে ডাকছে।
অবগুণ্ঠিতার পিছু পিছু চলেছে সে। বারান্দা পেরিয়ে সংগ্রহশালায় ঢুকে পড়েছে অর্ণব। অর্ণবের কাছে নদীর ধারে পাওয়া যে মোহরটা ছিল, অবিকল সেই মোহরটা বসুবন্ধু তাকে দেখিয়েছিল, সেটাই অবগুণ্ঠিতা অর্ণবের হাতে দিতেই অর্ণব আবার কেন বেসামাল হয়ে গেল।
একটা বীণা চোখে পড়ল তার। বীণাটা বাজাতে শুরু করল। বীনার সুরের মূর্ছনায় বসুবন্ধু গুটি গুটি এসে পৌঁছেছে। নিশুতি রাতে বহুদূর পর্যন্ত সে সুর হিল্লোল তুলেছে। এ সুর মধুদার চেনা। বংশপরম্পরায় এ সুরের সঙ্গে পরিচিত তারা। এমনকি হরিষেণকেও চেনানো হয়েছে এ সুর। মধুদা, বসুবন্ধু, হরিষেণ সবাই দূর থেকে দেখছে।
বীণা বাজানো থামলো বহুক্ষণ পর। অবগুণ্ঠিতা ফিসফিস করে বললে – ‘সম্রাট! আমাকে মনে পড়ে? আমি আপনার রাজমহিষী।’
দত্তা এসেছো…।
‘আমায় জয় করা সব স্থানেই চতুর্থ শতকের শেষভাগে আমার ইহকাল শেষ হবার পর দেখা হয়েছে। আটবিকে দেখা হয়েছে, দাক্ষিনাত্যে হয়েছে পূর্ব, পশ্চিম ভারতের প্রতিটা জায়গাতেই দেখা হল। কথা ছিল রাজধানীতে দেখা হবে সব শেষে।’
দত্তা আবেগতাড়িত হয়ে পড়ে – ‘এরপর?’
মধুদা বা বসুবন্ধু কেউ-ই এরপর কি হল, কিছু দেখতেও পায় নি, শুনতেও পায়নি। কারণ শুক পাখিটা সারীকে মোহরটা দেবে বলে চারদিক হন্যে হয়ে খুঁজতে খুঁজতে সংগ্রহশালায় ঢুকে এমন ঝটরপটর করতে লাগল, বলার নয়।
ভোর হচ্ছে। অর্ণব সংগ্রহশালার মেঝেতে অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে।
আরো পড়ুন – JUMP ম্যাগাজিনে প্রবন্ধ বিভাগ
সকাল ন’টা। অর্ণব এখন সুস্থ বোধ করছে।
উঠে বসেছে। মধুদা বলে, – ‘প্রথম দর্শনেই সম্রাটকে চিনতে পেরেছি। অর্ণব গুপ্ত আপনার নাম। অর্ণব মানে তো সমুদ্র। আমার পূর্বপুরুষ আপনার রাজপুরোহিত ছিল। পরাক্রমাঙ্ক, অপ্রতিরথ, কৃতান্তপুরুষকে আমাদের অভিবাদন। দুঃখের বিষয় অভিবাদনের সঙ্গে সঙ্গে বিদায় জানাতে হচ্ছে।’
অর্ণব ভাগ্যতাড়িত হয়েই এখানে এসেছে, কোন পরিকল্পনা করে নয়, এসব ভাবতে ভাবতে সে বাড়ীর দিকে রওনা দিল। বাড়ী ফিরতেই তার চিন্তান্বিত মা বললে – কোথায় ছিলি তিনদিন? ভেবে দেখলাম বিয়ে ছাড়া এ বাউন্ডুলে কে, বাঁধা যাবে না। তোর বিয়ে ঠিক করে ফেলেছি।
গত দু’দিনে অর্ণবের জীবনে অনেক ওলটপালট হয়েছে।
সে যেন এখনো ঘোরের মধ্যে রয়েছে। ‘বিয়ে’ শব্দটা তার মনে কি প্রতিক্রিয়া ঘটালো কে জানে; শব্দটা কানে গিয়ে বিঁধল যেন। নিজের অজান্তেই সে প্রশ্ন করল – ‘বিয়ে? কার সঙ্গে?’।
তার মা উত্তর দেয় – ‘দত্তা’।
(সমাপ্ত)
[গুপ্ত সম্রাট সমুদ্রগুপ্তের শাসনকালকে ভারতের স্বর্ণযুগরূপে চিহ্নিত করা হয়। আজ থেকে প্রায় দুইহাজার বছর আগে আমাদের ভারতবর্ষকে অসাধারণ শাসনব্যবস্থা দিয়েছিলেন। অথচ ইতিহাসবিমুখ অনেক মানুষের কাছে সমুদ্রগুপ্তের নামটা ছাড়া প্রায় সবটাই অজানা। তাই এই ইতিহাসকে মনোগ্রাহী করে তোলার উদ্দেশ্যে ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে কল্পনার আশ্রয় নিয়ে লেখা হয়েছে এই কল্প – গল্পটি। পাঠকরা গুপ্ত সম্রাট সমুদ্রগুপ্তের সম্পর্কে আরো জানতে এই পাতাটি অবশ্যই দেখুন।]
এই লেখাটির সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। বিনা অনুমতিতে এই লেখা, অডিও, ভিডিও বা অন্যভাবে কোনো মাধ্যমে প্রকাশ করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
JumpMagazine.in এর নিয়মিত আপডেট পাওয়ার জন্য –
- ফলো করো – WhatsApp চ্যানেল
- সাবস্ক্রাইব করো – YouTube চ্যানেল
- লাইক করো – facebook পেজ
- সাবস্ক্রাইব করো – টেলিগ্রাম চ্যানেল
- Facebook Group – লেখা – পড়া – শোনা
Good information,thanks