স্কুলের অঙ্ক ক্লাসের পরে পম্পা লক্ষ্য করলো যে তার প্রিয় বান্ধবী অপর্ণা গালে হাত দিয়ে মুখ ঝুলিয়ে বসে আছে।
একটু অবাকই হল পম্পা। ব্যাপার কি? ক্লাসে তো মন খারাপ করার মতো কিছু হয়নি তেমন। তাহলে হলটা কি?
পম্পা অপর্ণাকে জিজ্ঞেস করে – কিরে কি হলো?
ব্যাজার মুখো অপর্ণা জবাব দেয় – জানিস আমদের বাড়িতে রোজ সকালে মাছ দিতে আসে বলরামকাকু কোনদিন স্কুলেই যায়নি। সে কি সুন্দর লাভ – ক্ষতি – শতকরার হিসাব করে। আর আমি এত পড়েও কিছুতেই লাভ – ক্ষতি বুঝতেই পারছি না। আমার দ্বারা আর পড়াশোনা হল না।
পম্পা, অপর্ণার বলার ধরণ দেখে হেসে ফেলে। তবে ব্যপারটা নেহাত মন্দ বলেনি অপর্ণা। শুধু লাভ-ক্ষতি কেন, নবম শ্রেণিতে ওঠা ইস্তক অঙ্ক নিয়ে সেও যেন হাবুডুবু খাচ্ছে। প্রতিটা অধ্যায় শেষ হচ্ছে আর মাথাও যেন একটু একটু করে খারাপ হচ্ছে।
[আরো পড়ুন – কিভাবে মনোযোগ বাড়ানো যাবে?]
পম্পা, অপর্ণা বা ওর বয়সী ছাত্রছাত্রীরা কি পারবে গণিতের বোঝা হালকা করে সাফল্যের দিকে এগিয়ে যেতে?
সদ্য প্রকাশিত হয়েছে মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল। তার সাথেই প্রকাশিত হয়েছে একটি চমকপ্রদ তথ্য। তা হল ভালো ফলের নিরিখে বিজ্ঞান, গণিতে ও ইতিহাসে আগের বছরের তুলনায় পিছিয়ে পড়ছে ছাত্রছাত্রীরা।
আপাত দৃষ্টিতে পাঠকের মনে হতেই পারে, এতো প্রতি বছরই হয়; কোন বিষয় এগিয়ে যাবে, কোন বিষয় পিছিয়ে যাবে। এটাই তো রীতিনীতি। আর একটু তলিয়ে দেখলে, আরো একটি ব্যাপার উঠে আসবে।
বিজ্ঞান ও অঙ্ক দুটি এমন বিষয় যেখানে সাফল্য লাভ করার জন্য প্রয়োজন ধারাবাহিকতা।
যেমন, অপর্ণা এবং পম্পা দুজনের সঙ্গে কথা না বলেই বোঝা যায় যে সপ্তম এবং অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় ওরা ভগ্নাংশ, শতকরা এবং অনুপাত ভালো ভাবে বুঝে অভ্যাস করেনি। তার ফলেই, এখন নবম শ্রেণিতে লাভ-ক্ষতির অঙ্কে কূলকিনারা পাচ্ছে না।
কিভাবে এই সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যেতে পারে?
প্রথমত – ছাত্রছাত্রীদের সপ্তম শ্রেণি থেকে সব বিষয়গুলি মনযোগের সাথে অভ্যাস করা উচিৎ। কারণ একটি ক্লাসের পাঠ্য বিষয় আগামী ক্লাসের পাঠ্য বিষয়গুলির সঙ্গে সম্বন্ধিত। যেমন, নিউটনের সূত্রের সাথে ছাত্রছাত্রীদের প্রথম আলাপ হয় সপ্তম শ্রেণিতে, আবার সূত্রের উপর ভিত্তি করে তারা ‘বল ও গতি’ পড়ে নবম শ্রেণিতে।
দ্বিতীয়ত – বুঝে পড়া, এই বিষয়টি সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ। অধিকাংশ ছাত্রছাত্রীরা যে পড়াশোনা করতে চায় না এবং সুযোগ পেলেই ফাঁকি দিতে ছাড়ে না, তা প্রায় সকল অভিভাবকদেরই জানা তথ্য। তাই অভিভাবকদের লক্ষ্য রাখতে হবে যে ছাত্রছাত্রীরা যেন প্রতিটা বিষয় বুঝে পড়ে, না বুঝে যেন পড়া মুখস্থ না করে।
[আরো পড়ুন – পড়াশোনা করতে কেন ভালো লাগে না]
পম্পা বা অপর্ণার কি হবে?
পম্পা বা অপর্ণার মতো যে সকল ছাত্রছাত্রী আগে ভালো করে না বুঝে পড়ার কারণে; এখনকার পড়া বুঝতে পারছো না, তাদের আগে পুরানো জট ছাড়াতে হবে।
উদাহরণ হিসাবে বলা যায় লাভ-ক্ষতির অঙ্কে পারদর্শিতা লাভের জন্য শতকরা সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা থাকতেই হবে। তাই পুরানো বই দেখে, অথবা শিক্ষকদের কাছে গিয়ে পুরানো ধারণার ভিত আগে ঝালিয়ে নাও, ম্যাজিকের মতো দেখবে শক্ত অধ্যায় জলের মতো সহজ হয়ে গেছে।
এই লেখাটির সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। বিনা অনুমতিতে এই লেখা, অডিও, ভিডিও বা অন্যভাবে কোনো মাধ্যমে প্রকাশ করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই লেখাটি থেকে উপকৃত হলে সবার সাথে শেয়ার করার অনুরোধ রইল।
JumpMagazine.in এর নিয়মিত আপডেট পাওয়ার জন্য –
- ফলো করো – WhatsApp চ্যানেল
- সাবস্ক্রাইব করো – YouTube চ্যানেল
- লাইক করো – facebook পেজ
- সাবস্ক্রাইব করো – টেলিগ্রাম চ্যানেল
- Facebook Group – লেখা – পড়া – শোনা