“নেড়া একবারই বেল তলায় যায়”
কেন নেড়া একবারই বেল তলায় যায় বলতে পারেন?
কারণ নেড়ার মাথায় বিশাল টাক, কোন একদিন বেলতলা দিয়ে যাবার সময় তার মাথায় বেল পড়ে আর তার মাথা ফাটে। আর এই ভয়ংকর অভিজ্ঞতার ফলে সে বেলতলা দিয়ে যাওয়া বন্ধ করে দেয়।
[আরো পড়ুন – পড়াশোনা করতে ভালো লাগে না কেন?]
নেড়া কি ভীষণ বুদ্ধিমান?
না, এটা তো একটা ‘নেড়ার’ একটা সাধারণ জ্ঞান মাত্র। আমরা একবার কোন ভুল করলে সেখান থেকে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করি আর দ্বিতীয়বার আর সেই ভুল না করার চেষ্টা করি। এইভাবেই ভুল ও ঠিক করতে করতে যেকোনো কাজে আমরা সাফল্য লাভ করি।
[আরো পড়ুন – বই পড়ার অভ্যাস কিভাবে পড়াশোনায় উন্নতিতে সাহায্য করে]
কিন্তু পরীক্ষার সময় অধিকাংশ ছাত্রছাত্রী এই সাধারণ বুদ্ধি কাজে লাগায় না কেন?
বোঝা গেল না? একটা উদাহরণ দেখা যাক – ধরুন রুমি নামে একটি দশম শ্রেণির ছাত্রী পরীক্ষার খাতা দেখতে বিদ্যালয়ে গেছে। সেদিন তার ইংরাজি খাতা দেখানো হচ্ছে। পরীক্ষা দেবার সময় সে ভেবেছিল ৫০ এর মধ্যে অন্তত ৪৫ পাবেই। কিন্তু আসলে নম্বর সে পেয়েছে মাত্র ৩০। এমনিতেই রুমির মন-মেজাজ খারাপ। তাই সে ইংরাজি খাতাটা নিয়ে কি করবে ভেবে পায় না। দুবার নম্বর যোগ করে, যদি কিছু নম্বর বাদ চলে গিয়ে থাকে এই আশায়। নম্বর যোগে কোন ভুল না থাকার ফলে, বিষণ্ণ রুমি করুণ মুখ করে খাতা বন্ধ করে ভাবতে থাকে আজ বাড়িতে আরো অনেক দুঃখ অপেক্ষা করে আছে।
[আরো পড়ুন – সাজেশনবাদ নাকি সাজেশন – বাদ!]
আচ্ছা, ইংরাজি খাতা দেখে রুমির কোন লাভ হল কি?
উত্তর হল না। কারণ রুমি তার ভুল গুলো থেকে কোন অভিজ্ঞতা লাভ করল না। রুমি যদি আরো একটু খুঁটিয়ে দেখতো তা হলেই তার চোখে আরো কিছু ভুল ধরা পড়ত। যেমন –
পরীক্ষায় প্রাধানত seen ও writing-এ সে সবচেয়ে বেশি নম্বর খুইয়েছে। Seen অংশে জানা প্রশ্নগুলিতেও নম্বর না পাবার কারণ sentence construction-এ ভুল থাকা। এই একই কারণে সে writing section এও নম্বর পায় নি। অথচ গ্রামারে প্রায় সে পুরো নম্বর পেয়েছে। আর unseen -ও তার খুব একটা খারাপ হয় নি। অর্থাৎ এই পরীক্ষা থেকে বোঝা যাচ্ছে রুমিকে আরো বেশি লেখা অভ্যাস করতে হবে, যাতে লেখায় ভুল কমানো যায়। এতেই সে সহজে আরো নম্বর তুলতে পারবে।
দুঃখের বিষয় অধিকাংশ ছাত্রছাত্রীরাই পরীক্ষার খাতা হাতে পাবার পরে, রুমির মতো শুধু নম্বর যোগ করেই বাড়ি চলে আসে। তার ভুল গুলি থেকে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে ঠিক করার কথা মোটেও ভাবে না। বর্তমানে রাজ্য জুড়ে চলছে ‘প্রথম পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন’। আমরা আশা করবো পরীক্ষার পরে খাতাগুলি হাতে পাবার সময় ছাত্রছাত্রীরা মোটেও আর ‘নেড়ার’ মত বেলতলায় দ্বিতীয়বার বেলতলা মুখো হবে না।
এই লেখাটির সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। বিনা অনুমতিতে এই লেখা, অডিও, ভিডিও বা অন্যভাবে কোনো মাধ্যমে প্রকাশ করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই লেখাটি থেকে উপকৃত হলে সবার সাথে শেয়ার করার অনুরোধ রইল।
JumpMagazine.in এর নিয়মিত আপডেট পাওয়ার জন্য –
- ফলো করো – WhatsApp চ্যানেল
- সাবস্ক্রাইব করো – YouTube চ্যানেল
- লাইক করো – facebook পেজ
- সাবস্ক্রাইব করো – টেলিগ্রাম চ্যানেল
- Facebook Group – লেখা – পড়া – শোনা