narishikkhay-bidyasagorer-obodan
প্রশ্ন-উত্তর

ঊনবিংশ শতকে নারীশিক্ষার বিস্তার ও বিদ্যাসাগরের অবদান



এই লেখাটি সংস্কার: বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা অধ্যায়ের অন্তর্গত। মূল আলোচনা এই লিঙ্ক থেকে পড়ুন উনিশ শতকের বাংলা- শিক্ষা সংস্কারঃ বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা

অষ্টাদশ শতাব্দীর সমাজ কোনদিনও ভাবতেই পারেনি যে সমাজে নারীদেরও পুরুষের সমান অধিকার রয়েছে৷ বিশেষ করে শিক্ষাক্ষেত্রে৷ ঊনবিংশ শতাব্দী যখন নিজেকে নতুন করে গড়ে তুলছে তখন সমাজের একাংশ যদি থাকে সম্পূর্ণ অজ্ঞানতার অন্ধকারে তবে সে সমাজের সঠিক অগ্রগতি হওয়া সম্ভব নয়৷

আর এ কথা অনুভব করতে পেরেছিলেন কিছু সত্যিকারের প্রগতিশীল ব্যাক্তিবর্গ৷ তাঁদের মধ্যে অবশ্যই চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর৷ সেইসঙ্গে স্ত্রী শিক্ষার প্রসারে ব্রাহ্মসমাজ, রামমোহন রায়ের ভূমিকাও অনস্বীকার্য৷


দশম শ্রেণির অন্য বিভাগগুলি – বাংলা | English | ইতিহাস | ভূগোল

তবে একথা বলতেই হবে সরকারি উদ্যোগ সমানভাবে কার্যকরী না হলে এই সকল উদ্যোগই ব্যর্থ হত যেত৷

বিদ্যাসাগর মহাশয় সাধারণ জনগণের মধ্যে শিক্ষার প্রসারের কথা ভেবেছিলেন।স্ত্রী শিক্ষার বিস্তার ছাড়া অর্ধ শিক্ষিত সমাজ কখনই উন্নতি করতে পারে না৷ তাই তিনি স্ত্রী শিক্ষা বিস্তারে উদ্যোগী হন। নদিয়া ,হুগলি ,বর্ধমান, মেদিনীপুর প্রভৃতি জেলায় প্রায় 35টি বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করেছিলেন এবং সেই সময় এই বিদ্যালয়গুলিতে প্রায় তেরোশো ছাত্রী পড়াশোনা করত৷বলাই বাহুল্য এই বিদ্যালয়গুলির ব্যয়ভারও ইশ্বরচন্দ্র নিজেই বহন করতেন৷

বিদ্যাসাগর মহাশয় 1849 খ্রিস্টাব্দে 7 মে ব্রিটিশ সরকারের আইন সচিব জন এলিয়ট ড্রিঙ্কওয়াটার বেথুনের সহযোগীতায় কলকাতায় গড়ে তোলেন হিন্দু বালিকা বিদ্যালয়৷
পরবর্তীকালে যার নাম হয় বেথুন স্কুল৷

বিদ্যাসাগর দীর্ঘকাল এই বিদ্যালয়ের সচিব পদে নিযুক্ত থেকেছেন৷

বিদ্যাসাগরের অন্যতম কৃতিত্ব মেট্রোপলিটন ইন্সটিটিউশনের প্রতিষ্ঠা, এটি পরবর্তীকালে বিদ্যাসাগর কলেজে পরিণত হয়।


দশম শ্রেণির অন্য বিভাগগুলিগণিত | জীবন বিজ্ঞান | ভৌতবিজ্ঞান

স্কটল্যান্ডের আরেক বিখ্যাত ব্যাক্তি হলেন জন এলিয়ট ড্রিঙ্কওয়াটার বেথুন৷ তিনি বড়লাটের আইন সচিব হিসেবে নিজের জীবন শুরু করেছিলেন কিন্তু তার অন্যতম অবদান হল ভারতীয়দের নিজের মাতৃভাষায় শিক্ষা গ্রহণের জন্য উৎসাহিত করা৷

বেথুন সাহেব নেটিভ ফিমেল স্কুল নামে সাধারণ বালিকাদের জন্য একটি স্কুল তৈরি করেন৷
পরবর্তীকালে হেঁদুয়ার পশ্চিম দিকের জমিতে এই স্কুলের নিজস্ব ভবন তৈরি করার কাজ শুরু হয় যদিও কাজটি শেষ হওয়ার আগেই তিনি মারা যান এবং এই স্কুলটি পরবর্তীতে বেথুন স্কুল নামে পরিচিত হয়৷

ঊনবিংশ শতক নারী শিক্ষা বিস্তারে সব থেকে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিল। তার উল্লেখযোগ্য উদাহরণ প্রথম মহিলা চিকিৎসক কাদম্বিনী গাঙ্গুলী(সমগ্র ব্রিটিশ উপনিবেশের প্রথম মহিলা চিকিৎসক)।


তবে তিনি শুধু প্রথম মহিলা চিকিৎসকই নন, তিনি এবং চন্দ্রমুখি বসুই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মহিলা গ্র্যাজুয়েট৷ উল্লেখ্য এরপর মহিলাদের শিক্ষাক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য দিল্লিতে 1930 সালে লেডি আরউইন কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়৷

সমাপ্ত।


এই লেখাটির সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। বিনা অনুমতিতে এই লেখা, অডিও, ভিডিও বা অন্য ভাবে কোন মাধ্যমে প্রকাশ করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



এছাড়া,পড়াশোনা সংক্রান্ত যেকোনো বিষয়ের আলোচনায় সরাসরি অংশগ্রহন করতে যুক্ত হতে পারেন ‘লেখা-পড়া-শোনা’ ফেসবুক গ্রূপে। এই গ্রুপে যুক্ত হতে ক্লিক করুন এখানে।