ইতিহাস – নবম শ্রেনি – শিল্পবিপ্লব, উপনিবেশবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ (প্রশ্ন উত্তর)
ফরাসী বিপ্লবের সময়কাল থেকেই ফ্রান্সের জনজাগরণে তৃতীয় সমাজ তথা প্যারিসের (ফ্রান্সের রাজধানী) দরিদ্র খেঁটে খাওয়া মানুষদের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল। এই শ্রমজীবী সম্প্রদায়ের আন্দোলনের একটি নিদর্শন হল প্যারি কমিউন।
এককথায় বলতে গেলে, ১৮৭১ খ্রিষ্টাব্দে প্যারিসের শ্রমজীবী মানুষ জার্মান সমর্থিত ফ্রান্সের নতুন ফরাসী সরকারের বিরুদ্ধে যে অভ্যুত্থান ঘটায় তা প্যারি কমিউন নামে খ্যাত।
সরকারের বিরোধিতা করে বিদ্রোহী শ্রমজীবীরা নিজস্ব সরকার গঠন করে ১৮ই মার্চ প্যারি কমিউন গঠন করেন। এর মাধ্যমে তারা প্যারিসকে একটি স্বশাসিত নগরী হিসাবে প্রতিষ্ঠা করেন। প্যারি কমিউনের প্রতি সাধারণ মানুষের সমর্থন ছিল। জাতীয়তাবাদী ভাবনা এবং জার্মান বিরোধী ভাবনা থেকে মানুষ এই স্বশাসিত সরকারকে সমর্থন করেছিলেন।
প্যারি কমিউন আন্দোলন সকল দলের শ্রমিকদের সমর্থন পায়। বিপ্লবী নেতা অগাস্ত ব্লঙ্কি দীর্ঘদিন প্যারি কমিউনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
প্যারি কমিউনের উদ্দেশ্য
প্যারি কমিউন গঠনের প্রাধান উদ্দেশ্যগুলি ছিল –
ক) প্যারিস নগরীর প্রশাসন নিয়ন্ত্রণ করা।
খ) ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের গৌরব ও মর্যাদা বৃদ্ধি করা।
গ) ধীরে ধীরে সমগ্র ফ্রাসে এই কমিউনের আধিপত্য বিস্তার করা।
প্যারি কমিউনের কাজ
প্যারি কমিউন বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য কাজ করেছিল –
ক) ফরাসী সরকারের বিকেন্দ্রীকরণ
খ) রাষ্ট্রের প্রশাসনিক কাজ থেকে চার্চের নিয়ন্ত্রণ বিচ্ছেদ।
গ) জাতীয় নাগরিক রক্ষীবাহিনী প্রতিষ্ঠা।
ঘ) শ্রমিকদের কল্যাণের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন সংস্কারমূলক কাজ।
প্যারি কমিউনের পতন
মাত্র দুই মাস শাসন কাজ চালানোর ভার্সাই সরকারের নিষ্ঠুর দমননীতির ফলে প্যারি কমিউনের পতন ঘটে।
প্যারি কমিউন প্রেক্ষাপটে কার্ল মার্কস ‘সিভিল ওয়ার ইন ফ্রান্স’ নামক গ্রন্থ লিখেছিলেন। এই গ্রন্থে তিনি প্যারি কমিউন সম্পর্কে সহমত প্রকাশ করেন।
এই লেখাটির সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। বিনা অনুমতিতে এই লেখা, অডিও, ভিডিও বা অন্য ভাবে কোন মাধ্যমে প্রকাশ করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
JumpMagazine.in এর নিয়মিত আপডেট পাবার জন্য –
- সাবস্ক্রাইব করো – YouTube চ্যানেল
- লাইক করো – facebook পেজ
- সাবস্ক্রাইব করো – টেলিগ্রাম চ্যানেল
- Facebook Group – লেখা – পড়া – শোনা