শ্রেণি – দশম | বিষয়: গণিত । অধ্যায়: একচলবিশিষ্ট দ্বিঘাত সমীকরণ (দ্বিতীয় পর্ব) |
আগের পর্বে আমরা একচল বিশিষ্ট দ্বিঘাত সমীকরণের ধারণা ও তার সমাধান পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করেছি।
আজকের পর্বে, আমরা আর একটি সমাধান পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করবো। তবে যদি কোন পাঠক আগের পর্বটি না পড়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে এই পর্বটি পড়ার আগে আমরা আপনাকে আগের পর্বটি পড়ে নেওয়ার অনুরোধ করবো।
ভারতীয় গনিতবিদ সংস্কৃত পণ্ডিত এবং দার্শনিক শ্রীধর আচার্য সর্বপ্রথম দ্বিঘাত সমীকরণ সমাধানের জন্য সূত্র আবিষ্কার করেন। আরো একটি কথা উল্লেখ না করলেই নয় যে, তিনি একজন বাঙালি ছিলেন। তিনি যে সূত্রটি দেন তা হল –
যদি দ্বিঘাত সমীকরণটি ax2+bx+c = 0 আকারে প্রকাশ করা যায় এবং a, b ও c বাস্তব সংখ্যা হয়, যেখানে a ≠ 0 হয়। তাহলে শ্রীধর আচার্যের সূত্রানুসারে, x-এর সমাধান বা বীজ হিসাবে আমরা পাইঃ
x =
(+) এবং (-) পৃথক পৃথক ভাবে ব্যবহার করে পৃথক বীজগুলি পাওয়া যায় (b2-4ac) এর ধনাত্মক , ঋণাত্মক বা শূন্য হওয়ার ওপর ভিত্তি করে তিন ধরনের বীজ পাওয়া যায়। এবার একটা উদাহরণ সহযোগে সম্পূর্ণ বিষয়টির ব্যাখ্যা করা যাক।
ধরি, কোনো প্রশ্ন সমাধানের ক্ষেত্রে আমরা নিম্নোক্ত সমীকরণটি পেলাম –
x2-28x+195 = 0
এই সমীকরণটি শ্রীধর আচার্য এর সাহায্যে সমাধান করার জন্য প্রথমে সমীকরণটিকে ax2+bx+c = 0 এর সাথে তুলনা করে পাই a = 1, b = -28 ও c = 195
এখন শ্রীধর আচার্যএর সুত্রানুসারে,
x =
=
=
=
ধনাত্মক চিহ্ন ব্যবহার করে পাইঃ
x =
x =
x = 15
এবং, ঋণাত্মক চিহ্ন ব্যবহার করে পাইঃ
x =
x =
x = 13
সুতরাং ক্ষেত্রে x এর দুটি বাস্তব বীজ পেলাম, অর্থাৎ b2-4ac >0 (এক্ষেত্রে 784-780 = 4>0)। x এর দুটি বাস্তব সমাধান পাব।
ঠিক একইভাবে b2-4ac<0 হলে Square root এর ভিতর ঋণাত্মক মান আসার দরুন সেক্ষেত্রে বাস্তব বীজ পাওয়া যাবে না।
ধরি b2-4ac = 0
সুতরাং, x =
x =
এক্ষেত্রে আপাতভাবে x-এর একটি বাস্তব বীজ পাওয়া গেল বলে মনে হলেও দ্বিঘাত সমীকরনে x-এর দ্বিঘাত থাকার দরুন x-এর দুটি বীজ পাওয়া যাবে এবং তারা সমান হবে, অর্থাৎ x-এর দুটি বীজের মান হবে; ।
এই ধরনের সমীকরণে (b2-4ac)কে discriminant বলা হয়।
বীজের প্রকার ভেদ ছকের দ্বারা দেখান হল।
Discriminant
b2-4ac
|
বীজের প্রকার | বীজ |
ধনাত্মক অর্থাৎ
b2-4ac>0 |
বাস্তব বীজ এবং অসমান বীজ | এবং |
ঋণাত্মক অর্থাৎ
b2-4ac<0 |
অবাস্তব বীজ
|
– |
b2-4ac = 0 | বাস্তব বীজ এবং সমান | এবং |
আশা করি, শ্রীধর আচার্যের সূত্রের ধারণা পাওয়া গেল।
এবার আমরা একটি সমীকরণ সমাধানের মাধ্যমে এই সূত্রের প্রয়োগ সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা লাভ করবো।
উদাহরণ ১ঃ সমাধান করঃ
(x-7) (x-9) =195
দ্বিঘাত সমীকরণ আকারে প্রকাশ করে পাই-
⇒ x2– 9x – 7x + 63 = 195
⇒ x2– 16x – 132 = 0
এবার, শ্রীধর আচার্যের সূত্র প্রয়োগের করে পাইঃ
x =
=
=
=
ধনাত্মক চিহ্ন ব্যবহার করে পাইঃ
x =
x = 22
ঋণাত্মক চিহ্ন ব্যবহার করে পাইঃ
x =
x = -6
সুতরাং x এর দুটি মান x=22 এবং x=-6।
Note:- যে কোনো সমীকরণ দেওয়া থাকলে তা যদি প্রাথমিকভাবে কি সমীকরণ বোঝা না যায়। তাহলে সরলরুপে ভেঙে নিতে হবে, যাতে সমীকরণের প্রকৃতি অর্থাৎ দ্বিঘাত বা একঘাত বোঝা যায়।
চলো, এইরূপ আরও একটি সমাধান করা যাক আরো ভালোভাবে বোঝার জন্যে।
দশম শ্রেণির অন্য বিভাগগুলি – গণিত | জীবনবিজ্ঞান | ভৌতবিজ্ঞান
উদাহরণ ২ঃ
আমরা অনেকেই কমা (,) চিহ্নের পাশে x ≠0 বা এইরূপ কিছু থাকলে ঘাবড়ে যাই বা চিন্তিত হই। কিন্তু একটু লক্ষ্য করলেই বোঝা যাবে, সমীকরণে একটি Term রয়েছে । সুতরাং x যদি শূন্য মান নিয়ে নেয় অর্থাৎ x = 0 হলে হবে = অসীম বা ∞, একটি বৃহৎ মান যা অনুমান করা সম্ভব নয়। তাই এইরূপ প্রশ্ন থাকলে ধরে নিতে হবে x≠0। এবার সমাধানে আসা যাক, পূর্বের মত সরল করা হলে পাই –
⇒ = 3
⇒ 10x2 – 1 = 3x
⇒ 10x2 – 3x – 1 = 0
এটি একটি দ্বিঘাত সমীকরণ, তাই এক্ষেত্রে শ্রীধর আচার্যের সূত্রের সাহায্যে পাইঃ
x =
=
ধনাত্মক চিহ্ন ব্যবহার করে পাইঃ
x =
=
=
এবং, ঋণাত্মক চিহ্ন ব্যবহার করে পাইঃ
x =
=
দশম শ্রেণির অন্য বিভাগগুলি – বাংলা | English | ইতিহাস | ভূগোল
নিজে করোঃ – = , x ≠ 3, -5
আশা করি এক্ষেত্রে ভাল করেই বুঝতে পারছ x ≠ 3, -5 হওয়ার কারণ কি।
পরবর্তী পর্ব – দ্বিঘাত সমীকরণের কয়েকটি বিশেষ উদাহরণ।
এই লেখাটির সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। বিনা অনুমতিতে এই লেখা, অডিও, ভিডিও বা অন্য ভাবে কোন মাধ্যমে প্রকাশ করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
JumpMagazine.in এর নিয়মিত আপডেট পাওয়ার জন্য –
- ফলো করো – WhatsApp চ্যানেল
- সাবস্ক্রাইব করো – YouTube চ্যানেল
- লাইক করো – facebook পেজ
- সাবস্ক্রাইব করো – টেলিগ্রাম চ্যানেল
- Facebook Group – লেখা – পড়া – শোনা
X-Math-1b