moharanir-ghoshonapotro
প্রশ্ন-উত্তর

মহারাণীর ঘোষণাপত্র | টীকা

ইতিহাসদশম শ্রেণি – সঙ্ঘবদ্ধতার গোড়ার কথা বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ


[এই প্রশ্ন উত্তর পর্বটি দশম শ্রেণীর ইতিহাস বিভাগের চতুর্থ অধ্যায় সঙ্ঘবদ্ধতার গোড়ার কথা বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ অধ্যায়ের ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহের চরিত্র ও প্রকৃতি আলোচনার অন্তর্গত।]

1858 সালে মহারাণীর ঘোষণাপত্র কোনো বিক্ষিপ্ত ঘটনা নয়। মহারাণী ভিক্টোরিয়ার সুদূর ইংল্যান্ডে বসে ভারতের শাসনভার গ্রহণ করার পিছনে কিছু রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপট ছিল।

রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট

1857 সালের মহাবিদ্রোহ ছিল ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে প্রথম পদক্ষেপ। বহু ঐতিহাসিকই এই বিদ্রোহকে জাতীয় স্তরের বিদ্রোহ হিসাবে আখ্যায়িত করেছিলেন। এই বিদ্রোহ যে শুধু ভারতীয়দেরই জাতীয়তাবোধে উদ্বুদ্ধ করেছিল তা নয়, ব্রিটিশ শক্তি প্রথমবার ভারতীয়দের সংঘবদ্ধ রূপ দেখেছিল এবং ভারতীয়দের এই ঐক্য ব্রিটিশ শাসনে যে দাঁড়ি টানতে পারে সেই বিষয়েও তারা প্রমাদ গুনেছিল।

সামাজিক প্রেক্ষাপট

ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ছিল পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত একটি জাতি আর অন্যদিকে ভারতবাসী তখন ধর্ম, জাত, লিঙ্গ ইত্যাদি বৈষম্যসহ একাধিক কুসংস্কারে আবদ্ধ, অশিক্ষার অন্ধকারে ডুবে থাকা একটি দেশ। 1757 সালের পলাশির যুদ্ধের আগে পর্যন্ত ব্রিটিশরা ব্যবসা-বাণিজ্যকেই প্রাধান্য দিত।

কিন্তু, উনবিংশ শতকের গোড়া থেকে তারা ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে সাম্রাজ্য বিস্তার করতে শুরু করে এবং এই দেশের বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক বিষয়ে জড়িয়ে পড়ে। সতীদাহ প্রথা রোধ, বাল্য বিবাহ দমন, বিধবা বিবাহ প্রচলন, খ্রিস্ট ধর্মের প্রচার, নারীশিক্ষা বিস্তার মূলক বিভিন্ন সামাজিক গঠনমূলক কাজে হস্তক্ষেপ করায়, গোঁড়া হিন্দু সমাজ ব্যাপক ক্ষুদ্ধ হয়। ব্রিটিশদের শাসন তাদের মনে অসন্তোষ বাড়ায়।

এই পরিস্থিতি যাতে আরো খারাপ দিকে না পৌছায়, তাই স্বয়ং রাণী ভিক্টোরিয়া মহাবিদ্রোহ শেষ হতেই, “ভারত শাসন আইন”-এর মাধ্যমে কোম্পানি শাসনের অবসান ঘটিয়ে ভারতের শাসনভার 1858 সালের 1 লা নভেম্বর নিজের হাতে তুলে নেন। এই দেশে তার প্রতিনিধি হিসাবে গভর্নর জেনারেল, ‘ভাইসরয়’ উপাধি নিয়ে ভারত শাসনের দায়িত্ব পান।

ভারতের প্রথম ভাইসরয় ছিলেন লর্ড ক্যানিং।

মহারাণীর ঘোষণাপত্রের উল্লেখিত বিষয়সমূহ

• ব্রিটিশ সরকার ভারতীয় সামাজিক ও ধর্মীয় বিষয়ে কোনোপ্রকার হস্তক্ষেপ করবেনা।
• লর্ড ডালহৌসীর আমলের স্বত্ব বিলোপ নীতি বাতিল করা হয়।
• দেশীয় নিঃসন্তান বা অপুত্রক রাজাদের দত্তকের অনুমতি দেওয়া হয়।
• জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল ভারতীয়কে সরকারী চাকরিতে নিযুক্ত হওয়ার অধিকার দেওয়া হয়।
• দেশীয় রাজ্যগুলির অভ্যন্তরীণ শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব নেয় ব্রিটিশ সরকার।
• দেশীয় রাজাদের পূর্বে হওয়া সন্ধি ও তার শর্ত, ব্রিটিশ সরকার মেনে নেবে।
• এমনকি ব্রিটিশ সরকার সাম্রাজ্য বিস্তারে আর আগ্রহী নয়, এমন সিদ্ধান্তও জানানো হয়।

ভিডিও ক্লাসের মাধ্যমে মহারানীর ঘোষণাপত্র বিষয়টি বুঝে নাও ↓


এই লেখাটির সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। বিনা অনুমতিতে এই লেখা, অডিও, ভিডিও বা অন্য ভাবে কোন মাধ্যমে প্রকাশ করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


JumpMagazine.in এর নিয়মিত আপডেট পাবার জন্য –

X_Hist_Moharanir_Ghoshonapotro