শ্রেণি – অষ্টম | বিষয়: গণিত । অধ্যায়: পূরক কোণ, সম্পূরক কোণ, সন্নিহিত কোণ
আমাদের পড়ার বই দেখতে কেমন হয় তা আমরা সবাই জানি। আমাদের বইয়ের দুটি অংশ থাকে। এই দুটি অংশকে আমরা দুটি সরলরেখা ভাবতে পারি। নীচের খোলা বইয়ের ছবিটি দেখলে ব্যাপারটা আরো পরিষ্কার হবে।
এইবার আমরা বইটিকে ছেড়ে শুধুমাত্র সরলরেখা দুটিকে কল্পনা করি। আর এবার আমরা যদি সরলরেখা রূপী বইয়ের একটা অংশ তুলি তাহলে সেটি এই রকম দেখতে হয়।
অর্থাৎ এক্ষেত্রে বইয়ের প্রথম অংশ, শেষ অংশের সাথে কিছুটা ‘কোণ’ করে অবস্থান করে।
তাহলে আমরা কোণ বলতে কী বুঝি?
দুটি তল বা সন্নিহিত বাহু একে অপরকে ছেদ করলে, ছেদবিন্দুতে বাহুদুটির মধ্যবর্তী অংশকে কোণ বলা হয়।
এবার উপরের ছবিটি দেখ, ছবিতে এখানে OA একটি রশ্মি এবং OB একটি রশ্মি।
যাদের ছেদবিন্দু O। OA এবং OB এর মধ্যবর্তী অংশকেই কোণ বলব।
চাঁদার সাহায্যে মেপে দেখছি বইয়ের প্রথম ও শেষ অংশের মধ্যে কোণের মান 30˚।
এখন দ্বিতীয় ক্ষেত্রে বইটা যদি আরো সামান্য আমরা বেশি খুলি তবে দেখব যে বাইরের থেকে বইটা অনেকটা এইরকম লাগবে —
এই ক্ষেত্রে, মেপে দেখছি যে মধ্যবর্তী কোণের মান 60˚।
এই বার, এই দুই কোণকে যোগ করে দেখছি, 60˚ + 30˚ = 90˚ বা 1 সমকোণ।
পূরক কোণ কাকে বলে?
যখন দুটি কোণের সমষ্টি 90˚ বা এক সমকোণ হয়, তখন একটি কোণকে অপর কোণের পূরক কোণ বলা হয়।
পূরক কোণের কিছু উদাহরণ
এবার দেখা যাক নিম্নলিখিত কোণগুলির মধ্যে কোনগুলি পরস্পর পূরক।
31˚, 45˚, 32˚, 43˚, 59˚, 27˚, 45˚¸ 63˚, 34˚, 61˚
উঃ 31˚ কোণের পূরক কোণের মান = (90˚ – 31˚) = 59˚
45˚ কোণের পূরক কোণের মান = (90˚ – 45˚) = 45˚
32˚ কোণের পূরক কোণের মান = (90˚ – 32˚) = 58˚
43˚ কোণের পূরক কোণের মান = (90˚ – 43˚) = 47˚
59˚ কোণের পূরক কোণের মান = (90˚ – 59˚) = 31˚
45˚ কোণের পূরক কোণের মান = (90˚ – 45˚) = 45˚
63˚ কোণের পূরক কোণের মান = (90˚ – 63˚) = 27˚
34˚ কোণের পূরক কোণের মান = (90˚ – 34˚) = 56˚
61˚ কোণের পূরক কোণের মান = (90˚ – 61˚) = 29˚
অর্থাৎ 31˚ ও 59˚ যোগ করে আমরা 90˚ পাই
আবার 45˚ + 45˚ = 90˚এবং 27˚ + 63˚ = 90˚
অর্থাৎ, (31˚, 59˚), (45˚, 45˚) এবং (27˚, 63˚) পরস্পর পূরক কোণ।
আমরা আবার আমাদের বইতে ফিরে আসি।
এখন বইটি যখন আমরা পড়তে পড়তে বেশ অনেকটা পড়ে ফেলব তখন কিন্তু আমাদের অর্ধেকের বেশি খুলতে হবে অন্যথায় পড়তে পারব না। বইটি অর্ধেকের চেয়ে বেশি খোলা অবস্থায় দেখতে লাগবে অনেকটা এরকম—
এখন চাঁদা দিয়ে মেপে দেখছি বইয়ের মলাট বা শেষ অংশের এবং প্রথম অংশের মধ্যে কোণ 150˚।
প্রথম ক্ষেত্রে এবং তৃতীয় ক্ষেত্রে কোণদ্বয় 30˚ এবং 150˚। তারা একত্রে মিলে তৈরী করে (30˚ + 150˚) = 180˚। অর্থাৎ 1 সরল কোণ তখন বইটিকে দেখতে লাগে এইরকম।
সম্পূরক কোণ কাকে বলে?
দুটি কোণের সমষ্টি যদি 180˚ হয় তখন একটি কোণকে অপর কোণের সম্পূরক কোণ বলে।
যেমন, 52˚ কোণের সম্পূরক কোণ = (180˚ – 52˚) = 128˚
সম্পূরক কোণের কিছু উদাহরণ
নীচের কোণগুলির মধ্যে কোন গুলি সম্পূরক তা নির্ণয় করা যাক।
105˚, 58˚, 47˚, 29˚, 42˚, 75˚, 133˚, 135˚
উঃ 105˚ কোণের সম্পূরক কোণ = (180˚ – 105˚) = 75˚
58˚ কোণের সম্পূরক কোণ = (180˚ – 58˚) = 122˚
47˚ কোণের সম্পূরক কোণ = (180˚ – 47˚) = 133˚
29˚ কোণের সম্পূরক কোণ = (180˚ – 29˚) = 151˚
42˚ কোণের সম্পূরক কোণ = (180˚ – 42˚) = 138˚
135˚ কোণের সম্পূরক কোণ = (180˚ – 135˚) = 45˚
এখানে, 105˚ + 75˚ = 180˚এবং 47˚ + 133˚ = 180˚
∴ (105˚, 75˚) এবং (47˚, 133˚) সম্পূরক কোণ।
অষ্টম শ্রেণির অন্য বিভাগ – বাংলা | ইংরেজি | গণিত | বিজ্ঞান
সন্নিহিত কোণ কাকে বলে?
সন্নিহিত কথার অর্থ পাশাপাশি। অর্থাৎ সোজা কথায়, সন্নিহিত কোণ বলতে বোঝায় পাশাপাশি দুটি কোণ থাকলে একটি কোণকে অপর কোণের সন্নিহিত কোণ বলে।
চিত্রে, ও একই শীর্ষবিন্দু এবং একই সাধারণ বাহু এর দুই পাশে অবস্থিত।
ও কে একে অপরের সন্নিহিত কোণ বলতে পারি।
এবং হল সন্নিহিত কোণ কারণ এই কোণদ্বয় সাধারণ বাহু র দুইপাশে অবস্থিত এবং এই ক্ষেত্রে এই সন্নিহিত কোণদ্বয়ের সমষ্টি সর্বদা দুই সমকোণ হবে। অর্থাৎ,
গাণিতিক উদাহরণ
নীচের ছবিতে এবং হলে এর মান কত?
সমাধানঃ চিত্রে, আমরা দেখতে পাচ্ছি, তিনটি সন্নিহিত কোণ।
ধরি, , অতএব
এই তিনটি সন্নিহিত কোণের সমষ্টি 180˚।
∴
বা,
বা,
বা,
∴ এর মান 25˚।
পর্ব সমাপ্ত।পরবর্তী পর্ব →বিপ্রতীপ কোণের ধারণা
লেখিকা পরিচিতিঃ
শ্রীরামপুর কলেজের প্রাক্তনী সুরভী ঘোষ গণিতে স্নাতকোত্তর। গণিত চর্চার পাশাপাশি সুরভী বই পড়তে, গান শুনতে এবং গাইতে ভালোবাসেন।
এই লেখাটির সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। বিনা অনুমতিতে এই লেখা, অডিও, ভিডিও বা অন্যভাবে কোনো মাধ্যমে প্রকাশ করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই লেখাটি থেকে উপকৃত হলে সবার সাথে শেয়ার করার অনুরোধ রইল।
JumpMagazine.in এর নিয়মিত আপডেট পাওয়ার জন্য –
- ফলো করো – WhatsApp চ্যানেল
- সাবস্ক্রাইব করো – YouTube চ্যানেল
- লাইক করো – facebook পেজ
- সাবস্ক্রাইব করো – টেলিগ্রাম চ্যানেল
- Facebook Group – লেখা – পড়া – শোনা
VIII_M_6