পদার্থবিদ্যা – একাদশ শ্রেণি – অধ্যায়: ভৌতজগত ও পরিমাপ (দ্বিতীয় পর্ব)
এই অধ্যায়ের প্রথম পর্বে আমরা ত্রুটির বিভিন্ন প্রকার নিয়ে আলোচনা করেছি। এই পর্বে ত্রুটির মান নির্ণয় পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করবো।
ত্রুটির (Error) মান কিভাবে নির্ণয় করা যাবে?
কোনো ভৌতরাশির চূড়ান্ত মান হিসেবে তার সঠিক মান লেখাটাই যথেষ্ট নয়। সঠিক মানের মধ্যে কতটা ত্রুটি থাকতে পারে তাও উল্লেখ করা প্রয়োজনীয়।
অতএব, কোনো ভৌতরাশির চূড়ান্ত মান, । যেখানে ɛ ত্রুটির পরিমাপ নির্দেশ করে।
তাই ɛ ত্রুটির মান বিভিন্নভাবে নির্ণয় করা যেতে পারে, যেমন – পরম ত্রুটি, আনুপাতিক ত্রুটি, শতকরা ত্রুটি, আদর্শ চ্যুতি ইত্যাদি।
পরম ত্রুটি কাকে বলে?
প্রত্যেক পরিমাপের প্রাপ্ত মান থেকে সঠিক মানের অন্তর কে, পরম ত্রুটি বলা হয়।
গণিতের ভাষায়,
, এগুলি হল যথাক্রমে প্রথম, দ্বিতীয় তম পরিমাপের পরম ত্রুটি (Absolute error)।
উল্লেখ্য যে, ,
প্রত্যেক পরিমাপের পরম ত্রুটিকে নিয়ে গড় মান নির্ণয় করলে গড় পরম ত্রুটি (Average absolute Error) পাওয়া যায়।
আমরা যদি যে কোনো একবার পরিমাপ করি, তাহলে আমরা যে মান (ধরলাম ) পাব সেটা সর্বদাই এর মধ্যে থাকবে।
একাদশ শ্রেণি থেকে Physics | Chemistry | Biology | Computer
আপেক্ষিক ত্রুটি কাকে বলে?
পরম ত্রুটি ছাড়াও আমরা প্রায়ই আনুপাতিক বা আপেক্ষিক ত্রুটি আলোচনা করে থাকি।
আপেক্ষিক ত্রুটি হল গড় পরম ত্রুটি ও সঠিক মানের অনুপাত
অর্থাৎ এক্ষেত্রে ।
শতকরা ত্রুটি কাকে বলে?
আপেক্ষিক ত্রুটিকে শতকরাতে প্রকাশ করলে অর্থাৎ আপেক্ষিক ত্রুটিকে 100 দিয়ে গুণ করে শতকরা ত্রুটি নির্ণয় করা হয়।
শতকরা ত্রুটি
আদর্শ চ্যুতি (Standard deviation)
ত্রুটি মাপার অপর একটি উল্লেখযোগ্য পদ্ধতি হল এই আদর্শ চ্যুতি।
সংজ্ঞানুসারে আদর্শ চ্যুতি
আমরা ব্যবহারিক পদার্থ দিয়ে কে সঠিক মান হিসেবে ধরি, যেখানে চ্যুতি র কাছাকাছি। এটা দেখানো যায় যে, কোনো পরীক্ষার মান, র মধ্যে থাকে, আবার মান, র মধ্যে থাকে। এই সম্পর্কে এখনই বিস্তারিত আলোচনা করছি না। তবে, এটা সবক্ষেত্রেই মনে রাখতে হবে যে আমাদের পরীক্ষার সংখ্যা অর্থাৎ n বার পরিমাপের সংখ্যা যত বাড়বে আমরা তত ভালো সঠিক মান পেতে পারব। যদি n > 8 হয়, তবে আমরা মোটামুটি ভালো উত্তর পেতে পারি।
একাদশ শ্রেণি থেকে → বাংলা | ইংরাজি
ত্রুটির সহযোগ (Contribution of error)
ধরি, আমরা কোনো বস্তুর ঘনত্ব মাপতে চাই, সেক্ষেত্রে বস্তুর ভর ও আয়তন এই দুটি পরিমাপযোগ্য রাশির মাপের প্রয়োজন। পরীক্ষার দ্বারা প্রাপ্ত এই দুটি মানের ত্রুটিও থাকবে, সুতরাং ঘনত্বের মধ্যেও একটা ত্রুটি থাকবে, এই ত্রুটির পরিমাপ কী ভাবে হবে সেই নিয়েই এবার আলোচনা করব।
ত্রুটির পরিমাপ পদ্ধতিগুলির ব্যাখ্যা।
ত্রুটির যোগ বা বিয়োগ
যদি দুটি রাশি A, B র মান , হয়,
যেখানে হল গড় পরম ত্রুটি ও রাশির।
∴ ক্ষেত্রে এর ত্রুটি
সুতরাং সর্বোচ্চ ত্রুটি
সেরকম বিয়োগের ক্ষেত্রেও দেখানো যায়
সুতরাং দুটি ভৌতরাশির যোগ বা বিয়োগের ক্ষেত্রে, প্রাপ্ত উত্তরের গড় পরম ত্রুটির সর্বোচ্চ মান, প্রত্যেক রাশির পরম ত্রুটির যোগফলের সাথে সমান।
ত্রুটির গুণ বা ভাগ
ধরি, , ও র পরীক্ষার প্রাপ্তমান যথাক্রমে
খুব ছোটো তাই শেষের পদটি শূন্য ধরা হয়।
সুতরাং সর্বোচ্চ আপেক্ষিক ত্রুটি
এই সূত্রটি দুটি রাশির অপর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
সূত্রঃ
যখন দুটি ভৌতরাশির গুণ বা ভাগ করা হয়, প্রাপ্ত উত্তরের সর্বোচ্চ আপেক্ষিক ত্রুটি, রাশিটির প্রত্যেকটির আপেক্ষিক ত্রুটির যোগফলের সমান।
বিশেষ দ্রষ্টব্য
যদি বা হয় সেক্ষেত্রে র আপেক্ষিক ত্রুটি
সেরকম র আপেক্ষিক ত্রুটি
যদি, হয়
সেক্ষেত্রে
পর্ব সমাপ্ত।
এই লেখাটির সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। বিনা অনুমতিতে এই লেখা, অডিও, ভিডিও বা অন্য ভাবে কোন মাধ্যমে প্রকাশ করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
লেখিকা পরিচিতিঃ
প্রেসিডেন্সী বিশ্ববিদ্যালয় এবং IIT খড়গপুরের পদার্থবিদ্যা বিভাগের প্রাক্তনী স্বধীতি মাঝি। পদার্থবিদ্যা চর্চার পাশাপাশি ছবি আঁকা, গান গাওয়া এবং বই পড়ায় সমান উৎসাহী স্বধীতি।
এই লেখাটি থেকে উপকৃত হলে সবার সাথে শেয়ার করার অনুরোধ রইল।
JumpMagazine.in এর নিয়মিত আপডেট পাওয়ার জন্য –
-
- ফলো করো – WhatsApp চ্যানেল
- সাবস্ক্রাইব করো – YouTube চ্যানেল
- লাইক করো – facebook পেজ
- সাবস্ক্রাইব করো – টেলিগ্রাম চ্যানেল
- Facebook Group – লেখা – পড়া – শোনা