Tribhuj-coturbhuj-porisima-kkhetrofol
WB-Class-9

ত্রিভুজ ও চতুর্ভুজের পরিসীমা ও ক্ষেত্রফল | WBBSE Class 9 Chapter 15

গণিতনবম শ্রেণি – ত্রিভুজ ও চতুর্ভুজের পরিসীমা ও ক্ষেত্রফল (Perimeter and Area of Triangle and Quadrants)


চারপাশে আমরা এমন অসংখ্য জিনিস দেখি যে গুলো ত্রিভুজ অথবা চতুর্ভুজ আকৃতির। সেই সব দ্বিমাত্রিক বস্তুর ক্ষেত্রফল ও পরিসীমা বিদ্যমান। আজ আমরা ত্রিভুজ ও চতুর্ভুজের পরিসীমা ও ক্ষেত্রফল সম্পর্কে আলোচনা করব।

পরিসীমা কাকে বলে?

কোনো জ্যমিতিক চিত্রের সীমা নির্ধারক রেখাগুলির দৈর্ঘ্যের সমষ্টিকেই পরিসীমা বলে।

ক্ষেত্রফল কাকে বলে?

এখন ঐ নির্দিষ্ট সীমাবদ্ধ স্থানের (এখানে জ্যামিতিক চিত্রের) যে পরিমাপ আমরা পাই তাকেই ঐ জ্যমিতিক বস্তুর ক্ষেত্রফল বলে।

বিভিন্ন জ্যামিতিক চিত্র

উদাহরণস্বরূপ বলা যায় ঘরের মেঝে বা পাড়ার খেলার মাঠ। এগুলির দুটি মাত্রা বর্তমান। এক দৈর্ঘ্য ও অন্যটি প্রস্থ। এতো গেল চতুর্ভুজ আকৃতির বস্তুর কথা।

পড়তে বসে জ্যামিতি বইতে ত্রিভুজ চ্যাপ্টারটি পড়ার সময় তিনটি বাহু বিশিষ্ট যে দ্বিমাত্রিক ক্ষেত্র তোমরা দেখেছ সে সবেরই কিন্তু পরিসীমা ও ক্ষেত্রফল বর্তমান। এই অধ্যায়ে আমরা জেনে নেব সেই সকল পরিসীমা ও ক্ষেত্রফল নির্ণয়ের উপায়।

প্রথমে আসি ত্রিভুজের কথায়। ত্রিভুজের পরিসীমা নির্ণয় কিন্তু তেমন কোনো জটিল ব্যাপার নয়। তিনটি বাহুর দৈর্ঘ্য জানা থাকলেই কিন্তু পরিসীমা নির্ধারণ করা যায়।

যে কোনো ত্রিভুজের পরিসীমা = তিনটি বাহুর দৈর্ঘ্যের যোগফল

ধরা যাক, ত্রিভুজের তিনটি বাহু যথাক্রমে a, b, c
ত্রিভুজের পরিসীমা= a+b+c

এতো গেল ত্রিভুজের পরিসীমা নির্ণয়। এখন যদি ত্রিভুজের ক্ষেত্রফল নির্ণয় করতে চাই সেক্ষেত্রে সকল ত্রিভুজের ক্ষেত্রফলের সূত্র হল = \frac{1}{2}\times ভুমি × উচ্চতা
আবার, হেরনের সূত্রের বা ব্রহ্মগুপ্তের সূত্রের সাহায্যেও আমরা ত্রিভুজের অর্ধপরিসীমাকে কাজে লাগিয়ে ত্রিভুজের ক্ষেত্রফল নির্ণয় করতে পারি, সাধারণত বিষম বাহু ত্রিভুজের ক্ষেত্রে এই সূত্রের ব্যবহার বেশি।


নবম শ্রেণির অন্য বিভাগগুলি – বাংলা | English | ইতিহাস | ভূগোল

হেরনের সূত্র

ধরা যাক যে কোনো ত্রিভুজের তিনটি বাহুর দৈর্ঘ্য a, b ও c
সুতরাং, ত্রিভুজটির অর্ধপরিসীমা (s) =\frac{a+b+c}{2}
ওই ত্রিভুজটির ক্ষেত্রফল = \sqrt{s(s-a)(s-b)(s-c)}
ত্রিভুজের ক্ষেত্রফল নির্ণয়ের এই সূত্রটি মিশরের গণিতজ্ঞ হেরন দিয়েছিলেন। তাই এই সূত্রটি হেরনের সূত্র নামে পরিচিত। এই সূত্রটি ব্রহ্মগুপ্তের সূত্র নামেও পরিচিত।
আবার অন্যান্য পদ্ধতিতেও বিভিন্ন ত্রিভুজের ক্ষেত্রফল নির্ণেয় করতে সক্ষম। এখানে আমরা

সমকোণী ত্রিভুজ, সমবাহু ত্রিভুজ, সমদ্বিবাহু ত্রিভুজ এর ক্ষেত্রফলের সূত্র

1. সমকোণী ত্রিভুজের ক্ষেত্রফল = (\frac{1}{2}\times সমকোণ সংলগ্ন বাহুদ্বয়ের দৈর্ঘ্য)

2. সমবাহু ত্রিভুজের ক্ষেত্রফল = \frac{\sqrt3}{4}\times (বাহু)2

3. সমদ্বিবাহু ত্রিভুজের ক্ষেত্রফল =
12 ভূমির দৈর্ঘ্য (সমান বাহুর একটির দৈর্ঘ্য)2 – (ভূমির দৈর্ঘ্যের অর্ধেক)2

এবার আমরা বিভিন্ন চতুর্ভুজের পরিসীমা এবং ক্ষেত্রফল নিয়ে আলোচনা করব।
তার আগে প্রথমেই একবার মনে করে নিতে হবে চতুর্ভুজ কত রকমের হয়।

সাধারণত চতুর্ভুজ ৫ প্রকার যথাক্রমে- আয়তক্ষেত্র, বর্গক্ষেত্র, রম্বস, সামান্তরিক, ট্রাপিজিয়াম বর্তমান।

আমরা একে একে এই সকল প্রকার চতুর্ভুজের পরিসীমা ক্ষেত্রফল ও কর্ণের পরিমাপ নির্ণয়ের সূত্র আলোচনা করবো।


নবম শ্রেণির অন্য বিভাগগুলিগণিত | জীবন বিজ্ঞান | ভৌতবিজ্ঞান

আয়তক্ষেত্র কাকে বলে?

যে সামতলিক ক্ষেত্রের বিপরীত বাহুগুলি পরস্পর সমান ও সমান্তরাল এবং কোণগুলি সমকোণ তাকে আয়তক্ষেত্র বলে।

ধরা যাক আয়তাকার মাঠের দৈর্ঘ্য a এবং প্রস্থ b, চিত্রে দেখো
সুতরাং, আয়তক্ষেত্রের পরিসীমা = 2(দৈর্ঘ্য + প্রস্থ) =2(a+b)
আয়তক্ষেত্রের কর্ণের দৈর্ঘ্য = (দৈর্ঘ্য2 + প্রস্থ2) এর বর্গফল
আয়তক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল = দৈর্ঘ্য × প্রস্থ = a×b

বর্গক্ষেত্র কাকে বলে?

যে চতুর্ভুজের চারটি বাহুই পরস্পর সমান ও কোণগুলি সমকোণ তাকে বর্গক্ষেত্র বলে।

ধরা যাক, একটি বর্গক্ষেত্রের একটি বাহুর দৈর্ঘ্য a
সুতরাং, বর্গক্ষেত্রের পরিসীমা = 4 × বাহুর দৈর্ঘ্য = 4a
কর্ণের দৈর্ঘ্য = \sqrt{2}\times একটি বাহুর দৈর্ঘ্য = \sqrt{a^2+a^2}=a\sqrt{2}
ক্ষেত্রফল = (বাহু)2=a^2

রম্বস কাকে বলে?

যে চতুর্ভুজের চারটি বাহু সমান ও বিপরীত বাহুগুলি পরস্পর সমান্তরাল কিন্তু কোনো কোণ সমকোণ নয় তাকে রম্বস বলে।

রম্বসের ক্ষেত্রফল = \frac{1}{2} × রম্বসের কর্ণদ্বয়ের দৈর্ঘ্যের গুণফল

সামন্তরিক কাকে বলে?

যে চতুর্ভুজের বিপরীত বাহুগুলি পরস্পর সমান ও সমান্তরাল কিন্তু কোনো কোণ সমকোণ নয় তাকে সামন্তরিক বলে।

সামন্তরিকের ক্ষেত্রফল = \frac{1}{2} × রম্বসের কর্ণদ্বয়ের দৈর্ঘ্যের গুণফল

ট্রাপিজিয়াম কাকে বলে?

যে চতুর্ভুজের এক জোড়া বিপরীত বাহু সমান কিন্তু তির্যক এবং অপর জোড়া বিপরীত বাহু অসমান ও সমান্তরাল তাকে ট্রাপিজিয়াম বলে।

ট্রাপিজিয়ামের ক্ষেত্রফল = \frac{1}{2} × ট্রাপিজিয়ামের সমান্তরালে বাহুদ্বয়ের সমষ্টি × সমান্তরাল বাহুদ্বয়ের মধ্যে লম্ব দূরত্ব
সমাপ্ত।


এই লেখাটির সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। বিনা অনুমতিতে এই লেখা, অডিও, ভিডিও বা অন্য ভাবে কোন মাধ্যমে প্রকাশ করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই লেখাটি থেকে উপকৃত হলে সবার সাথে শেয়ার করার অনুরোধ রইল।



JumpMagazine.in এর নিয়মিত আপডেট পাবার জন্য –

IX_M_15a(Tribhuj-coturbhujer-porisima-kkhetrofol)