ভৌতবিজ্ঞান – দশম শ্রেণি – অধ্যায়: তাপের ঘটনাসমূহ (চতুর্থ পর্ব)
এর আগের পর্বগুলিতে আমরা তাপের প্রসারণ গুণাঙ্কের ধারণা, তরলের প্রসারণ এবং গ্যাসের প্রসারণ নিয়ে আলোচনা করেছি। এই পর্বে আমরা তাপ পরিবাহিতা নিয়ে আলোচনা করবো।
আমরা রান্নার জন্য ব্যবহৃত কোনো একটি ধাতব পাত্রকে উনানে বসানোর পর অন্তত কিছু সময় পর্যন্ত সেই পাত্রটির উপরের দিকের অংশ স্পর্শ করতে পারি, যদিও ঐ একই সময়ে পাত্রটির যে অংশ একেবারে আগুনের কাছে আছে তা আর স্পর্শ করার মত অবস্থায় থাকে না।
অর্থাৎ কোনো কঠিন পদার্থের মধ্যে দিয়ে তাপ পরিবাহিতা হয় এবং যার জন্য কিছুটা সময়ের প্রয়োজন হয়।
কঠিন পদার্থের মধ্যে দিয়ে পরিবাহিতা এই তাপ কয়েকটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে।
ধরা যাক, AB হল একটি কঠিন পদার্থ যার দৈর্ঘ্য হল ‘l’ এবং প্রস্থচ্ছেদ হল ‘a’। AB এর A প্রান্তের উষ্ণতা ° C ও B প্রান্তের উষ্ণতা ° C
এখন ° C < ° C, হলে তাপ ‘B’ থেকে ‘A’ বিন্দুর দিকে প্রবাহিত হবে।
দশম শ্রেণির অন্য বিভাগগুলি – গণিত | জীবনবিজ্ঞান | ভৌতবিজ্ঞান
এবার ধরা যাক, B থেকে A বিন্দুতে ‘m’ সেকেন্ড ধরে Q। পরিমাণ তাপ প্রবাহিত হয়।
- এই পরিবাহিত তাপ সময়ের সঙ্গে সমানুপাতিক অর্থাৎ a ∝ m → (G)
- পরিবাহিত তাপ বস্তুটির উভয় প্রান্তের তাপমত্রা প্রভেদের সঙ্গে সমানুপাতিক অর্থাৎ a ∝ C → (H)
- পরিবাহিত তাপ বস্তুটির প্রস্থচ্ছেদের সঙ্গে সমানুপাতিক । অর্থাৎ, a ∝ a → (I) এবং
- পরিবাহিত তাপ বস্তুটির দৈর্ঘ্যের সঙ্গে ব্যাস্তানুপাতিক। অর্থাৎ a ∝ → (J)
সুতরাং, যৌগিক ভেদের সম্পর্ক অনুসারে:
→ (K)
বা, → (L)
সুতরাং একক সময়ে পরিবাহিত তাপ = পরিবাহিত তাপ / সময় = = → (M)
এখন, K হল একটি ধ্রুবক যা তাপ পরিবাহীতাঙ্ক নামে পরিচিত।
তাপ পরিবাহীতাঙ্কের সংজ্ঞা
তাপ পরিবাহিতাঙ্কের সংজ্ঞা নির্ধারণ করতে গেলে আমরা ‘L’ সমীকরণটি থেকে শুরু করব, আমরা জানি,
বা, → (N)
এখন বস্তুর দৈর্ঘ্য (l), উষ্ণতার পার্থক্য , সময় (m) এবং বস্তুর প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল (a) প্রত্যেকটিই যদি একক হয় তবে K = Q
সুতরাং, আমরা বলতে পারি একক দৈর্ঘ্য এবং একক ক্ষেত্রফল বিশিষ্ট কোনো বস্তুর উভয় প্রান্তের উষ্ণতার পার্থক্য যদি একক (1°C) হয়, তবে বস্তুটির উভয় প্রান্তের মধ্যে একক সময়ে (1 সেকেন্ড) যে পরিমাণ, তাপের পরিবহন ঘটবে, সেই তাপকেই ঐ পদার্থের ক্ষেত্রে তাপ পরিবাহিতাঙ্ক বলা হয়।
দশম শ্রেণির অন্য বিভাগগুলি – বাংলা | English | ইতিহাস | ভূগোল
এখন একটি উদাহরণ দিলে বিষয়টি বোধ হয় সহজতর হবে।
যেমন বলা হল তামার তাপ পরিবাহীতাঙ্ক 0.92 ক্যালোরি সেকেন্ড-1 সেমি -10C-1।
এর অর্থ হল 1 সেমি দৈর্ঘ্য এবং 1 সেমি2 প্রস্থচ্ছেদ বিশিষ্ট একটি তামার ব্লকের উভয়প্রান্তের উষ্ণতার পার্থক্য 1°C হলে 1 সেকেন্ডে একপ্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে পরিবাহী তাপের পরিমাণ হবে 0.92 ক্যালোরি।
তাপ পরিবাহীতাঙ্কের একক
তাপ পরিবাহীতাঙ্কের একক আমরা এটির মাত্রা বিশ্লেষণ করলেই জানতে পারি। এর জন্য আমরা যে সমীকরণটি ব্যব হার করব তা হল (N)
অর্থাৎ, তাপ পরিবাহিতাঙ্ক =
বা, তাপ পরিবাহিতাঙ্ক একক
আমরা জানি ক্ষেত্রফলের একক = দৈর্ঘ্যের একক2
সুতরাং, আমরা বলতে পারি –
এই অনুসারে তাপ প্রিবাহিতাঙ্কের C.G.S একক = ক্যালোরি সেকেন্ড-1 সেমি-1 °C-1
একই ভাবে S.I. একক হবে = জুল সেকেন্ড-1 মিটার-1 °C-1
অধ্যায় সামাপ্ত। আরো পড়ো → তাপীয় রোধ কাকে বলে?
এই লেখাটির সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। বিনা অনুমতিতে এই লেখা, অডিও, ভিডিও বা অন্যভাবে কোনো মাধ্যমে প্রকাশ করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই লেখাটি থেকে উপকৃত হলে সবার সাথে শেয়ার করার অনুরোধ রইল।
JumpMagazine.in এর নিয়মিত আপডেট পাওয়ার জন্য –
- ফলো করো – WhatsApp চ্যানেল
- সাবস্ক্রাইব করো – YouTube চ্যানেল
- লাইক করো – facebook পেজ
- সাবস্ক্রাইব করো – টেলিগ্রাম চ্যানেল
- Facebook Group – লেখা – পড়া – শোনা
X_PSc_tap-4