গ্রীষ্মের এক শনিবারের দুপুরবেলা।
টিপু স্কুল থেকে ফিরে মনের আনন্দে মাছের ঝোল – ভাত খেয়ে, ভালো করে আড়মোড়া ভেঙ্গে খাটে বসেছে। সদ্য স্কুলে unit টেস্ট শেষ হয়েছে, তাই পড়াশোনার চাপ অনেকটাই কম। টিপুর ইচ্ছা ছিল ভালো করে একটা ঘুম লাগাবার। ‘ছিল’ কথাটা বলা হচ্ছে তার কারণ এখন তার ইচ্ছাটা আর পূরণ হবার সম্ভবনা নেই।
বিছানায় বসে সবে একটা হাই তুলেছে টিপু আর প্রায় সঙ্গে সঙ্গে তার মা হাতে ফোন নিয়ে হাজির।
মা – এই নে, দাদা ফোন করেছে, কথা বল।
টিপু ‘দিল আমার ঘুম মাটি করে’ এই কথা ভাবতে ভাবতে ব্যাজার মুখে ফোন ধরে কথা বলতে শুরু করে।
টিপু – হ্যাঁ দাদা বল।
দাদা – শোন, একটা এক্সামের ফর্ম বেরিয়েছিল। আজ সন্ধ্যা আটটায় জমা দেবার লাস্ট ডেট। আমার বাড়ি ফিরতে রাত হবে। তুই কম্পিউটার খুলে ফর্মটা জমা দিয়ে দে।
আকাশ থেকে পড়ে টিপু।
টিপু – আ-আমি, অনলাইনে ফর্ম জমা দেব কি করে। জীবনে করেছি কখনো। আমি পারবো না।
দাদা – ছাগল একটা। আরে কম্পিউটারে একটা word ফাইলে আমার সব ডিটেলস লেখা আছে। ওখানেই স্ক্যান করা আমার ছবি আর সিগনেচার পাবি। খুব সহজ কাজ, নেট থেকে দেখে করে নে। আর কিছুদিন পর থেকে তো তোকে নিজের ফর্ম নিজেকেই ভরতে হবে। তাই এখন থেকে অভ্যাস করা শুরু কর।
[আরো পড়ুন – ডিজিটাল ফটো অ্যালবাম – দিনুদার কেরামতি]
টিপু রেগে গিয়ে মনে মনে ভাবে – ‘ আমি যদি ছাগল হই, তাহলে তুই ছাগলের দাদা অর্থাৎ রামছাগল’ কিন্তু মুখে তা না বলে উত্তর দেয় ‘দেখছি কি করা যায়’।
ফোন রাখার পরে টিপু ভাবে, দাদা কথাটা খুব একটা খারাপ বলেনি।
আজকাল তো প্রায় সব ফর্মই অনলাইন ভরতে হয়। তাই এখন থেকে ব্যাপারটা শিখে রাখলে মন্দ হয় না। এরপর কম্পিউটার চালিয়ে বসে টিপু। দেখে একটা নির্দিষ্ট folder-এ দাদা ছবি, সই আর সব তথ্য আগে থেকেই রেখে দিয়েছে।
এইবার দাদার বলা ওয়েবসাইটে গিয়ে ফর্ম ফিলাপ করা শুরু করে। ব্যপারটা শুনতে কঠিন লাগলেও, কাজে অতটা কঠিন নয়। চটপট সব তথ্য ভরতে থাকে। তার বিপদটা শুরু হয় ছবি আপলোড করার সময় থেকে। দাদার পাসপোর্ট ছবির সাইজ প্রায় 2 mb আর এরা চাইছে 50 kb। কি বিপদ!
অনেক গবেষণা করেও কিছুই সুরাহা হয় না। দাদাকে জিজ্ঞেস করবে?
ওরে বাবা থাক, এমনিতেই রেগে আছে। আগের বার ছাগল বলেছিল এবার গাধা বা বেবুন এইসব বলবে। তার চেয়ে বরং দিনুদাকে ধরা যাক।
অনেক ভাবনা চিন্তা করে টিপু দিনুদাকে ফোন করে।
কি ভাগ্য টিপুর! দুইবার ফোন রিং হতেই দিনুদার গলা পেল টিপু।
দিনুদা – কিরে টিপু কেমন আছিস? শনিবার ভরদুপুরে, কি মনে করে?
টিপু – আমি তো একটু আগে অবধি ভালো ছিলাম। এখন তোমার বন্ধু মানে আমার দাদা আমাকে একটা প্রবল বিপদে ফেলে দিয়েছে। একটা ছবিকে কি করে resize করবো তা বুঝতে পারছি না।
[আরো পড়ুন – হঠাৎ মাউস খারাপ হলে কম্পিউটার কিভাবে বন্ধ করবেন]
দিনুদা হেসে বলে – ওহ, এই ব্যাপার! ফর্ম ফিলাপ করছিস নিশ্চয়ই। ছবির সাইজ বড় বলে আপলোড হচ্ছে না?
টিপু – ঠিক বলেছ।
দিনুদা – start button থেকে খুঁজে Microsoft Picture Manager অ্যাপ্লিকেশনটা খোল আর তাতে যে কোনো ছবি open কর।
টিপু – হ্যাঁ, Microsoft Picture Manager ওপেন করলাম। আর desktop-এ আগে থেকে থাকা A. P. J. Abdul Kalam এর একটা ছবি নিলাম।
দিনুদা – এবার দেখ উপরে picture বলে একটা menu আছে। ওখানে resize অপশন আছে। ওটা select করলে, পাশে resize বার খুলবে।
টিপু – হ্যাঁ হ্যাঁ খুলেছে।
দিনুদা – এরপর ওখানে ‘percentage of original width x height’ এর নিচে তুই যত percent ছোট করতে চাইছিস তা লেখ। ধর তুই 50% করতে চাইছিস, তাহলে ওখানে 50 লিখে ok select করবি। এতে তোর ছবির size ছোট হবে কিন্তু quality ঠিক থাকবে।
টিপু – এবার বুঝলাম। এতো খুব সহজ।
দিনুদা – হ্যাঁ খুব সহজ এটা। এটা ছাড়াও internet-এ search করলে resize করার আরো অনেক free ওয়েবসাইট থাকে। কিন্তু অনেকসময় ঐ ধরণের website গুলো থেকে malware (এক প্রকারের কম্পিউটার ভাইরাস) infection হবার সম্ভবনা থাকে।
টিপু – ধন্যবাদ দিনুদা। এবার এটা খুব সহজে হয়ে যাবে।
এই বলে টিপু ফোন রাখলো। আর প্রবল উৎসাহে ফর্ম ফিলাপের কাজ শেষ করা শুরু করলো।
এই লেখাটির সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। বিনা অনুমতিতে এই লেখা, অডিও, ভিডিও বা অন্যভাবে কোনো মাধ্যমে প্রকাশ করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই লেখাটি থেকে উপকৃত হলে সবার সাথে শেয়ার করার অনুরোধ রইল।
JumpMagazine.in এর নিয়মিত আপডেট পাওয়ার জন্য –
- ফলো করো – WhatsApp চ্যানেল
- সাবস্ক্রাইব করো – YouTube চ্যানেল
- লাইক করো – facebook পেজ
- সাবস্ক্রাইব করো – টেলিগ্রাম চ্যানেল
- Facebook Group – লেখা – পড়া – শোনা