colonial-forest-law-india
Madhyamik

ঔপনিবেশিক অরণ্য আইন

ইতিহাসদশম শ্রেণি – প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ (পর্ব – ১)

গত কয়েকটি পর্বে আমরা সংস্কার: বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা আলোচনা করেছি। আগামী কয়েকটি পর্বে আমরা প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ অর্থাৎ তৃতীয় অধ্যায় নিয়ে আলোচনা করবো। আজ ঔপনিবেশিক অরণ্য আইন নিয়ে আলোচনা।

পরিবেশ ও বাস্তুতন্ত্র সম্পর্কে একটা সাধারণ ধারণা নিশ্চয়ই এতদিনে তোমাদের হয়ে গেছে। পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে ভূপ্রাকৃতিক বৈচিত্র্যের দরুণ জীবজগতে যে ধরনের বৈচিত্র্য দেখা যায় তাও তোমাদের জানা।

মানুষ কিন্তু এই বাস্তুতন্ত্রের খাদ্য-খাদক শৃঙ্খলের আওতা থেকে অনেক আগেই বেরিয়ে এসেছে। কিন্তু মানুষ অতিবর্তী পরিবেশের ভারসাম্য ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংসে মানুষের যতটা হাত রয়েছে ততটা আর কিছুরই বোধহয় নেই।

প্রকৃতির সঙ্গে সবচেয়ে নিবিড়, আত্মিক ও পারস্পরিক নির্ভরতার সম্পর্ক ছিল আদিম অরণ্যচারী মানুষের।

কৃষির প্রসারের পর থেকেই অরণ্য বা আদিম প্রকৃতির উপর মানুষের নির্ভরশীলতা অনেকাংশে কমে যায়। এমনকি কৃষিনির্ভর সমাজ ও পশুচারণজীবী সমাজের মধ্যে অনেক ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক বৈপরীত্যও দেখা যায়।

কিন্তু এই উভয় সমাজের মধ্যেই কিছু সাধারণ মূল্যবোধ ছিল, যা প্রকৃতি ও মানুষের পারস্পরিক সহাবস্থানে সহায়তা করত। ব্রিটিশ উপনিবেশের হাত ধরে যে পুঁজিবাদী মূল্যবোধ ভারতীয় সমাজে প্রবেশ করে, তা মানুষকে পূর্বের যৌথ সংস্কৃতির নিগড় থেকে বিচ্ছিন্ন করে আত্মকেন্দ্রিক, স্বার্থপর বৃত্তির অনুশীলনে রত করে।

এর মূল শিকার হয় ভারতের পরিবেশ।

এটি একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়ার ফল এবং ঔপনিবেশিক অরণ্য আইন এই প্রক্রিয়ার একটি অংশমাত্র। এই প্রক্রিয়াকে বুঝতে হলে উপনিবেশবাদের সামগ্রিক চরিত্রটি প্রথমে স্পষ্ট হতে হবে।

কৃষিজীবী ও পশুচারণজীবী সমাজের যে বৈপরীত্যের কথা পূর্বে উল্লেখ করেছি তার ফলে অনেক সময়েই জল, জঙ্গল ও জমিকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্ব তৈরী হত। কিন্তু এই দ্বন্দ্বের প্রভাব কিছু অঞ্চলবিশেষের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকত। শাসকশ্রেণীও এইসব বিষয়ে বিশেষ মাথা ঘামাত না।

কিন্তু ইউরোপের ক্ষেত্রে শিল্পবিপ্লব একটি ভিন্নতর প্রেক্ষিতের জন্ম দেয়।

শিল্পবিপ্লব প্রাকৃতিক সম্পদকে ভোগ্যপণ্যে পরিণত করার উপায় বাতলে দেয়।

এই ভোগ্যপণ্য (Commodity) হচ্ছে সেইসব বস্তু যা আজকাল তোমরা সুপারমার্কেটে বা শপিং মলে দেখতে পাও। ভোগ্যপণ্য বিনিময়ের শর্ত কিন্তু সবসময়ে অংশগ্রহণকারী মানুষেরা নির্ধারণ করে না।

ওই বিশেষ পণ্যের মূল্যমান বা দাম হল সেই শর্ত যা আবার নির্ধারিত হয় ওই পণ্যের চাহিদার উপর। পশুচর্ম দিয়ে তৈরী শৌখিন ব্যাগের চাহিদা বেশি হলে তার দাম বাড়বে। ফলে লাভের আশায় বেশ কিছু নিরীহ পশুকে হত্যা করা হবে।

বোধহয় আন্দাজ করতে পারছো প্রাকৃতিক ও প্রাণীজ সম্পদের কি মাত্রায় ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে এই বাজারের অবস্থায় তার হিসেব রাখাটা একটু কঠিন।

পূর্বে মানুষ পশুহত্যা করত মূলতঃ খাদ্য ও বস্ত্রের জন্য। এখন মানুষের বহুবিধ চাহিদার জোগান দিতে তাদের বলি করা হচ্ছে।

কার্ল মার্কস ‘দাস ক্যাপিটাল’ গ্রন্থে এই সমস্যাটি নিয়ে আলোচনা করেছেন।

শিল্পবিপ্লবের অল্প কিছুদিনের মধ্যেই ইউরোপের দেশগুলির প্রাকৃতিক সম্পদের ভাঁড়ারে টান পড়ে। শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামালের জোগান দিতে নতুন জমির প্রয়োজন হয়। এশিয়া, প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকা ও আমেরিকায় নতুন ভূখন্ডের সন্ধান শাপে বর হল।

ষোড়শ শতক থেকেই সোনার খনি বা এল ডোরাডোর মিথে ভর করে দলে দলে ইউরোপীয় আমেরিকা মহাদেশে পাড়ি দিতে শুরু করেছিল। বহির্জগতের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন আমেরিকার আদিম অধিবাসীরা ইউরোপীয়দের সংস্পর্শে এসে রোগাক্রান্ত হয়ে মারা যায়।

পরবর্তীকালে উত্তর আমেরিকার এক বিস্তীর্ণ বনাঞ্চল ধ্বংস করে ইউরোপীয় অভিবাসীরা, এবং তারা নতুন দেশ ‘আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র’ গঠন করে।

একটা আস্ত মহাদেশের ভূপ্রকৃতি, পরিবেশ, জনবসতি সবই বদলে গেল ইউরোপীয় সভ্যতার অভিঘাতে! এও একধরনের ঔপনিবেশিকতা যার পোশাকি নাম ‘বসতি উপনিবেশবাদ’ (Settler Colonialism)।

ঐতিহাসিক অ্যালফ্রেড ক্রসবি একে বাস্তুতান্ত্রিক সাম্রাজ্যবাদ (Ecological Imperialism) আখ্যা দিয়েছেন।

অষ্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের ও কতকটা এইরকমই পরিণতি হয়েছিল। ভারত ও চিনে অবশ্য রাজনৈতিক প্রতিরোধ ও জনবাহুল্যের সৌজন্যে ইউরোপীয় সভ্যতার অভিঘাত এতটা ব্যাপক হয়নি।


দশম শ্রেণির অন্য বিভাগগুলিগণিত | জীবনবিজ্ঞান | ভৌতবিজ্ঞান

যদিও ভারতে কৃষি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা অনেকক্ষেত্রেই জমির ফলনে প্রভাব ফেলেছিল। মহারাষ্ট্রের বেরার ও বাংলার কিছু এলাকায় এই সমস্যা জটিল আকার ধারণ করে।

ঔপনিবেশিক সরকার পাট ও নীলের মত অর্থকরী ফসল চাষ করার জন্য দেশীয় জনগণের ওপর জোরজবরদস্তি করত।

নীল এক ধরণের রঞ্জকদ্রব্য তার ইউরোপের বাজারে প্রচুর চাহিদা ছিল।

বাংলায় নীলকর সাহেবরা কৃষকদের দিয়ে জোর করে নীলচাষ করাতো। এতে কৃষকদের বিপুল ক্ষতিস্বীকার করতে হত কারণ দেশীয় বাজারে যেসব শস্যের চাহিদা ছিল নীলের দাদন নিলে সেগুলো আর চাষ করা যেত না।

নীল প্রস্তুত করছেন শ্রমিকরা

পেটের দায়ে কৃষকরা তখন প্রতিবাদ করতে বাধ্য হয়। উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে নীলবিদ্রোহ ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের এক অনন্য নজির সৃষ্টি করেছিল।

ঔপনিবেশিক শাসনের ধ্বংসাত্মক চরিত্রের জন্য চরমতম মূল্য চোকাতে হয়েছিল ভারতের বনাঞ্চলকে।

ব্রিটিশ আমলের এক বন সংরক্ষক হেনরি ক্লেগহর্ন যেমন বলছেন, কয়লা সম্পদের প্রাচুর্যের জন্য ইংল্যান্ডবাসীকে আর বনজ সম্পদের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হত না।

ফলে অরণ্যসম্পদের ধ্বংসসাধন নিয়ে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকদের মধ্যেও এক ধরণের ঔদাসীন্য দেখা যায়। আবার ঔপনিবেশিক শাসনের প্রথম যুগে শুধু যুদ্ধবিজয়ের ঔদ্ধত্য দেখাবার জন্যই কখনও কখনও তারা অরণ্যসম্পদ ধ্বংস করেছে।

রত্নগিরিতে মারাঠি সেনাধ্যক্ষ কানহোজির সাধের সেগুন কাঠের জঙ্গল তছনছ করে দেয় ব্রিটিশ সেনা।

অন্যদিকে ঔপনিবেশিক আমল থেকে ভারতের বনজ সম্পদের যে বহুমুখী উপযোগিতা আবিষ্কৃত হল তার পরিণতি ছিল সুদূরপ্রসারী।

পূর্বের জীবনধারণভিত্তিক অর্থনীতিতে বনের কাঠ লাগত মূলতঃ জ্বালানি হিসেবে, কখনও কখনও চাষের উপকরণ তৈরীতে আর বাসগৃহ নির্মাণে। কিন্তু ব্রিটিশরা উপরোক্ত কারণগুলি ছাড়াও জাহাজ নির্মাণে ও রেলপথের স্লিপারে বনের কাঠ ব্যবহার করতে শুরু করল।

কাঠের তৈরি যুদ্ধ জাহাজ

রেলপথ ব্যবহার করে খনিজ সম্পদ বন্দর অবধি অনায়াসে পৌঁছে দেওয়া যেত। আবার যে জাহাজে করে তার বিলেতে পাড়ি দিত তাও ভারতেরই জঙ্গলে পাওয়া কাঠ দিয়ে নির্মিত। প্রাকৃতিক সম্পদের এইভাবে তার প্রাপ্তিস্থল থেকে স্থানান্তর ও ব্যবহারোপযোগী দ্রব্যে রূপান্তরের আগে কখনও সম্ভব হয়নি।

কাঠের গুড়ি বন স্থানান্তর করা হচ্ছে।

কিন্ত এর ফলে ভারতের সাধারণ মানুষের জীবনে বিরাট কোনো পরিবর্তন আসেনি। বরং একটি বিদেশি শক্তির কর্তৃত্ব রক্ষার স্বার্থে অন্তর্দেশীয় ও আন্তর্দেশীয় যোগাযোগ বজায় রাখার জন্য ভারতের অরণ্যসম্পদকে এক অসীম মূল্য দিতে হয়েছিল। বুঝতেই পারছ, এর ফলে অচিরেই ভারতের অরণ্যসঙ্কুল এলাকা সঙ্কুচিত হতে শুরু করে।

প্রথমদিকে রেলের স্লিপার হিসেবে কোন গাছের কাঠ উপযুক্ত হতে পারে তা বিদেশী শাসকদের মাথায় ঢুকছিল না। পঞ্চাশ রকম প্রজাতির গাছ কেটেও টেকসই স্লিপার কিছুতেই তৈরী করা যাচ্ছিল না।

সরকার তখন দেশীয় ঠিকাদারদের ওপর চাপ তৈরী করে উপযুক্ত গাছের সন্ধান দেবার জন্য। এর ফলে বনজ সম্পদের ধ্বংসসাধন আরও ত্বরান্বিত হয়।

রাজস্ব আদায় জন্য ঔপনিবেশিক সরকার অনেক আগে থেকেই অরণ্যচারী আদিবাসীদের অধিকারে হস্তক্ষেপ শুরু করেছিল।

এতে স্বাধীনচেতা আদিবাসীদের স্বাভিমানে আঘাত লাগে ও বাংলা-বিহার অঞ্চলে সাঁওতাল, কোল, মুন্ডার মত জনজাতিরা ব্রিটিশদের সঙ্গে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়।

অথচ সময়ের সাথে সাথে ঔপনিবেশিক অর্থনীতি ভারতের অরণ্যসম্পদের ওপর এতটাই নির্ভরশীল হয়ে পড়েছিল যে এই সম্পদের ওপর যেনতেন প্রকারেন একচ্ছত্র অধিকার কায়েম না করতে পারলে পুরো ব্যবস্থাটাই ভেঙ্গে পড়ার আশঙ্কা ছিল।

১৮৫৯ খ্রিষ্টাব্দে প্রত্যক্ষ ঔপনিবেশিক শাসন শুরু হওয়ার পর থেকেই তাই ব্রিটিশ রাজ এই উদ্দেশ্যেসাধনে তৎপর হয়ে ওঠে।

জার্মান উদ্ভিদবিজ্ঞানী ডেইট্রিক ব্র্যান্ডিসের অধীনে ১৮৬৪ সালে Indian Forest Service গঠিত হল। এই বিভাগের উদ্যোগে ১৮৬৫ সালে প্রথমবারের জন্য ভারতে অরণ্য আইন (Indian Forest Act) প্রনীত হয়।

আগের মুঘল আমলে গঠিত ভূমি-রাজস্ব ব্যবস্থায় ক্ষেত্রভেদে কিছু নিয়মের হেরফেরের দ্বারা অকৃষিজাত সম্পদ যেমন জল-জঙ্গলের ওপর স্থানীয় গ্রামসমাজ ও আদিবাসীদের অধিকার রক্ষিত হত।

গ্রামের ধর্মীয় প্রধানদের সন্তুষ্ট করার জন্য অনেকসময় এই এলাকাগুলো তাদের দান করে দেওয়া হত। আদিবাসীদের সঙ্গে এই গোষ্ঠীপ্রধানদের টানাপোড়েন থাকলেও একটা ন্যূনতম বোঝাপড়া তাদের মধ্যে ছিল।

অরণ্য আইন প্রণয়নের মাধ্যমে প্রথম ঔপনিবেশিক গবেষণায় লাভজনক হিসেবে চিহ্নিত কিছু অরণ্যকে সরাসরি রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রনাধীনে আনা হয়।

শুধু তাই নয়, ভারতের সব অরণ্যের ওপর এই অধিকার কি করে কায়েম করা যায় তা নিয়ে তখন থেকেই ঔপনিবেশিক সরকারের ওপরমহলে আলোচনা শুরু হয়ে যায় এবং ১৮৭৮ ও ১৯২৭ সালে দুবার এই আইনে সংশোধনী আনা হয়।

১৮৭৮ খ্রিষ্টাব্দের বনাঞ্চল আইন

১৮৭৮ খ্রিষ্টাব্দের বনাঞ্চল আইনে ভারতের বনাঞ্চলকে

১) সংরক্ষিত অরণ্য (Reserved Forest)

২) সুরক্ষিত অরণ্য (Protected Forest) ও

৩) গ্রাম্য বনাঞ্চল (Village Forest)

এই তিনভাগে ভাগ করা হয়। সংরক্ষিত অরণ্যে রাষ্ট্রের একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়।


দশম শ্রেণির অন্য বিভাগগুলি – বাংলা | English | ইতিহাস | ভূগোল

এই অরণ্যের সম্পদ ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ব্যবহার করা আইনত নিষিদ্ধ হয়ে যায়। সুরক্ষিত অরণ্যে সাধারণের জন্য ব্যবহারে কিছুটা ছাড় দেওয়া হলেও কোনো বৃক্ষ বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক মনে হওয়া মাত্র তার ছেদন নিষিদ্ধ করার বিধান রাখা হয়।

বলা বাহুল্য, ঔপনিবেশিক লোলুপতার শিকার হয়ে শীঘ্রই বহু সুরক্ষিত অরণ্য সংরক্ষিত অরণ্যে রূপান্তরিত হয়।

১৮৯০ সালে ভারতের সংরক্ষিত অরণ্যের পরিধি ছিল ৫৬০০০ বর্গকিমি ও সুরক্ষিত অরণ্যের বিস্তার ছিল ২০০০০ বর্গকিমি এলাকায়। ১৯০০ সালে সংরক্ষিত অরণ্যের পরিধি বেড়ে ৮১৪০০ বর্গকিমি হলেও সুরক্ষিত অরণ্য ৩৩০০ বর্গকিমিতে এসে ঠেকে।


অন্যদিকে গ্রাম্য বনাঞ্চল এলাকাভুক্ত অঞ্চলে স্থানীয় গ্রামসমাজের অধিকার প্রতিষ্ঠার কথা বলা হলেও ভারতের বেশিরভাগ অঞ্চলে এর অস্তিত্ব ছিল শুধু খাতায় কলমে।

এদিকে গ্রাম সংলগ্ন অরণ্য স্থানীয় সমাজের নানান উপকারে লাগত। হঠাৎ এর ব্যবহারে সরকারী হস্তক্ষেপ শুরু হলে কৃষিজীবী সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়। এই ক্ষোভ প্রশমনের জন্য সরকার জার্মান কৃষিবিদ ভয়েলকারের দ্বারস্থ হয়।

১৮৯৪ সালে তিনি এদেশে আসেন ও ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে ঘুরে ঘুরে স্থানীয়ভাবে কৃষিকাজের সমস্যাগুলি খতিয়ে দেখেন। তাঁর পরামর্শ অনুযায়ী সরকার ভয়েলকার রেজোলিউশন গ্রহণ করে।

এতে স্থানীয় মানুষের জ্বালানির জন্য কাঠ সংগ্রহের জন্য বনসৃজন ও গোচারণক্ষেত্র বরাদ্দ করার কথা বলা হয়। কিন্তু এর মাধ্যমে আবার পরোক্ষভাবে বুঝিয়ে দেওয়া হল যে জঙ্গলের ওপর বন্য আদিবাসীদের অধিকার আর স্বীকৃত নয়।

এবার তোমরাই বিচার করো, ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে আদিবাসীদের বিদ্রোহ ন্যায়সঙ্গত ছিল কিনা!

পর্ব সমাপ্ত। পরবর্তী পর্ব → কোল ও চুয়াড় বিদ্রোহ


এই লেখাটির সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। বিনা অনুমতিতে এই লেখা, অডিও, ভিডিও বা অন্যভাবে কোনো মাধ্যমে প্রকাশ করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


এই লেখাটি থেকে উপকৃত হলে সবার সাথে শেয়ার করার অনুরোধ রইল।



Join JUMP Magazine Telegram


JumpMagazine.in এর নিয়মিত আপডেট পাওয়ার জন্য –