Class-11

প্রাইমারি মেমোরির শ্রেণিবিভাগ

কম্পিউটারএকাদশ শ্রেনি – কম্পিউটারের মেমোরি (প্রথম পর্ব)


আমরা জানি যে কম্পিউটার বিপুল পরিমাণ তথ্য সংরক্ষণ করতে পারে।

কম্পিউটার সিস্টেমের যে অংশে এই তথ্য সংরক্ষিত হয় তাকে মেমোরি ইউনিট (Memory unit) বা স্টোরেজ ডিভাইস (Storage device) বলা হয়।

আমরা জানি যে বিজ্ঞানী চার্লস ব্যারেজের তৈরি করা অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিনের মাধ্যমে আধুনিক কম্পিউটারের যাত্রার সূত্রপাত হয়।

চার্লস ব্যারেজকে Father of Computer বা কম্পিউটারের জনক বলা হয়।

এই কম্পিউটারে ইনপুট ও আউটপুটের জন্য পাঞ্চ কার্ড (Punch card) ব্যবহার করা হত। এই পাঞ্চ কার্ড হল বিশ্বের প্রথম যান্ত্রিক সংরক্ষণ পদ্ধতি (Mechanical storage method) যা প্রায় 80 টি অক্ষর ধারণ করতে পারে।
কম্পিউটারের বিবর্তনের সাথে সাথে তার তথ্য সংরক্ষণ ব্যবস্থারও উন্নতি হয়েছে। বর্তমান যুগের কম্পিউটারের মেমোরিকে নিম্নলিখিত ভাগে ভাগ করা যায়:

 

এই পর্বে আমরা শুধুমাত্র প্রাইমারি মেমোরি নিয়ে আলোচনা করবো।

প্রাইমারি মেমোরি (Primary memory)

CPU এর সাথে যুক্ত যে অস্থায়ী মেমোরিতে ইনপুট ডিভাইস থেকে আসা তথ্য ও নির্দেশ প্রথমে জমা হয় তাকে প্রাইমারি মেমোরি বা প্রাইমারি স্টোরেজ (Primary storage) বা মেন মেমোরি (Main memory) বলা হয়।

এই মেমোরিতে কোন তথ্য স্থায়ীভাবে সঞ্চিত হয় না। কম্পিউটার প্রসেসর বিভিন্ন কার্যের সময় এখানে অস্থায়ী ভাবে তথ্য সঞ্চয় করতে পারে।

প্রাইমারি মেমোরির প্রকারভেদ

একে দুই ভাগে ভাগ করা যায়— RAM, ROM.

RAM

RAM এর full form হল Random Access Memory।

এটি একটি অস্থায়ী মেমোরি। ইনপুট ডিভাইস থেকে আগত তথ্য ও প্রসেসরের কাজের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য এখানে সাময়িকভাবে জমা হয়। যতক্ষণ নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ প্রবাহ কম্পিউটারে চালু থাকে, RAM ততক্ষণ এই তথ্য ধারণ করতে পারে। কিন্তু বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হলেই RAM এ সঞ্চিত সকল তথ্য মুছে যায়। এই কারণে RAM কে ভোলাটাইল (Volatile) বা উদ্বায়ী মেমোরি বলে।

RAM [Image by An-d, licensed under CC BY-SA 3.0]

RAM এর বৈশিষ্ট্য

a) এটি ভোলাটাইল বা অস্থায়ী মেমোরি।
b) কম্পিউটারের প্রয়োজন মত RAM এ তথ্য সঞ্চয়, মডিফাই ও ডিলিট হয়।
c) ইনপুট বা আউটপুটের সময় সাময়িকভাবে RAM এ তথ্য সঞ্চিত হয়।


একাদশ শ্রেণি থেকে → বাংলা | ইংরাজি

RAM এর প্রকারভেদ

SRAM (Static RAM), DRAM (Dynamic RAM)

i) SRAM- SRAM বা Static RAM ট্রানজিস্টার প্রযুক্তিতে তৈরি হয়। ট্রানজিস্টার প্রযুক্তি ব্যবহার হবার কারণে এই RAM অপেক্ষাকৃত দ্রুত কাজ করে এবং এর দাম DRAM অপেক্ষা বেশী। DRAM এর মত একে Refresh করার দরকার হয় না। যতক্ষণ বিদ্যুৎ সংযোগ অবিচ্ছিন থাকে, SRAM তথ্য ধারণ করতে পারে। SRAM তৈরিতে ফ্লিপ–ফ্লপ (Flip–Flop) সার্কিট ব্যবহার করে হয়।

SRAM

SRAM এর ব্যবহার

LCD screen, প্রিন্টার, ক্যাশ মেমোরি প্রভৃতিতে Static RAM ব্যবহার হয়ে থাকে।


একাদশ শ্রেণি থেকে → Physics | Chemistry | Biology | Computer

ii) DRAM- DRAM বা Dynamic RAM তৈরি করা হয় ক্যাপমিটার প্রযুক্তি ব্যবহার করে। এটি SRAM এর তুলনায় অনেক বেশী তথ্য ধারণ করতে সক্ষম। কিন্তু এটি SRAM এর চেয়ে ধীর গতিতে কাজ করে এবং এর দামও Static RAM এর তুলনায় কম। এতে বিদ্যুৎ শক্তির খরচও কম হয়। দামে সস্তা এবং তথ্য ধারণ ক্ষমতা বেশী হওয়ার কারণে বেশীর ভাগ কম্পিউটারে এই RAM ব্যবহার করা হয়। এই DRAM মাঝে মাঝে Refresh করতে হয়।

ROM

ROM এর full form হল Read Only Memory।

এটি একটি স্থায়ী মেমোরি। ROM সঞ্চিত তথ্য স্থায়ীভাবে সঞ্চয় করে, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হলেও এই তথ্য মুছে যায় না। এই কারণে ROM অনুদ্বায়ী বা Non–volatile মেমোরি বলে পরিচিত। এটি Read Only Memory। অর্থাৎ এখানে সঞ্চিত তথ্য কম্পিউটারে পড়তে পারে কিন্তু এখানে নতুন করে কোন তথ্য লেখা যায় না। কম্পিউটারের পক্ষে অত্যন্ত প্রয়োজন এমন কিছু তথ্য ROM এ সঞ্চিত থাকে।

ROM এর মধ্যে Booting, POST (Power on Self Test), BIOS (Basic Input Output System) প্রভৃতি তথ্য সঞ্চিত থাকে।

ROM এর বৈশিষ্ট্য

a) ROM হল Non–volatile অনুদ্বায়ী মেমোরি।
b) ROM এ সঞ্চিত তথ্য পড়া যায়, কিন্তু এখানে তথ্য নতুন ভাবে লেখা যায় না।
c) Booting, BIOS প্রভৃতি সম্পর্কিত তথ্য ROM এ সঞ্চিত থাকে।
d) ROM এর কাজের গতি RAM অপেক্ষা কম।

EPROM [Image by yellowcloud, source, licensed under CC BY 2.0]

ROM এর প্রকারভেদ

এটি চার প্রকার হয়—
i) PROM (Programmable Read Only Memory)
ii) EPROM (Erasable Programmable Read Only Memory)
iii) EEPROM (Electrically Erasable Programmable Read Only Memory)
iv) UVPROM (Ultra Violate Programmable Read Only Memory)

প্রথম পর্ব সমাপ্ত। পরবর্তী পর্ব → সেকেন্ডারি মেমোরির শ্রেণিবিভাগ


এই লেখাটির সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। বিনা অনুমতিতে এই লেখা, অডিও, ভিডিও বা অন্য ভাবে কোন মাধ্যমে প্রকাশ করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


লেখিকা পরিচিতি

বিজ্ঞান স্নাতক এবং কম্পিউটার বিজ্ঞানে উচ্চ শিক্ষিতা নন্দিতা বসুর পেশা শিক্ষকতা। তিনি বই পড়তে বড় ভালোবাসেন। কাজের ফাঁকে, অবসরে, বাসে ট্রামে তো বটেই, শোনা যায় তিনি নাকি ঘুমিয়ে ঘুমিয়েও বই পড়তে পারেন।

এই লেখাটি থেকে উপকৃত হলে সবার সাথে শেয়ার করার অনুরোধ রইল।



এছাড়া,পড়াশোনা সংক্রান্ত যেকোনো বিষয়ের আলোচনায় সরাসরি অংশগ্রহন করতে যুক্ত হতে পারেন ‘লেখা-পড়া-শোনা’ ফেসবুক গ্রূপে। এই গ্রুপে যুক্ত হতে ক্লিক করুন এখানে।