jump-editorial
Editorial (সম্পাদকীয়)

শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন আসছে, আপনি তৈরি তো?

স্কুল শিক্ষার ক্ষেত্রেও বিপুল পরিবর্তন আনতে চাইছে নয়া শিক্ষানীতি৷ বিদেশি মডেল মেনে, মুখস্থ নয়, বরং কোনও বিষয়ে ধারণা তৈরি করার ওপর জোর দেওয়া হবে৷

~ এই সময় (30/10/2019)

উপরের বক্তব্যটি কিন্তু JUMP ম্যাগাজিনের নয়। ভারতবর্ষের কেন্দ্রীয় সরকার বর্তমানে একটি নতুন শিক্ষানীতির খসড়া নিয়ে কাজ করছেন। এর প্রধান উদ্দেশ্য ভারতীয় শিক্ষা ব্যবস্থার খোলনলচে বদলে ফেলা। উপরের উক্তিটি হল বাংলার একটি জনপ্রিয় দৈনিকের সেই শিক্ষানীতির খসড়া নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনের কয়েকটি লাইন।

এই নীতি কার্যকর হলে ভারতীয় স্কুল ব্যবস্থা থেকে শুরু করে উচ্চতর শিক্ষাব্যবস্থার (যেমন PhD) আমূল পরিবর্তন হবে।


JUMP ম্যাগাজিনের ফেসবুক পেজ লাইক করার আবেদন রইল! 🙂


এই পরিবর্তন কেন গুরুত্বপূর্ণ?

যে সমস্ত অভিভাবকেরা বর্তমান শিক্ষা ব্যাবস্থাকে কাছ থেকে দেখছেন, তারা দুটি বিষয়ে নিশ্চয় একমত হবেন।

১। বর্তমানে স্কুল শিক্ষা ব্যবস্থায় একটি ছাত্র বা ছাত্রী কতটা পড়ার বিষয়গুলি বুঝতে পারলো তার থেকে অনেক বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় সে পরীক্ষায় কতটা নম্বর পেল তার উপর।

২। আজকের সময়ে প্রতিযোগিতার বাজারে পড়াশোনায় খুব ভালো না হলে ভালো কেরিয়ার গড়ার সুযোগ খুব কম।

এবার আর একবার ভেবে দেখুন, যে উপরে উল্লেখিত দুটি বিষয় কিন্তু একে অপরের সাথে ভীষণ ভাবে জড়িত।

অর্থাৎ, পড়াশোনায় কাউকে ভালো হতে গেলে, পড়ার সব বিষয়গুলি ভালো ভাবে বুঝতে হবে এবং সেগুলি পরীক্ষায় ভালো ভাবে লিখে আসতে হবে। আর এই ব্যাপারটি হতে হবে ধারাবাহিক।

বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায়, একটি শ্রেণির পড়াশোনা অন্য একটি শ্রেণির পড়ার সাথে জড়িত। (যেমন, সপ্তম শ্রেণিতে পড়া ভগ্নাংশের ধারণার সাথে অষ্টম শ্রেণির শতকরার ধারণা জড়িত, আবার শতকরার সাথে নবম শ্রেণির সুদকষার ধারণা জড়িত)।

সুতরাং, না বুঝে মুখস্থ করে পরীক্ষায় লিখে একবার নম্বর তো পাওয়া যেতেই পারে; কিন্তু ধারাবাহিক সাফল্য পেতে গেলে পড়া বুঝে তার ধারণা তৈরি করতেই হবে। আর এখানেই আসে উল্লেখিত দ্বিতীয় পয়েন্ট, ধারাবাহিক সাফল্য না এলে ভালো কেরিয়ার একটি দুঃস্বপ্ন হয়েই থেকে যাবে।

কি কি পরিবর্তন হবে এর ফলে?

বাচ্চারা কতটা জানে তার দিকে নজর দেওয়া হবে, সে কতটা মুখস্থ করতে পারে, সেটা দেখা হবে না৷ বছরে  দু’বার করেও বোর্ডের পরীক্ষা নেওয়া হতে পারে৷ বাচ্চাদের স্কুল ব্যাগ যাতে ভারী না হয়, সে জন্য প্র্যাক্টিক্যাল সমস্যার সমাধান করার দিকে বেশি নজর থাকবে৷

~ এই সময় (30/10/2019)

উপরের বক্তব্য থেকেই একটা ব্যাপার খুব পরিষ্কার ভাবে উঠে আসছে, না বুঝে মুখস্থ করার বিদ্যাকে বিদায় না জানালে আগামিদিনে বিরাট সমস্যার মুখোমুখি হতেই হবে।

The schools must be encouraged to introduce conceptual learning which avoids students to mug up what they are being taught. While this will help students to understand the concepts better, they will also be able to retain and apply them better.

~ .indiatoday.in (09/08/2019)

এর একটা উদাহরণ কিন্তু আমাদের সামনে এখনই উপস্থিত।

আপনারা জানেন যে বর্তমানে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের মধ্যে শেষ দুই – তিন বছরের প্রশ্নগুলি দেখে প্রস্তুতি নেবার একটা অভ্যাস চালু রয়েছে।

আমরা এটাও জানি যে, ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার জন্য সর্বভারতীয় স্তরের পরীক্ষা হল JEE-Main। বর্তমানে এই পরীক্ষা MCQ প্রশ্নের ধরণে কম্পিউটারের মাধ্যমে দিতে হয়। যা মাধ্যমিকের মতো পরীক্ষার তুলনায় অনেকটাই অধুনিক এবং যুগোপযোগী। এই পরীক্ষায় অনেকগুলি সেট প্রশ্ন থাকে। অর্থাৎ, এক ছাত্র হয়তো সেট Aতে পরীক্ষা দিচ্ছে, তার পাশের ছাত্র সেট B তে পরীক্ষা দিচ্ছে।

তাই এই JEE Main পরীক্ষায় যদি কেউ শেষ তিন বছরের প্রশ্ন – উত্তর মুখস্থ করে পরীক্ষা দিতে যায়, তাহলে তার যে কি অবস্থা হবে তা অনুমান করা কিন্তু খুব একটা কঠিন নয়। হয়তো আগামি দিনে মাধ্যমিকের মতো পরীক্ষাতেও আধুনিকতা আসবে, যেখানে JEE Main বা CAT পরীক্ষার মতো প্রশ্নের উত্তর লেখার ক্ষমতার থেকে বেশি ধারণার উপর জোর দেওয়া হবে।


[আরো পড়ুন – পরীক্ষায় ভুল থেকে সাফল্যের দিক নির্ণয়।]


নতুন শিক্ষাব্যাবস্থার খসড়া নিয়ে সরকার কাজ করছেন, কি কি পরিবর্তন কার্যকর হবে সেগুলিও আলোচনা সাপেক্ষ।

একটা ব্যাপার কিন্তু খুব পরিষ্কার, আর তা হল সাজেশন তৈরি করে মুখস্থ করার অভ্যাসকে বিদায় জানাতেই হবে, বর্তমান ও ভবিষ্যতকে ভালো করতে গেলে পড়া বোঝার উপর জোর দিতেই হবে।

[এই সময় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনটির লিঙ্ক। | Indiatoday.in এর প্রতিবেদনের লিঙ্ক]


এই লেখাটির সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। বিনা অনুমতিতে এই লেখা, অডিও, ভিডিও বা অন্য ভাবে কোন মাধ্যমে প্রকাশ করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


JumpMagazine.in এর নিয়মিত আপডেট পাওয়ার জন্য –