উদ্ভিদ-হরমোনের ব্যবহারিক প্রয়োগ
প্রশ্ন-উত্তর

উদ্ভিদ হরমোনের ব্যবহারিক প্রয়োগ

জীবনবিজ্ঞানদশম শ্রেণি – জীবজগতের নিয়ন্ত্রন ও সমন্বয় (উদ্ভিদ হরমোন)|

আমরা জানি তিনটি প্রধান উদ্ভিদ হরমোন রয়েছে, সেগুলি হল – অক্সিন, জিব্বেরেলিন ও সাইটোকাইনিন।


এই প্রশ্ন উত্তর আলোচনা উদ্ভিদ হরমোন আলোচনার অংশ। মূল আলোচনাটি পরে নিতে এই লিঙ্কে ক্লিক করো → উদ্ভিদ হরমোন


এদের মধ্যে অক্সিন কোশ বিভাজনের মাধ্যমে উদ্ভিদের বৃদ্ধি ঘটায়। জিব্বেরেলিন পর্বমধ্যের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি করে, জিনগত খর্ব উদ্ভিদের খর্বতা দূর করে দৈর্ঘ্যের বৃদ্ধি ঘটায় এবং সুপ্তবীজের অঙ্কুরোদগম ঘটায়। সাইটোকাইনিন উদ্ভিদের জরা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। উদ্ভিদ হরমোন উদ্ভিদের বৃদ্ধি ঘটায়, অঙ্কুরোদগমে সাহায্য করে, নিষেকের পর ডিম্বাশয়ে অক্সিনের বৃদ্ধি, সাইটোকাইনিনের ভূমিকা উদ্ভিদের জরা রোধে এবং কোশ বিভাজনে লক্ষ্য করা যায়। তার ভিত্তিতে বিভিন্ন প্রকার উদ্ভিদ হরমোনকে কৃষিক্ষেত্রে বা হর্টি কালচারে প্রয়োগ করা হয়।

তাহলে এবার দেখে নেওয়া যাক, উদ্ভিদ হরমোনের ব্যবহারিক প্রয়োগ।

jump magazine smart note book

উদ্ভিদ হরমোনের ব্যবহারিক প্রয়োগ

ক) আগাছা দমন

কৃষিজমিতে আগাছার জন্ম হলে তা মাটির উর্বরতা বিনষ্ট করে কৃষিকাজের ক্ষতি করে। আবার কৃষিক্ষেত্রে আগাছা দমনের আধুনিক প্রক্রিয়াগুলি যথেষ্ট ব্যয়বহূল। তাই বর্তমানে আগাছা দূর করার জন্যে আগাছার উপরে অক্সিন স্প্রে করা হয়, এটি শস্যের কোনরূপ ক্ষতি না করে শুধুমাত্র আগাছা বিনষ্ট করে। অক্সিনের এই ধর্মের জন্য একে উইডিসাইড হরমোন বলা হয়। এক্ষেত্রে অক্সিন শুধুমাত্র অবাঞ্চিত দ্বিবীজপত্রী উদ্ভিদকেই বিনষ্ট করে, কিন্তু একবীজপত্রী উদ্ভিদের কোনো ক্ষতি করে না।

খ) বীজহীন ফল সৃষ্টি

নিষিক্ত ডিম্বাশয় ফলে রূপান্তরিত হয়, সেক্ষেত্রে ফলে বীজ থাকে না। জিব্বেরেলিন ও অক্সিন হরমোন প্রয়োগ করে বীজবিহীন ফল উৎপাদন করা যায়। নিষেক ছাড়া ডিম্বাশয়ের ফলে পরিণত হওয়ার পদ্ধতিকে পার্থেনোকার্পি বলা হয়। পেঁপে, আঙ্গুর, আপেল প্রভৃতি ক্ষেত্রে পার্থেনোকার্পি পদ্ধতি অক্সিন ও জিব্বেরেলিন ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়।

গ) ফলের আয়তন বৃদ্ধি

জিব্বেরেলিনের প্রয়োগে আঙুর, আপেল, ন্যাসপাতি প্রভৃতি ফলের বৃন্তের ফল ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং ফলের আকারও বৃদ্ধি পায়। যেমন- G3 প্রয়োগে আঙুরের বৃন্তের বৃদ্ধি ঘটে ফলে আঙুরের থোকা বড় হয় এবং আঙুরের আকারও বৃদ্ধি পায়।

ঘ) অপরিণত ফলের মোচন রোধে

ফল চাষের ক্ষেত্রে অপরিণত ফলের মোচন একটি অন্যতম প্রধান সমস্যা। যেমন – আম, কলা, আঙ্গুর জাতীয় ফল গাছের ক্ষেত্রে অপরিণত ফলের মোচনে প্রতিবছর প্রচুর ক্ষয়-ক্ষতি হয়। আমরা জানি যে অক্সিন অপরিণত ফলের মোচন রোধ করে, তাই এই অপরিণত মোচন রোধ করার জন্য ফলের বোঁটায় অক্সিন স্প্রে করা হয়। ফলে ফল গাছে দীর্ঘদিন থাকে, ঝরে পড়ে যায় না।

jump magazine smart note book

ঙ) কলম তৈরির ক্ষেত্রে

জোড় কলমের জোড়ে বা গুটি কলমের যে জায়গা চেঁচে গুটি করা হয়, সেই স্থানে অক্সিন বা অক্সিন-সাইটোকাইনিনের মিশ্রণ স্প্রে করা হয়।


এই লেখাটির সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। বিনা অনুমতিতে এই লেখা, অডিও, ভিডিও বা অন্য ভাবে কোন মাধ্যমে প্রকাশ করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


JumpMagazine.in এর নিয়মিত আপডেট পাওয়ার জন্য –

X_LSc_udvid-hormoner-byboharik-proyog