ভৌতবিজ্ঞান – দশম শ্রেনি – অধ্যায়: আলো (প্রথম পর্ব)
পূর্ববর্তী শ্রেণিতে আমরা আলো যে এক প্রকার শক্তি সে বিষয়ে জেনেছি।
আবার বিভিন্ন মাধ্যমের মধ্যে দিয়ে আলোর গতি-প্রকৃতি এবং এই কারণে ঘটা বিভিন্ন ঘটনা অর্থাৎ প্রতিফলন, প্রতিসরণ ইত্যাদির সম্পর্কেও জেনেছি, এখন আমরা বিশেষ কিছু আকৃতির বস্তুর মধ্যে দিয়ে আলোর প্রতিসরণের ফলে উৎপন্ন প্রতিবিম্বের বিষয়ে আলোচনা করবো। তবে উল্লেখ্য, যে বস্তু গুলির মধ্যে দিয়ে আলোর প্রতিসরণ আলোচিত হবে তারা সকলেই স্বচ্ছ মাধ্যম নির্মিত।
প্রথম যে বস্তুর মধ্যে দিয়ে আলোর প্রতিসরণের ঘটনা আলোচনা করা হবে তার নাম লেন্স।
লেন্সঃ- এটি মূলত কাঁচ বা অন্য কোন স্বচ্ছ মাধ্যম দ্বারা নির্মিত হয়ে থাকে।
বিভিন্ন প্রকার লেন্সের উল্লম্ব প্রস্থচ্ছেদের চিত্র নিচে উপস্থাপিত হল –

এখন লেন্সকে যদি একটি জ্যামিতিক চিত্র হিসাবে মনে করা হয় তবে লেন্সের চিত্রের উপর আমরা বেশ কিছু কাল্পনিক বিন্দু এবং রেখা অঙ্কন করতে পারি, যে গুলি একে একে আলোচিত হল।
[আরো পড়ুন – বিভব, ভোল্টেজ, রোধ এবং ওহমের সূত্র]
লেন্সের প্রধান অক্ষ (Principal Axis)
লেন্সের মুলত দুটি প্রধান অক্ষ থাকে; প্রথমটি আনুভূমিক অক্ষ ও দ্বিতীয়টি উলম্ব অক্ষ।
সাধারণ ভাবে উল্লম্ব অক্ষটি অঙ্কনের ক্ষেত্রে উত্তল লেন্সের বিপরীত দুই শীর্ষ বিন্দু সংযুক্ত করা হয় এবং অবতল লেন্সের ক্ষেত্রে বিপরীত সমতল গুলি যে সরলরেখা দ্বারা সূচিত হয় তাদের মধ্যবিন্দুগুলি যুক্ত করা হয়।
তবে আনুভূমিক অক্ষ অঙ্কনের পদ্ধতি জানার জন্য প্রথমে লেন্সের বক্রতা কেন্দ্র সম্পর্কে জানা প্রয়োজন।
বক্রতা কেন্দ্র (Centre of Curvature) ও বক্রতা ব্যাসার্ধ(Radius of Curvature)
আমরা উত্তল (Convex) বা অবতল (Concave), যে কোন লেন্সের তলগুলি পর্যবেক্ষন করলে দেখি যে তলগুলি বক্রতল। এখন এই বক্রতল গুলি কোন না কোন গোলকের অংশ। এই গোলক গুলির কেন্দ্র আছে। এই কেন্দ্র গুলিই হল বক্রতা কেন্দ্র। অর্থাৎ লেন্সের বক্রতল গুলি যে গোলকের অংশ সেই গোলক গুলির কেন্দ্র গুলিকেই লেন্সের বক্রতা কেন্দ্র বলে এবং ব্যাসার্ধ গুলিকে বলে বক্রতা ব্যাসার্ধ। একে ইংরাজী ‘R’ অক্ষর দ্বারা প্রকাশ করা হয়।

এখন, আগেই বলা হয়েছিল যে বক্রতা কেন্দ্র সম্পর্কে জানলে লেন্সের আনুভূমিক অক্ষটি সম্পর্কে জানতে বা সেটি নির্ধারন করতে সুবিধা হবে। কারণ লেন্সের দুটি বক্রতা কেন্দ্রকে সরলরেখা দিয়ে যুক্ত করলেই পাওয়া যায় আনুভূমিক অক্ষটি।
লেন্সের মেরু
এখন এই আনুভূমিক অক্ষটি লেন্সের বক্রতল গুলিকে যে দুটি বিন্দুতে ছেদ করে (চিত্রে, P ও Q যথাক্রমে) সেই বিন্দু গুলি লেন্সের মেরু বা পোল নামে পরিচিত।
আলোক কেন্দ্র
লেন্সের মধ্যে এই আনুভূমিক অক্ষটির উপর একটি কাল্পনিক বিন্দু যার মধ্যে দিয়ে আলো প্রতিসৃত হলে নির্গত আলোক রশ্মি আপতিত আলোক রশ্মির সমান্তরাল হয় অথবা আপতিত আলোকরশ্মির সঙ্গে একই পথে থাকে সেই বিন্দুটিকে বলে লেন্সের আলোক কেন্দ্র ।
