bapan-drobon-diffusion
WB-Class-9

ব্যাপন (Diffusion)

ভৌতবিজ্ঞাননবম শ্রেনি – অধ্যায়: দ্রবণ (পঞ্চম পর্ব)


আগের চারটি পর্বে আমরা দ্রবণ অধ্যায় থেকে দ্রাব, দ্রাব্য, দ্রাবক ইত্যাদি নানান বিষয়ের ধারণা নিয়ে আলোচনা করেছি। এই পর্বে ব্যাপন অর্থাৎ Diffusion নিয়ে আলোচনা করবো।

কোনো দ্রাবকে, কোনো দ্রাবের দ্রব্যের অণু যোগ করলে সেটি দ্রাবকের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। এর কারণ দ্রবণে দ্রাবের ঘনত্ব পরিমাণের অসাম্য। দ্রবণের কোনো অংশে দ্রাব কম দ্রবীভূত হলে সেটি লঘু এবং বেশি দ্রবীভূত হলে গাঢ় দ্রবনে পরিণত হয়।


সেক্ষেত্রে লঘু অংশে দ্রাবের চাপ কম ও গাঢ় অংশে চাপ বেশি থাকে। তখন যে পদ্ধতিতে সেই গাঢ়তর অংশ থেকে দ্রাবের অণু লঘুতর অংশে ছড়িয়ে পড়ে সেই পদ্ধতিকে ব্যাপন বলে।

Diffusion
ব্যাপন প্রক্রিয়া [সৌজন্যে – wikipedia.org]
এক গ্লাস জলে এক ফোঁটা কালি ফেললে, জলের উপরিতলে যেখানে কালি যোগ করা হয়েছে, সেখানে কালির গাঢ়ত্ব বেশি থাকে। অপরদিকে বাকি অংশে কালিহীন, তাই কালির কণা দ্বারা চাপ শূন্য। তাই বেশি চাপযুক্ত উপরিতল থেকে কালি কম চাপযুক্ত অংশে ছড়িয়ে পড়ে এবং গোটা দ্রবণটিই কালির বর্ণ ধারণ করে।

জল ভিন্ন অন্য দ্রাবক- ধ্রুবীয় ও অধ্রুবীয়

জল ছাড়াও আরো অনেক দ্রাবক আমরা ব্যবহার করি। যেমন, লাইকার অ্যামোনিয়া, ইথানল, অ্যাসিটোন, অ্যাসিটিক অ্যাসিড,  টলুইন, পেট্রল বেঞ্জিন ইত্যাদি। এদের আমরা দুই প্রকারে ভাগ করতে পারি।

ধ্রুবীয় দ্রাবক: লাইকার অ্যামোনিয়া, ইথানল, অ্যাসিটোন, অ্যাসিটিক অ্যাসিড এরা জলের মতোই ধ্রুবীয় হয়, কিন্তু এদের দ্রাব্যতার প্রকৃতি আলাদা। লাইকার অ্যামোনিয়ার ধ্রুবীয়তা জলের থেকে কম, কিন্তু উদ্বায়ী বলে সহজে পৃথকীকরণ সম্ভব।  ইথানল, অ্যাসিটোন, অ্যাসিটিক অ্যাসিড হল জৈব যৌগ। তার ফলে  জৈবযৌগসমূহ এগুলিতে দ্রবীভূত হয়। ধ্রুবীয় জৈবযৌগের দ্রাব্যতাও জলের তুলনায় এই দ্রাবকগুলিতেই বেশি দেখা যায়।


নবম শ্রেণির অন্য বিভাগগুলিগণিত | জীবন বিজ্ঞান | ভৌতবিজ্ঞান

অধ্রুবীয় দ্রাবক: অপরদিকে টলুইন, পেট্রল, বেঞ্জিন ইত্যাদি দ্রাবক অধ্রুবীয় যৌগকে দ্রবীভূত করতে সাহায্য করে। কারণ এই যৌগগুলিতে ধ্রুবীয়তা বর্তমান নয়। আর সমধর্মী পদার্থ সমধর্মী দ্রাবকে দ্রবীভূত হয়। তাই এরা জৈব যৌগকে দ্রবীভূত করতে সক্ষম। ওষুধ, প্রসাধনী, রং, বার্নিশ প্রভৃতি দ্রবীভূত করতে জৈব দ্রাবকের প্রয়োজন হয়।


নবম শ্রেণির অন্য বিভাগগুলি – বাংলা | English | ইতিহাস | ভূগোল

কিন্তু এরা শুধুমাত্র জৈব দ্রাবক নয়, উদ্বায়ীও। তার ফলে এরা বায়ুতে মিশে গিয়ে আমাদের শ্বাসযন্ত্রে প্রবেশ করে আমাদের ফুসফুস, স্নায়ু ও রক্তের ক্ষতি করে। তাই এগুলির ব্যবহারে আমাদের সতর্কতা অবলম্বন করা উচিৎ।

এই লেখাটি থেকে উপকৃত হলে সবার সাথে শেয়ার করার অনুরোধ রইল।



JumpMagazine.in এর নিয়মিত আপডেট পাবার জন্য –