Dispersion-of-light
Madhyamik

আলোর বিচ্ছুরণ এবং বর্ণালী

ভৌতবিজ্ঞানদশম শ্রেনি – অধ্যায়: আলো (চতুর্থ পর্ব)


আগের পর্বগুলিতে আমরা লেন্সের ধারণা, ফোকাস এবং প্রতিবিম্ব নিয়ে আলোচনা করেছি। এই পর্বে আমরা আলোর বিচ্ছুরণ এবং বর্ণালী নিয়ে আলোচনা করবো।

আলোর বিচ্ছুরণ ( Dispersion of light)

সাদা আলো, প্রিজম বা ঐ জাতীয় কোন বস্তুর দ্বারা প্রতিসৃত হওয়ার পর সাতটি বিভিন্ন রঙের আলোয় বিশ্লিষ্ট হয়ে যাওয়ার ঘটনাকেই বিচ্ছুরণ বলা হয়। মূলত এই সাতটি বিভিন্ন রঙের আলো নিচের দিক থেকে একটি নির্দিষ্ট ক্রমে সজ্জিত থাকে।

Dispersion of light

বর্ণালী (Spectrum)

প্রিজম দ্বারা বিশ্লিষ্ট হওয়ার পর যে একাধিক (সাদা আলো বিশ্লিষ্ট হলে সাতটি) বর্ণের আলোর পটি গঠিত হয় তাকেই বর্ণালী বলে।

বর্ণালীর একেবারে নীচের বর্ণটি হল বেগুনী, এবং এর পর ক্রমান্বয়ে উপরের দিকে থাকে নীল, আকাশী নীল, সবুজ, হলুদ, কমলা ও লাল।

সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে বর্ণালী গঠনের ক্ষেত্রে সাদা আলো বিশ্লিষ্ট হলে যে আলোর চ্যুতি সর্বাধিক হয়ে থাকে সেটি হল বেগুনী এর পর ক্রমান্বয়ে আলোগুলির চ্যুতি কমতে থাকে এবং লাল আলোর চ্যুতি সর্বাপেক্ষা কম হয়।

শুদ্ধ বর্ণালী

যদি সাদা আলো বিশ্লিষ্ট হওয়ার পর সাতটি আলো ক্রমান্বয়ে সুস্পষ্ট ভাবে বোঝা যায় বা একটি রঙের আলোর উপর অপর কোন রঙের আলো উপরিপাতিত না হয় তবে সেই প্রকার বর্ণালীকে শুদ্ধ বর্ণালী বলা হয়ে থাকে।


দশম শ্রেণির অন্য বিভাগগুলিগণিত | জীবন বিজ্ঞান | ভৌতবিজ্ঞান

অশুদ্ধ বর্ণালী

এক্ষেত্রে বর্ণালী গঠিত হলেও প্রতিটি রঙের বর্ণকে আলাদা ভাবে চেনা যায় না কারণ একটি রঙের আলোর উপর অন্য রঙের আলো উপরিপাতিত হয়। এই প্রকার বর্ণালীকেই অশুদ্ধ বর্ণালী বলে। প্রাকৃতিক ভাবে সৃষ্ট বর্ণালী অর্থ্যাৎ রামধনু হল একপ্রকার অশুদ্ধ বর্ণালী।

rainbow

 

কারণ, বাতাসে উপস্থিত জলীয় বাষ্প এবং ধূলিকণার দ্বারা সূর্যের সাদা আলো বিশ্লিষ্ট হলেও সাতটি বিভিন্ন রঙের আলোকে উপরিপাতনের জন্য আলাদাভাবে বোঝা যায় না।


দশম শ্রেণির অন্য বিভাগগুলি – বাংলা | English | ইতিহাস | ভূগোল

শুদ্ধ ও অশুদ্ধ বর্ণালীর পার্থক্য

শুদ্ধ বর্ণালী অশুদ্ধ বর্ণালী
১) এক্ষেত্রে সাদা আলো বিশ্লিষ্ট হওয়ার পর প্রত্যেকটি রঙের রশ্মিকে আলাদা ভাবে বোঝা যায়। ১) এক্ষেত্রে সাদা আলোর বিশ্লেষনে বর্ণালী সৃষ্টি হলেও প্রতিটি রঙকে আলাদা ভাবে বোঝা যায় না।
২) এক্ষেত্রে একটি বর্ণের আলো অপর বর্ণের উপর পতিত হয় না। ২) এক্ষেত্রে একটি বর্ণের আলোর উপর অপর একটি বর্ণের আলো পতিত হয়।
৩) সাধারণ ভাবে উত্তল লেন্স ও প্রিজমের সমন্বিত ব্যবহার দ্বারা শুদ্ধ বর্ণালী গঠন সম্ভব। ৩) বাতাসে উপস্থিত জলীয় বাষ্প এবং ধূলিকণার দ্বারা সূর্যের আলো বিশ্লিষ্ট হওয়ার ফলে (রামধণু) গঠিত হয় অশুদ্ধ বর্ণালী।

সমাপ্ত।


এই লেখাটির সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। বিনা অনুমতিতে এই লেখা, অডিও, ভিডিও বা অন্য ভাবে কোন মাধ্যমে প্রকাশ করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


এই লেখাটি থেকে উপকৃত হলে সবার সাথে শেয়ার করার অনুরোধ রইল।



JumpMagazine.in এর নিয়মিত আপডেট পাবার জন্য –
Dr. Mrinal Seal
ডঃ মৃণাল শীল সাঁতরাগাছি উচ্চ বিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যার একজন জনপ্রিয় শিক্ষক। পড়াশোনার পাশাপাশি ঘুরে বেড়াতে ও নানান ধরণের নতুন নতুন খাবার খেতেও পছন্দ করেন ডঃ শীল।